Locket Chatterjee: ‘মণিপুরের যা পরিস্থিতি, বাংলারও তাই…’, বলেই সাংবাদিক বৈঠকে হাউ হাউ করে কাঁদলেন লকেট

Locket Chatterjee: উদাহরণ তুলে কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন লকেট। জল খান। নিজেকে কিছুটা সংযত করার চেষ্টা করেন। যদিও তাতে ব্যর্থ হন। লকেট বলেন, "ভিডিয়ো যখন ভাইরাল হবে, তখনই আমরা কথা বলব? মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হয়েও চুপ রয়েছেন।" বলেই আবার কেঁদে ফেলেন লকেট।

Locket Chatterjee: 'মণিপুরের যা পরিস্থিতি, বাংলারও তাই...', বলেই সাংবাদিক বৈঠকে হাউ হাউ করে কাঁদলেন লকেট
সাংবাদিক বৈঠকে কাঁদছেন লকেটImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 21, 2023 | 4:28 PM

নয়া দিল্লি: মণিপুরের যা পরিস্থিতি, বাংলারও তাই পরিস্থিতি। একুশের মঞ্চ থেকে মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে যখন বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার আধ ঘণ্টার মধ্য়েই নয়া দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে পাল্টা বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে সরব হলেন বিজেপির নেতৃত্ব। সাংবাদিক বৈঠক করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের বক্তব্য, বাংলাতেও মহিলাদের পরিস্থিতি কোনও অংশেই মণিপুরের থেকে কম নয়। এই রাজ্যের মহিলাদের ওপর যথেচ্ছ অত্যাচার হয়। যদিও তার ভিডিয়ো ভাইরাল হয় না। দাবি বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। আর বাংলায় মেয়েদের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে রীতিমতো কেঁদেই ভাসালেন লকেট।

লকেট বললেন, “মণিপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। খুব কষ্ট হচ্ছে। যে ভিডিয়ো সামনে এসেছে, তা অত্যন্ত কষ্টকর। আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের নাম করে যে খুন-সন্ত্রাস-মহিলাদের ওপর নির্যাতনের নির্বাচন হল, তাও বাংলার একটা চিত্র।”

এরপরই লকেট বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও বারবার মহিলাদের নির্যাতিত হতে হয়। ৮ জুলাই পাঁচলাতে এক মহিলা প্রার্থীকে বুথের ভিতর ঢুকে বিবস্ত্র করে, গোপনাঙ্গে হাত দেওয়া হয়েছে। ডোমজুড়ে তৃণমূলের প্রার্থীর কাউন্টিং রুমের মধ্যে ঢুকে অত্যাচার করা হয়েছে। এফআইআর হয়েছে দুটি ক্ষেত্রেই। আসলে ওখানকার কোনও ভিডিয়ো হয়নি। কেউ ভিডিয়ো করতে পারেননি। আসলে সেখানে তো কেউ ঢুকতেই পারেননি। কারণ সেখানে বন্দুক নিয়ে সকলে ছিলেন। গণনাকেন্দ্রের মধ্যেই মহিলার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নগ্ন করা হয়েছে। ওর কোনও বিচার হবে না?” তাঁর কথায় উঠে আসে কালিয়াগঞ্জ ধর্ষণকাণ্ড প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, “কালিয়াগঞ্জে এক রাজবংশী মহিলাকে অত্যাচার করে খুন করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে দেহটা। সেটার ভিডিয়ো অবশ্য সামনে এসেছে।”

উদাহরণ তুলে কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন লকেট। জল খান। নিজেকে কিছুটা সংযত করার চেষ্টা করেন। যদিও তাতে ব্যর্থ হন। লকেট বলেন, “ভিডিয়ো যখন ভাইরাল হবে, তখনই আমরা কথা বলব? মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হয়েও চুপ রয়েছেন।” বলেই আবার কেঁদে ফেলেন লকেট।

জোটকে কটাক্ষ করে লকেট বলেন, “কংগ্রেসও এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’র নাম করে। সনিয়া গান্ধীরা দিল্লিতে বসে। কিন্তু বাংলা নিয়ে তাঁরা কিছু বলবেন না। অধীর চৌধুরীকে গিয়ে প্রশ্ন করুন। ওঁর মুর্শিদাবাদেই কী কী হয়েছে।”

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী কালকে মণিপুরের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। সব রাজ্যের জন্য বলেছেন। সব রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা শক্ত হতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ছোট ঘটনা তত্ত্ব প্রসঙ্গ তুলে ধরেন লকেট। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী কোনও ঘটনা দেখলেই বলবেন ছোট ঘটনা। নির্বাচনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মুখ্য়মন্ত্রী বললেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।” তাঁর কথায় উঠে আসে, ২০১২ সালের পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডের কথাও। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তো তাতেও বলেছিলেন ছোট ঘটনা। মহিলাদের সঙ্গে কিছু হলেই বলে দেন প্রেম ছিল। প্রেম থাকলেই কি নির্যাতিত হতে হবে? আমরা কোথায় যাব?” আবারও হাউ হাউ করে কাঁদলেন লকেট। তাঁর কথায় উঠে আসে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমতা, ডোমজুড়ের সন্ত্রাস প্রসঙ্গও।

লকেটের কথায় ঘুরে ফিরে আসে মণিপুর প্রসঙ্গ। আর সে রাজ্যের নিরিখে বাংলাতেও নারীরা কতটা নির্যাতিতা, তার ব্যাখ্যা। লকেট বলেন, “মণিপুরের যা পরিস্থিতি, বাংলারও তাই পরিস্থিতি। উনি লোক পাঠান মণিপুরে, আগে বাংলাকে সামলে নিন। আগে বাংলাকে সামলান, পরে মণিপুরে যাবেন।” বলাই বাহুল্য, মণিপুরের হিংসার ঘটনা খতিয়ে দেখতে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল গিয়েছিল। আর তারই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে সেই ভিডিয়ো। মণিপুরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি।

শেষে লকেট বলেন, “আমি ক্ষমা চাইছি, আমি একটু ইমোশন্যাল হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু এটাই বলছি, এটাই বাংলার পরিস্থিতি।”