লক্ষ বছর আগে থর মরুভূমিতেই বইত নদী, খোঁজ মিলল তার
ইতিহাসের চোরাবালিতে হারিয়ে যায় কত সভ্য়তার অলিগলি। টুকরো যাপন। নদীমাতৃক দেশ ভারতের বুকেই এমন কত সভ্য়তা এসেছে , কালের চিহ্নে বিলীন হয়ে গেছে। একশ বাহাত্তর হাজার বছরের পুরোনো নদীর খোঁজ এবার মিলল বিকানিরে। থর মরুভূমির বুকে হারিয়ে যাওয়া নদীর তীরেই কি গড় উঠেছিল সভ্যতা?
TV9 বাংলা ডিজিটাল: ইতিহাসের চোরাবালিতে হারিয়ে যায় কত সভ্য়তার অলিগলি। টুকরো যাপন। নদীমাতৃক দেশ ভারতের বুকেই এমন কত সভ্য়তা এসেছে , কালের চিহ্নে বিলীন হয়ে গেছে। একশ বাহাত্তর হাজার বছরের পুরোনো নদীর খোঁজ এবার মিলল বিকানিরে। থর মরুভূমির(Thar Desert) বুকে হারিয়ে যাওয়া নদীর তীরেই কি গড় উঠেছিল সভ্যতা?
ভূতাত্ত্বিকদের একাংশের দাবি, এই নদী বিকানির সহ রাজস্থানের (Rajasthan)এক দীর্ঘ অংশ জুড়ে বয়ে চলত। প্রায় ২০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই নদীর গতিপথ যদিও স্পষ্ট নয়। থর মরুভূমি (Thar Desert)জুড়ে একদা বয়ে চলা এই নদী এখন নিশ্চিহ্ন। তবে নদী মানেই সভ্যতা। নদী মানেই মানুষের বসবাস। আনুমানিক, প্রস্তর যুগের আদিম মানবের বসবাস ,তাদের সভ্য়তার ছাপ স্পষ্ট এই নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে।
“থর মরুভূমির(Thar Desert) বুকে লুকিয়ে আছে হাজারও সভ্যতা। প্রস্তরযুগের মানুষদের যাপন থেকে অভিযোজনের সমস্ত প্রমাণই পাওয়া গেছে। কীভাবে এই নদী হারিয়ে গেল কীভাবেই বা এখানকার সভ্য়তা সম্পূর্ণ লুপ্ত হয়ে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জানালেন জিমবব ব্লিংকহর্ন(Jimbob Blinkhorn) , ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ।
“নদী কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত , তা স্পষ্ট। কিন্তু এ বিষয়ে হাতে আসা তথ্য খুবই কম। আরও দ্রুত কাজ করতে হবে আমাদের। এই খোঁজের মাধ্যমে আমরা অন্যান্য় হারিয়ে যাওয়া নদীর উৎস , গতিপথ ও মোহনা হয়ত খুঁজে পাবো।” জানালেন অধ্যাপক হেমা অচ্যুতত্থান (Hema Achyuthan)।
হারিয়ে যাওয়া এই নদীর নিকটতম গ্রাম নল (Nal Village)। নদীর আরও কোনও উপনদী বা শাখা নদী আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। মরুভূমির মধ্যে আরও খননকার্য চালানো প্রয়োজন বলেই মনে করেন তাঁরা। নদীগর্ভে থাকা পলিমাটি , বেলেপাথরের সন্ধানও পেয়েছেন ভূতাত্ত্বিকরা। অনুমেয় , এখানে আগেও অনেক নদী ছিল। নদীগুলির বয়স আনুমানিক ১৪০ হাজার বছর থেকে ১৭২ হাজার বছর বা তার কিছু বেশি বলেই মনে করছেন গবেষক দল।
হঠাৎ করে কী করে অবলুপ্ত হয়ে গেল এতগুলো নদী? বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি , পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাব শস্য শ্য়ামলা জমিকে মরভীমিতে বদলে দিয়েছে। আবহাওয়া জনিত কারণেই প্রকৃতির ও সভ্য়তার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাত সমানুপাতিক হারে কমতে থাকে। ফলে একসময় নদী শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কমে যায় চাষবাস । স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হয়। ধীরে ধীরে কমতে থাকে বসবাস। ধীরে ধীরে মরুভূমি এগিয়ে আসতে শুরু করে। গ্রামীণ বসতি রূপান্তরিত হয় যাযাবরদের আস্তানায়।
আমাদের হারিয়ে যাওয়া সভ্যতা , আদিম মানুষদের জীবন, তাদের জীবনের ‘থর’ কেমন কীভাবে ছিল তা আজ আর জানার উপায় নেই। তবুও গবেষণালব্ধ তথ্য়ই আমাদের সভ্য়তার সম্বল।