‘লকডাউন চান নাকি স্বাধীনতা?’ করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া সুর ঠাকরের গলায়

রাজ্যে ফের একবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই চটেছেন মুখ্য়মন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে। নিয়মবিধি ভেঙেই যে রাজ্যবাসী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, সেই বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি জেলাশাসকদের রেস্তরাঁ ও ব্যাঙ্কোয়েট হলগুলির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন।

'লকডাউন চান নাকি স্বাধীনতা?' করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া সুর ঠাকরের গলায়
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Feb 17, 2021 | 1:51 PM

মুম্বই: করোনার ধাক্কায় কুপোকাত হয়েছিল মহারাষ্ট্র (Maharashtra)। শীতের শুরুতে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হলেও গোটা দেশেরই করোনা সূচক নিম্নমুখী হয়েছিল। কিন্তু বছর গড়াতেই জনসাধারণের গা-ছাড়া মনোভাবে ফের মহারাষ্ট্রে করোনা (COVID-19) আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করায় কার্যত ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেন, “নিয়মবিধি মেনে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে চান নাকি লকডাউন, সেটা আপনাদের উপরই নির্ভর করছে।”

রাজ্যের নিরিখে সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত ছিল মহারাষ্ট্রেই। সেখানে এখনও অবধি মোট ২০ লাখ ৬০ হাজার ১৮৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং সংক্রমণের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজার ৪৮৯ জন। রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক স্বাস্থ্যবিধি জারি করা হলেও সাধারণ রাজ্যবাসী যে সেই নিয়মবিধি মানছেন না, তা আক্রান্তের সংখ্যা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজারের গণ্ডি পার করছে। সংক্রমণের সূচক উর্ধ্বমুখী হতেই চটেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে, পরোক্ষে হুমকি দিয়েছেন লকডাউন (Lockdown)-রও। গতকাল একটি বৈঠকে তিনি বলেন, “যদি সাধারণ মানুষ মাস্ক না পরে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করে, তবে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনেরই দায়িত্ব নিয়মগুলিকে কড়া হাতে প্রয়োগ করা। কোনও ঢিলেমি না দেখিয়ে তাদের উচিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা।”

আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিলের স্ট্রেনও ভারতে! বিলিতি স্ট্রেনের চেয়েও কেন বেশি দুশ্চিন্তার?

নিয়মবিধি ভেঙেই যে রাজ্যবাসী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, সেই বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি জেলাশাসকদের রেস্তরাঁ ও ব্যাঙ্কোয়েট হলগুলির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “বিগত এক বছর ধরে আমরা করানোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একাধিক নিয়ম তৈরি করেছি। কিন্তু সেই নিয়মগুলি যদি পালন না করা হয়, তবে তা অত্যন্ত গুরুতর একটি বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা হলেও বর্তমানে কোনও নিয়মবিধি না মেনেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। আমরা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে রেস্তরাঁ ও হোটেলগুলি খোলা রাখার সময়সীমা বৃদ্ধি করেছি কিন্তু সেখানেও কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এই জায়গাগুলি ঘুরে দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।”

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই ফের কনট্যাক্ট ট্রেসিং (Contact Tracing)-র কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, যে সমস্ত এলাকায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে প্রতি আক্রান্ত পিছু ২০ জনকে পরীক্ষা করা হবে আক্রান্ত চিহ্নিতকরণের জন্য। এছাড়াও প্রতিটি পুরসভার তরফে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ শুরু করা উচিত। মোবাইল ভেহিক্যাল ব্যবহার করে গ্রামে গ্রামে গিয়েও করোনা পরাক্ষা করা উচিত। প্রতিটি হাসপাতালের পরিকাঠামো ঠিকঠাক রয়েছে কিনা, তাও পরীক্ষা করা উচিত, যাতে সময়ের আগেই প্রস্তুত থাকা যায়।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে মোট ৩৬৬৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৬২০১। বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও পুনে, সাঙ্গলী, জালাগাও, অমরাবতী, যাভাতমল সহ একাধিক জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা’র জন্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ, অপসারণে ‘ঠান্ডা’ প্রতিক্রিয়া কিরণের