Narendra Giri: আত্মহত্যা নাকি শেষ করে দিতে বাধ্য করল কেউ? কারা ঘুরত মহন্তের আশেপাশে?
Akhil Bharatiya Akhara Parishad: মহান্ত নরেন্দ্র গিরির ভক্ত আনন্দ গিরির দাবি, এর পিছনে রয়েছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। যাতে যুক্ত রয়েছে পুলিশ, জমি মাফিয়া ও মহান্তের পরিবারের লোকজন।
প্রয়াগরাজ:দেশের সন্ন্যাসী সমাজের বৃহত্তম সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মহন্ত নরেন্দ্র গিরির (Narendra Giri) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় সোমবার রাতে। তাঁর নিজের ঘর থেকে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আপাতভাবে আত্মহত্যা বলে অনুমান করা হলেও তাঁর ৭-৮ পাতার সুইসাইড নোটে (Suicide Note) কী রহস্য লুকিয়ে আছে, সেই প্রশ্নই সামনে আসছে। ওই নোটে তিনি লিখেছেন, ‘অপমান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারব না, তাই নিজেই নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি।’ শুধু তাই নয়, নরেন্দ্র গিরি তাঁর অন্যতম ভক্ত আনন্দ গিরির (Anand Giri) বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বলেও দাবি পুলিশের। কিন্তু সেই আনন্দ গিরি বলছেন অন্য কথা। তাঁর দাবি, এই মৃত্যু কোনও সাধারণ আত্মহত্যার ঘটনা নয়। এর পিছনে রয়েছে এক গভীর ষড়যন্ত্র। কার্যত নরেন্দ্র গিরিকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
আনন্দ গিরির দাবি, নরেন্দ্র গিরির মৃত্যুর পিছনে রয়েছে বড়সড় ছক। যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে উচ্চপদস্থ কয়েকজন পুলিশকর্তা, কিছু জমি মাফিয়া ও নরেন্দ্র গিরির পরিবারের কয়েকজন সদস্য। তাঁর দাবি, ওই সব লোকজন ‘গুরুজি’র আশেপাশেই ঘুরে বেড়াতেন আর মহান্তকে বারবার মঠের জমি বিক্রি করার পরামর্শ দিতেন। তাঁর আরও দাবি, তাঁর নামটা সামনে আনাও এক প্রকারের ষড়যন্ত্রই। প্রয়াগরাজে গিয়ে পুলিশের তদন্তের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন আনন্দ গিরি।
‘বাধ্য হয়েই মৃত্যুকে বেছে নিয়েছেন গুরুজি’
নরেন্দ্র গিরির মৃত্যুর সময় হরিদ্বারে ছিলেন আনন্দ গিরি। তবে গুরুজির সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা হত বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, হরিদ্বারে আসার কথা জানিয়েছিলেন গুরুজি। কখনও তাঁর মনে হয়নি যে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত আছেন নরেন্দ্র গিরি। তাই আনন্দের দাবি, তাঁকে মরতে বাধ্য করা হয়েছে। হতে পারে কারও চাপে আনন্দ গিরির নামটাও লিখতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। উত্তর প্রদেশ পুলিশের কাছে সঠিক তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন আনন্দ গিরি। তিনি বলেন, ‘আমি যদি দোষী হই, তাহলে আমাকে শাস্তি দেওয়া হোক, কিন্তু সবার আগে জানতে হবে কারা আসল দোষী? কারা মঠের সম্পত্তি থেকে লাভ পেতে পারেন?’
মঠ থেকে বহিষ্কার করা হয় আনন্দ গিরিকে
চলতি বছরের মে মাসে মঠ থেকে আনন্দ গিরিকে বহিষ্কার করেন নরেন্দ্র গিরি। একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, মহান্তের পা ধরে ক্ষমা চাইছেন আনন্দ গিরি। আনন্দ গিরি জানান, নরেন্দ্র গিরিকে মঠের জমি বিক্রির জন্য বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি তা বিক্রি করতে চাননি। এমনকি এই দ্বন্দ্বের জেরে হরিদ্বারের বেশ কয়েকজনের থেকে মহান্ত টাকা ধার নিতে বাধ্য হয়েছিলেন বলেও দাবি আনন্দের। তাঁর অনুমান, কেউ বা কারা হয়ত মহন্তকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল।
সোমবার প্রয়াগরাজের বাঘামবাড়ি মঠে নরেন্দ্র গিরির ঘর থেকে তাঁর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা হয়েছেন তিনি। তাঁর ঘরের ভিতর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এখনই পুলিশ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে চাইছে না। গোটা বিষয়টি আরও গভীরে গিয়ে তদন্ত করতে চাইছেন উত্তর প্রদেশ পুলিশের আধিকারিকরা। ভারতের সন্ন্যাসী সমাজের অন্যতম বড় সংগঠন হল অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদ। সেই সংগঠনের সভাপতি পদে নিযুক্ত ছিলেন মহন্ত নরেন্দ্র গিরি। তাঁর এই রহস্যজনক মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই সন্ন্যাসীকূলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।