ইয়াসের ‘কুনজর’, কেরলে দেরিতে আসছে বর্ষা

সুমন মহাপাত্র

সুমন মহাপাত্র |

Updated on: May 30, 2021 | 5:36 PM

এ বার মৌসম ভবন জানিয়েছিল, ৩১ মে বর্ষা ঢুকতে পারে কেরলে। কিন্তু পূর্বাভাস মিলে যাওয়ার সুযোগ দিল না ঘূর্ণিঝড়।

ইয়াসের 'কুনজর', কেরলে দেরিতে আসছে বর্ষা
ফাইল চিত্র

কমলেশ চৌধুরী: ঘোরেল ঘূর্ণিঝড়! শুধু বাংলা-ওড়িশায় বিপর্যয় ঘটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি ইয়াস। তার কুপ্রভাব পড়ছে সুদূর কেরলেও। নির্ধারিত সময় ১ জুন নয়, দেশের মূল ভূখণ্ডে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি (Monsoon) বাতাসের আগমনী হতে চলেছে ৩ জুন। অর্থাত্‍, দু’দিন দেরিতে!

আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে আগে বর্ষা এলেও, আবহবিদরা তাকিয়ে থাকেন কেরলের দিকেই। কারণ, দক্ষিণী রাজ্যে বর্ষা ঢুকলেই মূল ভূখণ্ডে ‘মনসুন অনসেট’ ঘোষণা করা হয়। তার পর ধীরে ধীরে বর্ষার প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। এ বার মৌসম ভবন জানিয়েছিল, ৩১ মে বর্ষা ঢুকতে পারে কেরলে। কিন্তু পূর্বাভাস মিলে যাওয়ার সুযোগ দিল না ঘূর্ণিঝড়।

কেন বর্ষার পথে কাঁটা ইয়াস?

আবহবিদদের ব্যাখ্যা, ইয়াসের সৃষ্টির সময় এবং তার গতিপথ দু’টিই এর জন্য দায়ী। তাঁদের বক্তব্য, মৌসুমি বাতাসের প্রবাহ কিছু দিন অন্তর অন্তর শক্তিশালী হয়। ইয়াসের হাত ধরে বর্ষার যে প্রবাহ শক্তিশালী হয়েছিল, তা ইতিমধ্যেই আন্দামানে ঢুকে পড়েছে। কিন্তু এখন আবার বর্ষার প্রবাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। পরবর্তী শক্তিশালী প্রবাহ আসতে সময় লাগছে। অথচ, এরই মধ্যে কেরলে বর্ষা ঢুকে পড়ার কথা। তাই পথে হচ্ছে দেরি।

ইয়াসের গতিপথ নিয়ে মৌসম ভবনের উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘ইয়াস উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে ঘুরে, দুর্বল হয়ে উত্তরপ্রদেশের উপর অবস্থান করছে। ফলে কেরলের কাছে মৌসুমি বাতাসের প্রবাহ শক্তিশালী হতে পারেনি। ইয়াস পূর্বদিকে ঘুরে মায়ানমার বা বাংলাদেশের দিকে গেলে এই পরিস্থিতি হয়তো হত না।’

ঘূর্ণিঝড় আমপান অবশ্য বর্ষার পথে কাঁটা বিছিয়ে দেয়নি। তার অন্যতম কারণ, তুলনায় আগে হাজিরা। তাই কেরলে বর্ষা ঢুকেছিল একেবারে নির্দিষ্ট সময় ১ জুনেই। আরব সাগরে মৌসুমি বাতাসের প্রবাহকে জোরদার করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল আর এক ঘূর্ণিঝড় নিসর্গও। এ বার ভরসা কর্নাটক উপকূল লাগোয়া আরব সাগরের ঘূর্ণাবর্ত। এর প্রভাবেই ১ জুন থেকে মৌসুমি বাতাসের প্রভাব নতুন করে শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা। এই ধরনের অনুকূল পরিস্থিতির ইঙ্গিত পেয়েই মৌসম ভবন জানিয়েছে, কেরলে সম্ভাব্য আগমনী ৩ জুন। আবহবিদরা সতর্ক করেছেন, আগামী পাঁচ দিনে বৃষ্টি বাড়তে পারে পশ্চিমঘাট লাগোয়া রাজ্যগুলিতে। দখিনা-পশ্চিমি বাতাস জোরালো হলে ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও।

বঙ্গবাসী মাত্রেই প্রশ্ন, কেরলে দেরি কি বাংলাতেও প্রভাব ফেলতে পারে?

আবহবিদদের বক্তব্য, আন্দামানের সঙ্গে কেরলের বা কেরলের সঙ্গে বাংলার বর্ষার আগমনীর সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। সঞ্জীববাবুর কথায়, ‘আন্দামান সাগরে এবার নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই, ২১ মে বর্ষা ঢুকে পড়েছে। তবু কেরলে দেরি হচ্ছে। ফলে বাংলায় কী হবে, তা এখনই বলা যাবে না। জুনের নির্ধারিত সময়ে বায়ুপ্রবাহ কেমন থাকে, সবটাই নির্ভর করবে তার উপর।’

মৌসম ভবনের নতুন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ৭ জুন বর্ষার আগমনী উত্তরবঙ্গে। ১০ জুন দক্ষিণবঙ্গে। ১১ জুন কলকাতায়। গোটা বাংলা মুড়ে ফেলার কথা ১৫ জুনের মধ্যে। উপকূলের কাছে শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে সোনায় সোহাগা। শেষমেশ কী হবে, তা সময়ই বলবে।

আরও পড়ুন: ছাদনাতলায় মৃত্যু কনের, হবু শ্যালিকাকে বিয়ে করলেন যুবক

Latest News Updates

Follow us on

Related Stories

Most Read Stories

Click on your DTH Provider to Add TV9 Bangla