কংগ্রেসকে বাস্তব স্বীকারের পরামর্শ, বিরোধী জোটের মুখ কি মমতাই? শরদ পাওয়ার বললেন…

লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রসঙ্গে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শরদ পাওয়ার জানান, প্রশান্ত কিশোরের কাছ থেকে তাঁর কোনও সাহায্যের প্রয়োজন নেই। তিনি কোনও পদের আশা করছেন না বলেও জানান।

কংগ্রেসকে বাস্তব স্বীকারের পরামর্শ, বিরোধী জোটের মুখ কি মমতাই? শরদ পাওয়ার বললেন...
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 10, 2021 | 10:16 AM

মুম্বই: অতীতে কাশ্মীর থেকে কন্য়াকুমারী অবধি একারই রাজত্ব থাকলেও এখন  আর সেই দিন নেই, সে কথা স্বীকার করতে হবে কংগ্রেসকে। বৃহস্পতিবার একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই বার্তা দিলেন জোটসঙ্গী এনসিপির শীর্ষ নেতা শরদ পাওয়ার। কংগ্রেসকে কার্যত কটাক্ষ করেই তিনি বলেন, ” কংগ্রেস হল সেই জমিদারের মতো, যে নিজের মহলই সামলাতে পারে না।”

বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডে-র একটি সাক্ষাৎকারে শরদ পাওয়ার বলেন, “কংগ্রেসকে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে একসময় কাশ্মীর থেকে কন্য়াকুমারী অবধি রাজত্ব থাকলেও বর্তমানে তা নেই। এই সত্যিটা তাদের স্বীকার করতেই হবে। যদি তারা এই সত্য়িটা স্বীকার করে নেন, তবেই বাকি দলগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়বে।”

জমিদারদের সঙ্গে কংগ্রেসের তুলনা করে তিনি বলেন, “আমি উত্তর প্রদেশের জমিদারের গল্প বলি, যার বিপুল সংখ্যক জমি ও বড় বড় হাভেলি ছিল। জমির উর্ধ্বসীমা আইন জারি হওয়ার পর তাঁর জমির সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ একরে কমে আসে। তখন ওনাদের হাভেলিগুলি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতাটুকুও ছিল না। প্রতিদিনই তারা ঘুম থেকে উঠে জমিগুলির দিকে তাকিয়ে বলতেন এই জমিগুলি আমাদের ছিল। কংগ্রেসের মানসিকতাও অনেকটা এইরকমই। তাদের বাস্তব স্বীকার করতে হবে।”

শরদ পাওয়ার বলেন, “আগে কংগ্রেসে ১৪০টির মতো সাংসদ ছিল। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪০-৪৫-এ। তবে এখনও কংগ্রেসই একমাত্র প্রাসঙ্গিক দল, ৬ থেকে ৭টি রাজ্যে তাদের সরকার রয়েছে। জাতীয় স্তরে রাজনীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে একমাত্র কংগ্রেসেরই উপস্থিতি রয়েছে।”

লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রসঙ্গে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শরদ পাওয়ার জানান, প্রশান্ত কিশোরের কাছ থেকে তাঁর কোনও সাহায্যের প্রয়োজন নেই। তিনি কোনও পদের আশা করছেন না বলেও জানান। কেবল বিরোধীদের একজোট করার কাজ করতে চান বলেই জানান এনসিপি নেতা।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হবেন কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে শরদ পাওয়ার বলেন, “কংগ্রেস নেতারা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন তাদের কাছে রাহুল গান্ধী রয়েছে। সমস্ত দলই, বিশেষত কংগ্রেস নতুন কোনও নেতৃত্ব স্বীকার করতে প্রস্তুত নয়।”

বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধী দলগুলির মধ্যে সখ্যতা বেড়েছে। পেগাসাস কাণ্ড, কৃষি আইন, পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহ একাধিক বিষয় নিয়ে বিরোধীরা একজোট হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ায়। অধিবেশন চলাকালীন আন্দোলনকারী কৃষকরা যে কিসান সংসদের আয়োজন করেছিলেন, তাতেও কংগ্রেসের নেতৃত্বেই বিরোধী দলগুলি যোগ দেয়।

বিজেপির বিজয় রথ থামাতেই সমস্ত বিরোধী দলগুলি একজোট হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ দিকে, বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভের পর এ বার জাতীয় স্তরে বিজেপিকে নিশানা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের সঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেও বিভিন্ন কর্মসূচিতেই তৃণমূলকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়। মূলত বিরোধী জোটের মুখ হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে ধরাই তৃণমূলের লক্ষ্য। অন্য়দিকে, বিরোধী দলগুলি এখনও কংগ্রেসের উপরই আস্থা রাখতে চায়।

আরও পড়ুন: BRICS Summit: সন্ত্রাসবাদ রুখতে জোর সওয়াল মোদীর, আফগানিস্তানের দুর্দশায় আমেরিকাকেই দুষলেন পুতিন