Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

TV9 Bangla Explained on NEET: ফিজিক্সে ১ পেয়েও কীভাবে NEET-এ প্রথম ১০-এ নাম? কতটা গভীরে ডাক্তারি পরীক্ষা দুর্নীতি?

NEET 2024: ১৪ জুন পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও, আগেভাগেই ৪ জুন ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায় ফুল মার্কস অর্থাৎ ৭২০ পেয়েছে ৬৭ জন। এর মধ্যে ৬ জন পরীক্ষার্থীই আবার একই সেন্টারের।

TV9 Bangla Explained on NEET: ফিজিক্সে ১ পেয়েও কীভাবে NEET-এ প্রথম ১০-এ নাম? কতটা গভীরে ডাক্তারি পরীক্ষা দুর্নীতি?
প্রতীকী চিত্রImage Credit source: TV9 বাংলা
Follow Us:
| Updated on: Jun 14, 2024 | 5:32 AM

কথায় আছে, ঈশ্বরের পরে সবথেকে ক্ষমতাবান যদি কেউ থাকেন, তা হলেন চিকিৎসকরা। মানুষের বাঁচা-মরা অনেকাংশেই চিকিৎসকদের হাতে। সমাজেও ভিন্ন মাত্রার সম্মান ও গুরুত্ব পেয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তাই চিকিৎসক হওয়া মুখের কথা নয়। প্রয়োজন কঠোর অধ্যাবসায়ের। দেশের ভবিষ্যৎ চিকিৎসক কারা হবেন, তা এখন নির্ধারিত হয় যে প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে, তাই-ই হল ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রাস টেস্ট বা নিট (NEET)। স্নাতক স্তরে এমবিবিএস, বিডিএস (ডেন্টাল) ও আয়ুষ কোর্স নিয়ে পড়ার জন্য উত্তীর্ণ হতে হয় নিট পরীক্ষায়। নিট পরীক্ষার র‌্যাঙ্কিংয়ের উপরেই নির্ভর করে সরকারি-বেসরকারি কলেজে পড়ার সুযোগ।

প্রতি বছরই নিট পরীক্ষা হয়। তবে ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দেশের ৭টি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১২ জুন এনটিএ (নিটের আয়োজক সংস্থা)-র তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে গ্রেস নম্বর দেওয়া হয়েছে, তাদের স্কোরবোর্ড বাতিল করা হচ্ছে। তাদের ফের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। কিন্তু ব্যাপারটা কী?

কীভাবে নিট পরীক্ষা হয়?

নিট নিয়ে বিতর্কের আগে নিট পরীক্ষা কীভাবে হয়, তা জানা প্রয়োজন। নিট পরীক্ষা মোট ৩ ঘণ্টার হয়। ২০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। তিনটি ভাগ থাকে- ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি। প্রতিটি বিষয়ে (৩৫ +১৫)টি প্রশ্ন থাকে, এরমধ্যে সর্বাধিক ৪৫টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায়। বায়োলজির মধ্যে জুলজি (Zoology) ও প্লান্ট সায়েন্স (Plant Science) থাকে। প্রতিটি বিষয়ে ১৮০ নম্বরের হিসাবে মোট ৭২০ নম্বরের পরীক্ষা হয় নিট-এ।

নিট পরীক্ষায় প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ৪ নম্বর পাওয়া যায়। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ১ নম্বর কাটা (নেগেটিভ মার্কিং) হয়। একটির বেশি অপশন নির্বাচন করলেও, ১ নম্বর নেগেটিভ মার্কিং হয়। তবে কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিলে, বা অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর দিলেও কোনও নেগেটিভ মার্কিং হয় না।

নিট নিয়ে বিতর্ক-

এবারের নিট পরীক্ষা হয় গত ৫ মে। দেশ জুড়ে ৪৭৫০ সেন্টারে মোট ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থীরা ডাক্তারির পরীক্ষায় বসে। ১৪ জুন পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও, আগেভাগেই ৪ জুন ফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায় ফুল মার্কস অর্থাৎ ৭২০ পেয়েছে ৬৭ জন। এর মধ্যে ৬ জন পরীক্ষার্থীই আবার একই সেন্টারের। তারা সকলেই হরিয়ানার ফরিদাবাদের সেন্টারে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

এরপরই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরীক্ষা হওয়ার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি করা হয়। একইসঙ্গে গ্রেস নম্বর নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। যারা দ্বিতীয় স্থানাধিকারী, তারা ৭২০-তে ৭১৯ পেয়েছেন। এক্ষেত্রেই প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এই নম্বর পেল পরীক্ষার্থীরা।

যদিও ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ-র তরফে যুক্তি দেওয়া হয় যে পরীক্ষার্থীদের গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রশ্ন সমাধান করতে গিয়ে যে অতিরিক্ত সময় খরচ হয়েছে পরীক্ষার্থীদের, তার জন্য গ্রেস নম্বর দেওয়া হয়েছে। যদিও এই গ্রেস মার্কস কত দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে কোনও স্বচ্ছতা নেই।

দুর্নীতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় উঠেছে। এরইমধ্যে দিল্লিতে এক মহিলা দাবি করেন, তাঁর পরিচিত এক নিট পরীক্ষার্থী ফিজিক্সে ১ পেয়েছে উচ্চমাধ্যমিকে, স্কুল থেকে প্রাকটিক্যালে ২০ নম্বর দেওয়ায় ২১ পেয়েছে। সেই ছাত্রীই আবার নিট পরীক্ষায় প্রথম দশে র‌্যাঙ্ক করেছে। দুই পরীক্ষার ফলে কীভাবে আকাশ পাতাল তফাৎ, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। এরকম বিস্তর অভিযোগ শোনা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। নিটে খারাপ ফলের পর যেখানে কোটার এক ছাত্রীর আত্মহত্যার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, সেখানেই এবার এই ‘র‌্যাঙ্ক বিভ্রাট’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে গোটা দেশজুড়ে।

নিট পরীক্ষার এই অস্বচ্ছতা নিয়েই হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। বিতর্ক তৈরি হতেই এনটিএ ও শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে ৪ সদস্যের কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয় নিট সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করতে। এরপরই আজ, ওই কমিটি সুপ্রিম কোর্টে জানায় যে ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থী, যারা গ্রেস মার্কস পেয়েছেন, তাদের স্কোরবোর্ড বা মার্কশিট বাতিল করা হবে। যে পরীক্ষার্থীদের স্কোরকার্ড বাতিল করা হচ্ছে, তাদের আগামী ২৩ জুন ফের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। ৩০ জুন সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে। যে পরীক্ষার্থীরা পুনরায় পরীক্ষায় বসতে রাজি নন, তাদের ৫ মে-র পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরই দেওয়া হবে।

কেন্দ্রের তরফে প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী কানু আগরওয়াল জানান, শুধুমাত্র যে প্রশ্নগুলি অ্যাটেমপ্ট করা হয়নি, অর্থাৎ উত্তর দেওয়া হয়নি, তার মধ্যেই গ্রেস মার্কস সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, নিট-ইউজি ২০২৪-র কাউন্সেলিংয়ের প্রক্রিয়া বন্ধ করা হবে না। পরিকল্পনা অনুযায়ীই কাউন্সেলিং হবে।