বিয়ের পর জোর করে সঙ্গমও ধর্ষণ নয়: হাই কোর্ট

ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ কোনও শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।

বিয়ের পর জোর করে সঙ্গমও ধর্ষণ নয়: হাই কোর্ট
প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 26, 2021 | 7:43 PM

ছত্তীশগঢ়: বিবাহিত দম্পতির মধ্যে শারীরিক মিলন কখনই ধর্ষণ নয়। এই যুক্তিতে এক ব্যক্তিকে মুক্তি দিল ছত্তীশগঢ় হাইকোর্ট। আদালতের তরফে বলা হয়েছে, বিবাহিত দম্পতির মধ্যে জোর করে মিলনও ধর্ষণ নয়। যদিও ৩৭৭ ধারা বা অপ্রাকৃতিক যৌনসঙ্গম বহাল রাখছে আদালত। বৃহস্পতিবার আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী স্ত্রী’র বয়স যদি ১৫-র বেশি হয় তাহলে যৌনসঙ্গম বৈবাহিক ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে না। বিবাহের পর স্ত্রী’র ইচ্ছার বিরুদ্ধে সঙ্গমও ধর্ষণের অপরাধ নয়।

এই মামলায় স্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, বিয়ের পর থেকে পণের জন্য তাঁর ওপর নির্যাতন করত স্বামী। অপ্রাকৃতিক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেও বাধ্য করত তাঁকে। তাঁর গোপনাঙ্গে মূলো ও আঙুল ঢুকিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। শুনানিতে বিচারপতি এনকে চন্দ্রবংশী বলেন,’এই মামলায় অভিযোগকারী অভিযুক্তের বৈধ স্ত্রী। সুতরাং জোর করে বা স্ত্রী’র অনিচ্ছা সত্ত্বেও সঙ্গম ভারতীয় আইনের চোখে ধর্ষণ নয়।’

ধর্ষণের ৩৭৬ ধারা থেকে মুক্তি দেওয়া হলেও ৩৭৭ ধারা ও ৪৯৮এ অর্থাৎ মহিলাদের ওপর নির্যাতনের ধারা বহাল রাখা হয়েছে আদালতে। বিচারপতির দাবি, মহিলার অভিভাবক ও প্রতিবেশীদের বয়ানের ভিত্তিতে তাঁর ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ স্পষ্ট হচ্ছে। এর ফলে ৪৯৮এ/৩৪ ধারা দেওয়ার মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। যৌন আনন্দের জন্য নির্যাতিতার গোপনাঙ্গে কোনও জিনিস প্রবেশ করানোর ঘটনা অপ্রাকৃতিক। সেই কারণে এই মামলায় ৩৭৭ ধারা সঠিক বলে মনে করেন বিচারপতি।

‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ আসলে দীর্ঘদিনের ইস্যু। এই বিষয়ে নানা মত রয়েছে। এই ইস্যু নিয়ে একসময় একাধিকবার উত্তাল হয়েছে সংসদ। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে নানাবিধ সময়ে। ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’, এই সংজ্ঞা আদৌ কতদূর প্রযোজ্য, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বলে কোনও অপরাধের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ কোনও শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। বিয়ের পর স্বামীর হাতেই ধর্ষিতা হতে পারেন কোনও স্ত্রী, এমনটা অপরাধের কথা উল্লেখ করে শাস্তির বিধান এখনও পর্যন্ত নেই ভারতীয় আইনে।

কিছুদিন আগে, কেরল হাইকোর্টের তরফে বলা হয়, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বিবাহ-বিচ্ছেদের কারণ হতে পারে। কার্যত এই বিষয়ে এক ঐতিহাসিক রায় দেয় কেরল হাইকোর্ট। কেরলের ডিভিশন বেঞ্চ নিজের রায়ে জানায়, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বিবাহ-বিচ্ছেদের দাবি জানানোর যুক্তিযুক্ত কারণ হতে পারে। কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি এই প্রসঙ্গেই একটি মামলার শুনানি করতে গিয়ে নিজের রায়ে জানান, বৈবাহিক ধর্ষণ বিষয়টিকে বিবাহ-বিচ্ছেদের কোনও কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না ঠিকই, কিন্তু এটি বিবাহ-বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ হতে পারে। এ বার ফের এই ইস্যুতে ভিন্ন পর্যবেক্ষণ দিলেন বিচারপতি। আরও পড়ুন: ড্রোন ওড়ানো আরও সহজ, প্রয়োজন নেই ছাড়পত্রের, একনজরে সরকারের নয়া নির্দেশিকা