No Confidence Motion: ‘৬৩ থেকে সংসদে ২৭টি প্রস্তাব, ‘অনাস্থা’র ইতিহাসে সরকার পড়েছে মাত্র তিন বার

No Confidence Motion: ১৯৬৩ সালে, তৃতীয় লোকসভা চলাকালীন। জওহরলাল নেহরুর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন আচার্য জেবি কৃপালানি। নেহরু সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে না পারলেও, সেই প্রস্তাব নিয়ে ৪ দিন ধরে মোট ২১ ঘণ্টা বিতর্ক হয়েছিল। ৪০ জন সাংসদ সেই বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন।

No Confidence Motion: '৬৩ থেকে সংসদে ২৭টি প্রস্তাব, 'অনাস্থা'র ইতিহাসে সরকার পড়েছে মাত্র তিন বার
সংসদে মোট ২৭টি অনাস্থআ প্রস্তাবে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে ৩টি সরকার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 26, 2023 | 5:38 PM

নয়া দিল্লি: মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলির জোট ‘ইন্ডিয়া’। শুক্রবারই এই অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা এবং ভোটাভুটি হওয়ার কথা। ৫৪৫ আসনের লোকসভায় বিজেপির ২৭৩ জন সাংসদ রয়েছে। এনডিএ শরিকদের ধরলে সাংসদ সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১২। কাজেই বিরোধীদের পক্ষে সংসদে সরকারকে বেগ দেওয়াটা সম্ভব নয়। ভারতীয় সংসদে প্রথমবার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল ১৯৬৩ সালে, তৃতীয় লোকসভা চলাকালীন। জওহরলাল নেহরুর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন আচার্য জেবি কৃপালানি। নেহরু সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে না পারলেও, সেই প্রস্তাব নিয়ে ৪ দিন ধরে মোট ২১ ঘণ্টা বিতর্ক হয়েছিল। ৪০ জন সাংসদ সেই বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন।

অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি ভাষণে জওহরলাল নেহেরু বলেছিলেন, “ক্ষমতাসীন দলকে সরিয়ে দিয়ে, তার জায়গায় নতুন সরকার গঠন করার লক্ষ্যেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা উচিত। বর্তমান ক্ষেত্রে, স্পষ্টতই এমন কোন প্রত্যাশা বা আশা নেই। তাই এই বিষয়ে বিতর্ক অনেক দিক থেকে আকর্ষণীয় এবং লাভজনক হলেও, অবাস্তব। ব্যক্তিগতভাবে, আমি এই প্রস্তাব এবং এই বিতর্ককে স্বাগত জানাচ্ছি। আমার মতে, এই ধরণের পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা (সরকারের শক্তির) করা ভাল।” তারপর থেকে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আনা সাম্প্রতিকতম প্রস্তাবটি বাদ দিলে, সংসদে আরও ২৬টি অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনাস্থা প্রস্তাব সংসদে খারিজ হয়েছে। ব্যতিক্রম ঘটেছে ৩টি ক্ষেত্রে, তিনটিই গত শতাব্দীর নয়ের দশকে। ১৯৯০ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল ভিপি সিং সরকার, ১৯৯৭-এ দেবগৌড়া সরকার এবং ১৯৯৯-এ বাজপেয়ী সরকার।

ভিপি সিং

কংগ্রেসকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে চেয়ে বাম দলগুলি এবং ডানপন্থী বিজেপির সমর্থনে, জনতা দলের নেতা ভিপি সিং-এর নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছিল জাতীয় ফ্রন্ট জোট। তবে সেই জোট সরকার টিকেছিল মাত্র ১১ মাস। রাম মন্দির ইস্যুতে ভিপি সিং সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল বিজেপি। ফলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছিল সরকার। ১৯৯০ সালের ১০ নভেম্বর অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয় এবং ভোটাভুটিতে ১৪২-৩৪৬ ফলে হেরে যান ভিপি সিং। সরকারে টিকে থাকতে প্রয়োজন ছিল ২৬১ ভোটের। অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি আর বেঙ্কটরামনের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন ভিপি।

দেবগৌড়া

১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল কংগ্রেস। তবে, সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন ছিল না কোনও দলেরই। এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেসের সমর্থনে একটি অবিজেপি-অকংগ্রেসি সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৬ সালের ১ জুন জনতা দল (সেকুলার) নেতা এইচডি বেদগৌড়াকে জোট সরকারের নেতা বাছা হয়। তবে তাঁর মেয়াদ ছিল মাত্র ১০ মাসের। দেবগৌড়া সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল সীতারাম কেশরীর কংগ্রেস। ১৯৯৭ সালের ১১ এপ্রিল দেবগৌড়া সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। ১৩ দলের যুক্তফ্রন্ট সরকার মাত্র ১৫৮টি ভোট পেয়েছিল।

অটলবিহারী বাজপেয়ী

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দুটি অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বিজেপি নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ীকে। জয়ললিতার এআইএডিএমকে এনডিএ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর, ১৯৯৯ সালের ১৭ এপ্রিল প্রথমবার আস্থাভোটে অংশ নেয় বাজপেয়ী সরকার। সকলকে চমকে দিয়ে, এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল বহুজন সমাজ পার্টি। মাত্র ১ ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল বাজপেয়ী সরকার। কয়েক মাস পর ফের ক্ষমতায় ফিরেছিলেন বাজপেয়ী। ২০০৩ সালে, মন্ত্রিসভায় জর্জ ফার্নান্ডেজকে ফেরানোর প্রতিবাদে বিরোধীরা ফের তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। এবার ৩১২-১৮৬ ভোটে জিতেছিল বাজপেয়ী সরকার।