Prashant Kishor’s Prescription To Congress : দিল্লির মসনদ থেকে মোদীকে সরাতে পিকের ‘প্রেসক্রিপশন’, কড়া ওষুধ কি গিলবে কংগ্রেস?
Prashant Kishor : শনিবার কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন একাধিক কংগ্রেস নেতাও। তাঁদের সামনে আগামী নির্বাচনে কংগ্রেসের নির্বাচনী ব্লু-প্রিন্ট কী হওয়া উচিত তার একটি খসড়া তুলে ধরেন প্রশান্ত কিশোর।
নয়া দিল্লি : সনিয়া-পিকে সাক্ষাৎ নিয়ে ইতিমধ্যে চড়ছে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার পারদ। চারদিনে তৃতীয়বার সাক্ষাতে কংগ্রেসের সভাপতি ও ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। গত শনিবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও দলের অন্যান্য নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশান্ত কিশোর। তারপর সূত্র মারফত জানা যায় যে, প্রশান্তকে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। এইবার তিনি কোনটা বেছে নেন বা কংগ্রেস কোন সিদ্ধান্ত নেয় তা সময় বলবে। উল্লেখ্য, শনিবার ১০ জনপথের বৈঠকে কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীদের সামনে একটি বিস্তারিত প্রস্তাব রাখেন পিকে। বর্তমান জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস যে নিভু নিভু আলো নিয়ে জ্বলছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি পাঁচ রাজ্য়ের নির্বাচনেও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি তারা। নতুন করে কোনও রাজ্যে ক্ষমতা দখল তো দুরস্ত, নিজেদের দখলে থাকা পঞ্জাবের আসনও হারিয়েছেন তারা। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের নির্বাচনী ব্লু-প্রিন্ট বদলানো যে আশু প্রয়োজন তা টের পেয়েছে কংগ্রেস। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কংগ্রেসের কী কী পদক্ষেপ করা উচিত শনিবারের বৈঠকে তা তুলে ধরেন ভোটকুশলী পিকে।
ভোটকুশলী হিসেবে ভালোই নাম করেছেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর অ্যাসাইনমেন্টের মধ্যে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য হল বাংলায় তৃণমূলেপ হয়ে ২১ এর বিধানসভা নির্বাচন। ভোটকুশলী হিসেবে তাঁর সাফল্যের তালিকায় রয়েছে ২০১২ সালের গুজরাট নির্বাচন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। এই দুই নির্বাচনেই জয় হয় বিজেপির। এছাড়াও ২০১৫ সালে বিহারের জেডিইউ-র হয়ে নির্বাচনী প্ল্যান তৈরি করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ভোটকুশলী হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। সেই সফল ভোটকুশলী পিকেই আগামী নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দিলেন গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রাসঙ্গিকতা বাড়ানোর বা ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রেসক্রিপশনে কংগ্রেসকে কী দাওয়াই লিখলেন পিকে?
- পিকের নজরে আগামী হিমাচল প্রদেশ, গুজরাট, কর্নাটক, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ের নির্বাচন। এই নির্বাচনগুলিকে সামনে রেখে ভরাডুবি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কংগ্রেসকে পরামর্শ দিয়েছেন পিকে।
- বুথ লেভেলে হোয়াটসঅ্য়াপ গ্রুপ তৈরি করতে হবে। বুথ লেভেলের নেতাদের সক্রিয় থাকতে হবে সেখানে। মূলত দলের মধ্যে সংযোগ বাড়ানো।
- সংযোগের দল বা কমিউনিকেশন টিম গঠন। এই টিম সব স্তরের নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ রক্ষা করবে।
- প্রতিটি বিধানসভা ও লোকসভা কেন্দ্র ধরে ধরে পর্যালোচনা করতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রের মধ্যে কোথায় দলের দুর্বলতা ও ক্ষমতা রয়েছে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ।
- নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সম্ভাব্য প্রার্থী। সেই কেন্দ্রের বিভিন্ন সমস্যা পর্যালোচনা করা।
- সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ছেড়ে জনগণের দৈনন্দিন সমস্যার উপর মনোনিবেশ করতে হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী ময়দানে পিকে-র পরামর্শ মেনে চলতে কংগ্রেস রাজি হবে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। প্রশান্ত কিশোরের দেওয়া পরামর্শ খতিয়ে দেখতে কংগ্রেসের অন্দরে টিমও গঠন করা হয়েছে। সেই টিম খতিয়ে দেখবে কংগ্রেসের জন্য় এই পরামর্শ গ্রহণযোগ্য কিনা। কংগ্রেসের সভাপতি সনিয়া গান্ধীর কাছে সেই রিপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে পেশ করার কথা। সূত্রের খবর, এই রিপোর্ট অনুযায়ী সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেবেন সনিয়াই।
আরও পড়ুন : Amit Shah : রাজ্য বিজেপিতে ভাঙনের খেলার মাঝেই বাংলায় সফরে আসছেন অমিত শাহ