Anganwari Worker Protest: দিল্লি-গুরুগ্রামে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের, মাইনের বিচারে কোথায় দাঁড়িয়ে অন্যান্য রাজ্যগুলি?
Anganwari workers: দিল্লির বিক্ষোভরত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি তাদের বেতন প্রায় ৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা করা এবং তাদের সহায়কদের বেতন বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হোক। এই মুহূর্তে দিল্লিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সহায়কদের বেতন ৪,৮৩৯ টাকা।
আ কা শ গু লা ঙ্কা র
গত প্রায় তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দিল্লি এবং গুরুগ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। টিভি ৯ যে কারণে অন্যান্য রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মজুরির দিকে নজর দিয়েছিল। এবং বিভিন্ন সরাকারি সূত্র যেমন মহিলা এবং শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের পাশাপাশি কিছু সংবাদ প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গিয়েছে যে দিল্লির অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বেতন পান।
দিল্লির বিক্ষোভরত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি তাদের বেতন প্রায় ৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং তাদের সহায়কদের বেতন বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হোক। এই মুহূর্তে দিল্লিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সহায়কদের বেতন ৪,৮৩৯ টাকা। অন্যদিকে গুরুগ্রামে বিক্ষোভকারী কর্মীদের দাবি তাঁদের এবং তাঁদের সহায়কদের মাইনে যথাক্রমে ২৪,০০০ এবং ১৮,০০০ টাকা করা হোক।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতনের দিক দিয়ে অন্যান্য রাজ্যগুলি কোথায় দাঁড়িয়ে?
নিউজ ৯ টিমের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, কোন রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মাইনে কত তা জানতে গণনার জন্য বিবেচিত এগারোটি রাজ্যের মধ্যে হরিয়াণা সরকার নিজেদের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রতি মাসে সবচেয়ে বেশি মাইনে (১১,৮১১ টাকা) দেয়। ১০ হাজার টাকা সহ এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কেরালার নাম। দিল্লির বিক্ষোভরত শ্রমিকদের মাইনে ৯ হাজার টাকার বেশি। তথ্য অনুযায়ী, এর পরই রয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং উত্তর প্রদেশের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা, যাদের মাইনে ৮ হাজার টাকা। বাকি রাজ্যগুলির মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, বিহার এবং ওড়িশার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ৭ হাজার টাকা মাইনে পান।
অন্যদিকে তথ্য অনুযায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সহায়কদের মাইনে প্রতি মাসে ৩৯০০ টাকা থেকে ৪৬০০ টাকার মধ্যে। একমাত্র উত্তর প্রদেশ (৬০০০ টাকা/মাস) এবং কেরালায় (৭০০০/মাস) সহায়কদের বেতন এই পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক (MWCD) অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং তাদের সহায়কদের মাইনে বাড়িয়েছিল। সেই সময় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মাইনে ১৫০০ টাকা এবং সহায়কদের মাইনে ৭৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে রাজ্য সরকারগুলি এই কর্মীদের মাইনে বাড়াবে।
দেশে কত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সক্রিয়?
লোকসভায় দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় ১৪ লক্ষ অঙ্গওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। MWCD ডেটা অনুযায়ী, এই কেন্দ্রীগুলি মোট ১৩.২৫ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং ১১.৪১ লক্ষ সহায়ক কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা প্রধানত শিশুদের শৈশবকালীন যত্নের ক্ষেত্রে কাজ করে। ইন্টিগ্রেটেড চাইল্ড ডেভলপমেন্ট স্কিম (ICDS) এর অধীনে কাজ করেন এই কর্মীরা। এই স্কিমে ০ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি বাড়ানোর দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়। এই কর্মীরা প্রধাণত দেশের গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে বেশি নজর দেয়।
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে উত্তর প্রদেশে সর্বাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়ক কর্মীরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। উত্তর প্রদেশে এক সঙ্গে প্রায় ৩.১৪ লক্ষ মহিলা সক্রিয়ভাবে অঙ্গনওয়াড়ি এবং সহায়ক কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। এরপরই রয়েছে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং মহারাষ্ট্র, যেখানে কমপক্ষে এক লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং এক লক্ষ সহায়ক কর্মী সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। বিক্ষোভকারী রাজ্য হরিয়াণায় মোট ৪৮,৭২৭ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়ক রয়েছে অন্যদিকে দিল্লিতে রয়েছে মোট ১০,৩৯২ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং ১০,৭৩৯ জন সহায়ক কর্মী।
অঙ্গনওয়াড়িতে সরকার কত টাকা খরচ করে?
দেশের জাতীয় বাজেট তহবিল বরাদ্দ অনুযায়ী, ভারত ২০২০-২১ সালে ICDS এবং অন্যন্য ছোট ছোট প্রকল্পগুলি চালাতে অঙ্গনওয়াড়িগুলিতে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা খরচ করেছে। গত কয়েক বছরে এই তহবিল বরাদ্দ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ সালে অঙ্গনওয়াড়িগুলির জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল ১৫,০০০ কোটি টাকা। পরের বছর এই বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানো হয়। অন্যদিকে ২০১৮-১৯ সালে এই বরাদ্দ বেড়ে হয় ১৬,৮৮২ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে এই বরাদ্দ সবচেয়ে বেশি ৩০০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ২০,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছয়। তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ সালের সর্বশেষ বাজেট পর্যন্ত এই পরিসংখ্যান একই রয়েছে।
প্রতিবেদক নিউজ ৯ এর অভিজ্ঞ সাংবাদিক এবং লোকমত জার্নালিজম পুরস্কার ২০২০-তে ভূষিত