Pune: ধোঁয়া নয়, এই বাস চললে বের হবে জল! পুনেতে চালু হল যুগান্তকারী হাইড্রোজেন সেল চালিত যান

Hydrogen Fuel Cell bus in Pune: রবিবার পুনেতে ভারতের প্রথম দেশিয়ভাবে তৈরি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত বাসের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। এই বাসের একমাত্র বর্জ্য পদার্থ হল জল।

Pune: ধোঁয়া নয়, এই বাস চললে বের হবে জল! পুনেতে চালু হল যুগান্তকারী হাইড্রোজেন সেল চালিত যান
পুনেতে এই ধরনের প্রথম বাসটির উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 22, 2022 | 11:17 PM

পুনে: আত্মনির্ভর ভারত গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, জ্বালানি ক্ষেত্রে এখনও ভারতের আত্মনির্ভর হওয়াটা অনেক দূরের পথ। তবে, রবিবার (২১ অগস্ট) এই লক্ষ্যে চলার পথে বড় মাইলফলক অতিক্রম করল ভারত। এদিন, চালু হল প্রথম দেশিয়ভাবে তৈরি করা হাইড্রোজেন জ্বালানী সেল চালিত বাস। ভারতের বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ বা সিএসআইআর এবং বেসরকারী সংস্থা কেপিআইটি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে এই বাসটি তৈরি হয়েছে। রবিবার পুনেতে এই বাসটি প্রকাশ্যে আনেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। বলাই বাহুল্য আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্য পূরণের পাশাপাশি, হাইড্রোজেন জ্বালানী সেল চালিত এই বাস ভারতের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যগুলি পূরণেও বড় ভূমিকা নেবে।

হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল, হাইড্রোজেন গ্যাস এবং বাতাসকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এবং সেই বিদ্যুতেই বাস বা অন্য যানবাহন চলে। সবথেকে বড় কথা এই বাস সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব পরিবহণ মাধ্যমগুলির অন্যতম। কারণ, এই বাস চললে কোনও রকম ধোঁয়াই বের হয় না। ফলে কার্বন নির্গমনের কোনও সম্ভাবনাই নেই। বাসটি থেকে একমাত্র বর্জ্য পদার্থ যেটি তৈরি হয়, তা হল জল। এই বাস ছিক কতটা কার্বন নির্গমণ কম করে? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণত দীর্ঘ দূরত্বের চলাচলকারী একটি ডিজেল ইঞ্জিন চালিত বাস, ১ বছরে ১০০ টনের মতো কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করে। ভারতে এই ধরনের কয়েক লক্ষ্য বাস চলে। সেই তুলনায় হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত যে কোনও যানবাহনে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরির পরিমাণ থাকে শূন্য। এই তথ্য থেকেই স্পষ্ট, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে এই বাস ঠিক কতটা কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে।

পুনেতে এই ধরনের সর্বপ্রথম বাসটির উদ্বোধন করে, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছেন, “আত্মনির্ভর উপায়ে ভারতে সাশ্রয়ী মূল্যের এবং ব্যবহারযোগ্য পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎপাদন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাইড্রোজেন দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্য পূরণ করবে এবং নতুন উদ্যোগপতি ও কর্মসংস্থান তৈরির করবে। পরিশোধন শিল্প, সার শিল্প, ইস্পাত শিল্প, সিমেন্ট শিল্প এবং ভারী বাণিজ্যিক পরিবহন ক্ষেত্রে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ কম করা কঠিন। কিন্তু, সবুজ হাইড্রোজেন এমন এক চমৎকার পরিশ্রুত শক্তি, যা এই ক্ষেত্রগুলিকে গভীরভাবে নিকার্বনিকরণ করতে সক্ষম করে তোলে। ভারতের মোট কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনের প্রায় ১২-১৪ শতাংশই তৈরি হয় ডিজেল-চালিত ভারি যানবাহন থেকে। হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত যানবাহন এই ক্ষেত্রে কার্বন নির্গমন দূর করার জন্য চমৎকার বিকল্প প্রদান করে।”

এই সবুজ হাইড্রোজেনের জোরে ভারত জ্বালানি ক্ষেত্রে বিশ্বগুরু হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। তাঁর মতে, এই লক্ষ্যগুলি অর্জনের মাধ্যমে, ভারত জীবাশ্ম শক্তির সবথেকে বড় আমদানিকারক থেকে পরিচ্ছন্ন হাইড্রোজেন শক্তির বড় রপ্তানিকারকে পরিণত হতে পারে। একটি বড় সবুজ হাইড্রোজেন উত্পাদনকারী এবং সরঞ্জাম সরবরাহকারী দেশ হিসেবে ভারত হাইড্রোজেন জ্বালানি ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী নেতৃস্থানীয় দেশ হয়ে উঠতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল চালিত যানবাহনগুলি চালানোর খরচও ডিজেল-চালিত যানবাহনের তুলনায় অনেক কম। অনেক শিল্প বিশেষজ্ঞের মতে, এটি দেশের মালবাহী শিল্পে বিপ্লব আনতে পারে।