Supreme Court Collegium System : কলেজিয়াম ব্যবস্থায় সংশোধনী আইন নিয়ে প্রশ্ন! ধন্দ মেটালেন না রিজিজু

Kiren Rijiju : আজ রাজ্য সভায় কিরণ রিজিজু জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের ৩৪ জন বিচারপতির মধ্যে এই প্রথম মহিলা বিচারপতি রয়েছেন ৪ জন।

Supreme Court Collegium System : কলেজিয়াম ব্যবস্থায় সংশোধনী আইন নিয়ে প্রশ্ন! ধন্দ মেটালেন না রিজিজু
কিরণ রিজিজু (ছবি সৌজন্যে : সংসদ টিভি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 04, 2022 | 1:12 PM

নয়া দিল্লি : বৃহস্পতিবার সংসদে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। বিজু জনতা দলের (BJD) রাজ্যসভার সদস্য প্রসন্ন আচার্য প্রশ্ন করেছেন যে, সরকার কি কোনও আইনব্যবস্থায় কোনও সংশোধনী আনতে চলেছে যা এই বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করবে? তবে এর জবাবে আইন মন্ত্রী এদিন কোনও মন্তব্য করেননি। এর আগে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই একই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি জানিয়েছিলেন, কলেজিয়াম ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা আনার জন্য় প্রক্রিয়ার একটি খসড়াপত্র সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া আটকে আছে। কলেজিয়াম নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ অনেকদিনের। শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময়ে এই কলেজিয়াম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। আজ এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে কিরণ রিজিজু তা এড়িয়ে যান। তিনি ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই মুহূর্তে কেন্দ্রের তরফে সেইরকম কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম ব্যবস্থা কী?

সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম হল একটি ফোরাম। সেই ফোরামে থাকেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সহ পাঁচজন বরিষ্ঠ বিচারপতি। এই ফোরামেই বিভিন্ন বিচারপতির নিয়োগ এবং বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংবিধানে এই ব্যবস্থার কোনও উল্লেখ নেই। হাইকোর্টের কোনও বিচারপতি বা প্রধান বিচারপতির সুপ্রিম কোর্টে পদোন্নতি, কোনও বিচারপতির প্রধান বিচারপতি পদে উন্নতি বা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ বা বদলি সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয় এই সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম। বর্তমানে এই কলেজিয়ামের সদস্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমান্না, বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত, বিচারপতি অজয় খানউইলকর, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এল এন রাও।

সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে কী বিরোধ?

সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ উঠেছে যে এই ফোরামে বিচারপতি নিয়োগ ও বদলির প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। সাধারণত এই কলেজিয়ামের নিয়ম অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট বা হাই কোর্টে বিচারপতির কোনও পদ খালি হলে এই পাঁচ বিচারপতি সমন্বিত ফোরাম কয়েকজন বিচারপতির নাম প্রস্তাব করে। তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় সরকার তাতে অনুমোদন না দিলেও ফোরাম সেই প্রস্তাব অনুযায়ী নিয়োগ করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধটা সেখানেই। কেন্দ্রীয় সরকার বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ নিয়ে বহুবার সরব হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও প্রাক্তন বিচারপতিরাও ফোরামের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিগত দিনে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি একবার অভিযোগ করেছিলেন যে, এই কলেজিয়াম ব্যবস্থার এইবার বিদায় নেওয়া উচিত। কারণ এই কলেজিয়াম ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার অভাব ও গোপনীয়তা রয়ে গিয়েছে। অনেকক্ষেত্রে পরিবারতন্ত্রেরও অভিযোগ উঠেছে কলেজিয়ামের বিরুদ্ধে।

কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ :

অতীতে কলেজিয়াম ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে এবং বিচারপতি নিয়োগে সরকারের ভূমিকা নিশ্চিত করতে জাতীয় নিয়োগ কমিশন বিল এনেছিল মোদী সরকার। সংসদে পাশও হয়েছিল সেই বিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে খারিজ করে দেয়। নিয়োগের ক্ষমতা একচ্ছত্রভাবে থেকে যায় কলেজিয়ামের হাতেই। এই নিয়ে বিরোধ এখনও বর্তমান। তবে বিচারপতি নিয়োগে স্বচ্ছতার দাবিতে সংশোধনী বিল আনার কথা তুলেছেন অনেক বিরোধীরাই। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু গত শীতকালীন অধিবেশনে জানিয়েছিলেন,কলেজিয়াম ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা আনার জন্য় প্রক্রিয়ার একটি খসড়াপত্র সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া আটকে আছে।

আইনমন্ত্রী সংসদে আজ কী বলেছেন?

কলেজিয়ামে স্বচ্ছতা প্রসঙ্গ আনার পাশাপাশি হাইকোর্টে ও সুপ্রিমকোর্টে মহিলা, অনগ্রসর জাতি, তফসিলি জাতি ও উপজাতি নিয়োগের বিষয়েও প্রশ্ন করা হয় আইনমন্ত্রীকে। তার জবাবে তিনি বলেছেন, “সরকার কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগ আটকে রাখেনি। উল্টে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামকে বিচারপতি নিয়োগে মহিলা ও লঘু সম্প্রদায়কে প্রাধান্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।” তিনি আরও বলেছেন, “সরকার পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখে না। বিচরাপতি নিয়োগের সময় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় কারণ সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের সুপারিশ করা ব্যক্তি বা মহিলা আদালতে বিচারপতি হওয়ার যোগ্য কিনা তা আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।” রিজিজু আরও বলেছেন, “আমরা খুব খুশি যে সুপ্রিম কোর্টের ৩৪ জন বিচারপতির মধ্যে এই প্রথম একসঙ্গে মহিলা বিচারপতির সংখ্যা ৪।” এরপর আইন মন্ত্রী সংসদের উচ্চকক্ষে গর্বের সঙ্গে জানিয়েছেন যে, সুপ্রিম কোর্টের ৪ জন মহিলা বিচারপতিদের মধ্যে ৩ জন মহিলার নিয়োগ হয়েছে তিনি আইন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে। তিনি আরও জানিয়েছেন, দেশের সব হাইকোর্টের ১০৯৮ টি বিচারপতির মধ্যে ৮৩ জন মহিলা।

আরও পড়ুন : Nishith Pramanik In Rajya Sabha :‘কোনও নির্দিষ্ট বাজেট নেই’, দেশের ক্রীড়াবিদদের সাফল্যে মোদীর জয়জয়কার নিশীথের