প্রস্তুতি সেরেও রজনী বললেন, “রাজনীতিতে আসছি না”, হঠাৎ কেন?

তিনি বলেন,"অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমি রাজনীতিতে আসতে পারব না। শুধু আমিই জানি এই সিদ্ধান্তে কতটা ব্যাথা হচ্ছে।"

প্রস্তুতি সেরেও রজনী বললেন, রাজনীতিতে আসছি না, হঠাৎ কেন?
ছবি- টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Dec 29, 2020 | 4:31 PM

চেন্নাই: অনেকে বলেন, রজনীকান্তের জন্যই নাকি অসম্ভব শব্দটি অভিধান থেকে বাদ পড়তে পারে। এ মহাবিশ্বে এমন কিছু নেই যা তাঁর না-পারার বাইরে। ব্যতিক্রম শুধু রাজনীতি। বৃহস্পতিবার থালাইভার সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হল, এই মুহূর্তে রাজনীতি আর তাঁর জন্য নয়। তিল তিল করে তাঁর ভক্তদের মনে যে স্বপ্ন বুনেছিলেন, রজনী রাজনীতিতে এলে তার ভোল পাল্টে যাবে। আপাতত সেই স্বপ্ন ভেঙে দেওয়ার জন্য তিনি দুঃখিত। জোড় হাত করে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে নিলেন দক্ষিণের এই সুপারস্টার।

শরীর অসুস্থ। হাসপাতাল থেকে সবে বাড়ি ফিরেছেন। তারপরই রজনীকান্তের সিদ্ধান্ত তিনি বর্তমানে রাজনীতিতে প্রবেশ করছেন না। সূত্রের খবর, শারীরিক অসুস্থতার জন্য পিছিয়ে আসতে বাধ্য হলেন থালাইভা। দক্ষিণে ‘ভগবান’ বলতে অনেকেই বোঝেন সুপারস্টার রজনীকান্তকে। তাঁর প্রভাব এতটাই, তাঁর ভক্তদের চটানোর সাহস পায় না কোনও রাজনৈতিক দল। কয়েক দিন আগে পর্যন্তও জোর জল্পনা ছিল রাজনীতির ময়দানে কেরামতি দেখাবেন ‘থালাইভা।’ তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে আসার জল্পনা দীর্ঘ ২৫ বছরের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভক্তদের ব্যাথা দিয়েই রজনী বললেন, “আমি রাজনীতিতে আসতে পারব না। আমায় ক্ষমা করুন।”

তবে রজনী রাজনীতিতে আসার কথা ঘোষণা করতেই উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। তবে সবটাই রাজধানীতে। রজনীকান্তকে দক্ষিণে আক্রমণ করার সাহস দেখাতে পারেননি কোনও দলের রাজ্যস্তরের নেতা। বিজেপির সঙ্গে রজনীকান্তে সখ্য নিয়ে গুঞ্জন চলে প্রকাশ্যে। দল ঘোষণার পর রজনীর দলকে ‘বিজেপির বি টিম’ বলেও মন্তব্য করে বসেছিলেন কংগ্রেস ও ডিএমকে নেতারা।

আরও পড়ুন: টিআরপি কিনতে বার্ক প্রধানকে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা দিতেন অর্ণব গোস্বামী, বিস্ফোরক তথ্য

রজনী তাঁর দলের প্রধান সমন্বয়কারী হিসাবে নাম ঘোষণা করেছিলেন অর্জুন মূর্তির। কিন্তু এই অর্জুনই কয়েক মাস আগেও ছিলেন অমিত শাহের চেন্নাইয়ের সফরসঙ্গী। বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলেরও মাথায় ছিলেন অর্জুন। তিনি রজনীর দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ায় কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “ভক্তদের অপেক্ষা করে রজনী বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে গেলেন।” কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তিকও জানিয়েছিলেন, রজনীকান্ত যদি বিজেপির সঙ্গে হাত মেলান তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

তবে সব জল্পনার অবসান, রজনী নিজেই জানিয়ে দিলেন রাজনীতিতে আসছেন না তিনি। দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার মন্তব্য করেছেন রজনীকান্ত। সিএএ নিয়ে কেন্দ্রের সপক্ষে সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। মাঝে এসেছিল আরেক অভিনেতা কমল হাসানের সঙ্গে রজনীকান্তের হাত মেলানোর জল্পনা। তখনও রজনীকান্ত জানিয়েছিলেন, মানুষের উন্নতির জন্য তিনি কমল হাসানের সঙ্গেও হাত মেলাতে প্রস্তুত। তবে প্রকাশ্যে বিজেপিতে যোগদানের কথা অস্বীকার করলেও বিভিন্ন বিষয়ে বিজেপির সুর মিলেছে তাঁর সঙ্গে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সময় মোদী-শাহকে ‘কৃষ্ণার্জুন’-এর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন রজনীকান্ত। কিন্তু অবশেষে না ‘এসপার না উসপার।’ সব তোড়জোড় করেও বর্তমানে রজনী ‘না’ বললেন রাজনীতিকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রজনী ভোল বদলে দেওয়ার যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তা হয়ত অপূর্ণই থেকে যাবে।