Rajasthan: সত্তরোর্ধ্ব দম্পতির ঘরে শোনা যাচ্ছে শিশুর কান্না, বিয়ের ৫৪ বছর পর কাটল বন্ধ্যাত্বের অভিশাপ!

70-year-old Rajasthan woman become mother for the first time: বাবার বয়স ৭৫, মায়ের ৭০। বিয়ের ৫৪ বছর পর হল প্রথম সন্তান। রাজস্থানের আলওয়ারের ঘটনা।

Rajasthan: সত্তরোর্ধ্ব দম্পতির ঘরে শোনা যাচ্ছে শিশুর কান্না, বিয়ের ৫৪ বছর পর কাটল বন্ধ্যাত্বের অভিশাপ!
আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হলেন চন্দ্রাবতী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 11, 2022 | 1:29 PM

জয়পুর: যে বাড়িুতে এতদিন সপ্ততিপর দম্পতির হাহুতাশ শোনা যেত, সেই বাড়িই চলতি সপ্তাহের সোমবার (৮ অগস্ট) থেকে গমগম করছে শিশুর কান্নার শব্দে। ৭৫ বছর বয়সী গোপীচাঁদ এবং তার স্ত্রী, ৭০ বছরের চন্দ্রাবতী দেবীর বিয়ে হয়েছিল প্রায় ৫৪ বছর আগে। গোপীচাঁদ ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক। তাঁদের জীবনে সব ছিল, শুধু ছিল না কোনও সন্তান। বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র গোপীচাঁদ মেনেই নিয়েছিলেন, তাঁর পর আর তাঁদের পরিবার এগোবে না। কিন্তু, গত সোমবার তাঁদের জীবনে এসেছে তাঁদের প্রথম সন্তান। যে বয়সে লোকে নাতির মুখ দেখে, সেই বয়সে প্রথম সন্তান লাভের আনন্দে মেতেছেন রাজস্থানের বাসিন্দা গোপীচাঁদ ও চন্দ্রাবতী। কীভাবে ঘটল এই অবিশ্বাস্য ঘটনা? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলার নুহানিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোপীচাঁদ ও চন্দ্রাবতী। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন গোপীচাঁদ। পায়ে গুলিও লেগেছিল তাঁর। সেই নিয়ে গর্ব ছিল ঠিকই, কিন্তু, তাঁদের কুঁড়ে কুঁড়ে খেত, সন্তান না হওয়ার যন্ত্রনা। মনে করতেন, কোথাও যেন সমাজের বাকি সকলের থেকে পিছিয়ে আছেন তাঁরা। প্রাকৃতিক নিয়মে ৭০ বছর বয়সে কোনও মহিলার পক্ষে গর্ভধারণ সম্ভব নয়। কিন্তু, অসম্ভবকে সম্ভব করাই বিজ্ঞানের কাজ। প্রায় বছর দেড়েক আগে, গোপীচাঁদ ও চন্দ্রবতীকে আলওয়ার জেলার এক প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের আত্মীয়। আর সেখানেই আইভিএফ বা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতিতে মা হয়েছেন চন্দ্রাবতী দেবী।

আলওয়ারের ওই প্রজনন কেন্দ্রের চিকিৎসক পঙ্কজ গুপ্ত জানিয়েছেন, জন্মের পর শিশু ও মা দুজনেই ভাল আছেন। শিশুটির ওজন হয়েছে প্রায় ৩.৫ কেজি। তাঁর মতে রাজস্থানের এটিই সম্ভবত প্রথম ঘটনা যেখানে একজন ৭৫ বছর বয়সী পুরুষ এবং ৭০ বছর বয়সী মহিলা এক সন্তানের জন্ম দিলেন। এমনকি, সারা দেশেই এই বয়সে শিশুর জন্মদানের হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র ঘটনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তবে আইভিএফ পদ্ধতি ব্যবহার করে সন্তানের জন্ম দেওয়াটা খুব সহজ ছিল না। তৃতীয় প্রচেষ্টায় সফল হন তাঁরা। নয় মাস আগে গর্ভধারণ করেন চন্দ্রাবতী দেবী। তারপর থেকেই মনে মনে দারুণ আনন্দ ছিল এই সপ্ততিপর দম্পতির। তবে, চন্দ্রাবতীর বয়সের কারণে স্বাস্থ্যগত উদ্বেগও ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সব ভালয় ভালয় মিটেছে।

তবে এই বয়সে বাবা-মা হওয়ার ঘটনা ভারতে আর নাও ঘটতে পারে। কারণ, সম্প্রতি সংসদে এই বিষয়ে একটি আইন পাস হয়েছে। ২০২২ সালের জুন মাস থেকে সেই আইন কার্যকরও করা হয়েছে। আইনটিতে বলা হয়েছে, ৫০-ঊর্ধ্ব মহিলা এবং পুরুষদের আইভিএফ পদ্ধতিতে বন্ধ্যাত্বের চিকিত্সা দিতে পারবে না কোনও প্রজনন কেন্দ্র। তবে আইনটি কার্যকর হওয়ার ঠিক আগে চন্দ্রাবতী গর্ভধারণ করায়, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাধা আসেনি। একটা সময় ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতি পরিচিত ছিল ‘টেস্টটিউব বেবি’ নামে। গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে কোনও মহিলার ডিম্বাণু ও কোনও পুরুষের শুক্রাণুর নিষেক ঘটিয়ে একটি ভ্রূণ তৈরি করা হয়। সেই ভ্রুণ ওই মহিলার গর্ভে স্থাপন করা হয়।