NavIC: ২০২৫-এর মধ্যে সব স্মার্টফোনে থাকবে ইসরো-র তৈরি ‘নাবিক’ প্রযুক্তি: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
ISRO's NavIC: বর্তমানে সকল স্মার্টফোনে থাকে জিপিএস ব্যবস্থা। এটি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম। অর্থাৎ, কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে পথের দিশা দেয় এই ব্যবস্থা। নাবিক অ্যাপটি প্রায় একইরকমের। পার্থক্য হল, এটি ভারতীয় কৃত্রীম উপগ্রহের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা নেভিগেশন সিস্টেম।
নয়া দিল্লি: ২০২৫ সালের মধ্যেই ভারতের সমস্ত স্মার্টফোনে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরোর তৈরি নেভিগেশন প্রযুক্তি ‘নাবিক’ (NavIC) থাকবে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর), এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি জানিয়েছেন, ৫জি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ব্যবহারকারী সমস্ত স্মার্টফোনে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে নাবিক প্রযুক্তি দিতে হবে। আর অন্যান্য স্মার্টফোনগুলির ক্ষেত্রে নাবিক প্রযুক্তি দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৫-এর ডিসেম্বর। অর্থাৎ, ২০২৫ সাল শেষ হওয়ার আগেই, সমস্ত স্মার্ট ফোনে এই প্রযুক্তি পাওয়া যাবে। নাবিক প্রযুক্তি সমর্থনের জন্য স্মার্টফোনগুলিতে একটি বিশেষ ইলেকটরনিক চিপ ব্যবহার করতে হবে। ভারতে তৈরি বা নকশা করা স্মার্টফোনগুলিতে এই চিপ ব্যবহারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
সদ্য, আইফোন ১৫ প্রো এবং আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স স্মার্টফোন বাজারে এনেছে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপল। এই আইফোন মডেলগুলিতে নাবিক (NavIC) প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই প্রথম কোনও আইফোন মডেলে এই প্রযুক্তি যোগ করা হয়েছে। এই খবর আসতে না আসতেই রাজীব চন্দ্রশেখর এই বড় ঘোষণা করলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে রাজীব চন্দ্রশেখর বলেছেন, “প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের বৃহত্তম সংস্থা অ্যাপল। তারা তাদের নতুন আইফোন ১৫ লঞ্চ করেছে। এই লঞ্চের সময়, ভারত দুটি মাইলফলক অর্জন করছে। প্রথম মাইলফলক হল, নিউ ইয়র্ক এবং লন্ডনের সঙ্গে ভারতেও একই দিন থেকে আইফোন মডেলগুলি পাওয়া যাচ্ছেয এটা আগে কখনও হয়নি। দ্বিতীয়টি হল, ইসরোর তৈরি নাবিক জিপিএস স্যাটেলাইট সিস্টেমটি আইফোন ১৫-য় দেওয়া হয়েছে।” আইফোনের নয়া মডেলে নাবিক প্রযুক্তি দেওয়ার জন্য অ্যাপল সংস্থার প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বর্তমানে সকল স্মার্টফোনে থাকে জিপিএস ব্যবস্থা। এটি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম। অর্থাৎ, কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে পথের দিশা দেয় এই ব্যবস্থা। নাবিক অ্যাপটি প্রায় একই রকমের। পার্থক্য হল, এটি ভারতীয় কৃত্রিম উপগ্রহের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা নেভিগেশন সিস্টেম। ২০১১ সালেই এই ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্য ছিল। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে সাত বছর দেরি হয়। অবশেষে ২০১৮ সালে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। বেশ কয়েকটি কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করে অনলাইন মানচিত্রে কোনও স্থানকে লোকেট করতে পারে এই ব্যবস্থা। কার্যকারিতার দিক থেকে নাবিক কিন্তু জিপিএস-এর থেকে এগিয়ে আছে। জিপিএস ভিত্তিক অনলাইন মানচিত্র, গ্রাহকদের তাঁদের লক্ষ্যের ২০ মিটারের মধ্যে পৌঁছে দেয়। নাবিক অ্যাপ আরও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যের আরও কাছে পৌঁছে দেয় গ্রাহকদের। ভারত বর্তমানে যে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে, সেগুলিতেও এই নাবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তবে, জিপিএস যেমন বিশ্বের যে কোনও জায়গায় ব্যবহার করা যায়, নাবিকের কার্যকারিতা সীমাবদ্ধ শুধুমাত্র ভারত এবং তার সীমানা থেকে ১,৫০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত। তবে, আরও বেশি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়ে, এই ব্যবস্থাকে বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করতে চায় ভারত।