চাক্কা জ্যামে বাদ দিল্লি, ব্যারিকেড নিয়ে মোদীকে টিপ্পনী রাকেশ তিকাইতের

বৃহস্পতিবার গাজিপুর সীমান্ত থেকে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত (Rakesh tikait) বলেন, "আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি আমরা পিছু হটব না। প্রয়োজনে আগামী অক্টোবর মাস অবধিও আন্দোলন জারি রাখা হবে।"

চাক্কা জ্যামে বাদ দিল্লি, ব্যারিকেড নিয়ে মোদীকে টিপ্পনী রাকেশ তিকাইতের
আন্দোলনস্থলে কৃষকরা। ছবি:ANI
Follow Us:
| Updated on: Feb 05, 2021 | 11:24 AM

নয়া দিল্লি: শনিবার দেশজুড়ে চাক্কা জ্যাম (Chakka Jam)-র ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারী কৃষকরা। তার আগেই কর্মসূচির ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-কে একহাত নিলেন ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ তিকাইত (Rakesh Tikait)। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, গোটা দেশজুড়ে চাক্কা জ্যাম করা হলেও বাদ থাকবে দিল্লি, কারণ সেখানে “রাজা নিজেই রাস্তায় পেরেক পুঁতে রেখেছে”।

প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্রাক্টর মিছিলে (Tractor Rally) বিশৃঙ্খলার পরই কিছুটা “ব্যাকফুটে” চলে গিয়েছিল কৃষক আন্দোলন, কিন্তু আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই এখনও অনড় রয়েছেন কৃষকরা। চলতি সপ্তাহেই আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলির তরফে ঘোষণা করা হয়, আগামী শনিবার অর্থাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি গোটা দেশজুড়ে চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি পালন করা হবে। দুপুর ১২টা থেকে তিনটে অবধি বিভিন্ন জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।

বৃহস্পতিবার গাজিপুর সীমান্ত থেকে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত (Rakesh tikait) বলেন, “আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি আমরা পিছু হটব না। প্রয়োজনে আগামী অক্টোবর মাস অবধিও আন্দোলন জারি রাখা হবে।” চাক্কা জ্যাম কর্মসূচির বিষয়ে তিনি জানান, দিল্লি বাদে রাজধানী সংলগ্ন অঞ্চল অর্থাৎ হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানে আগামীকাল চাক্কা জ্যাম করা হবে। এছাড়াও দক্ষিণ ভারত সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি পালন করা হবে।

আরও পড়ুন: ‘নীতিবোধ’ শক্তিশালী করার পরামর্শ তাপসীর, মা তুলে অপমান কঙ্গনার

দিল্লি এড়িয়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেই বলেন, “আমরা দিল্লিতে চাক্কা জ্যাম করব না কারণ সেখানে তো রাজা নিজেই পেরেক পুঁতে রেখেছে। ওখানে আমাদের চাক্কা জ্যাম করার আর প্রয়োজন নেই।” পথ অবরোধে যাত্রী সমস্যার কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিকাইত বলেন, “দুপুর ১২টা থেকে তিনটের মধ্যে যেসমস্ত গাড়িগুলি আসবে, তাদের আটকানো হবে এবং জল ও সামান্য কিছু শুকনো খাবার তুলে দেওয়া হবে। ভেজানো ছোলা বা বাদাম জাতীয় কিছু খাবার তুলে দেওয়া হবে যাত্রীদের হাতে। সরকার আমাদের সঙ্গে কী করছে, সেই বিষয়েও সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে বলা হবে।”

গ্রামেও চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি কীভাবে পালিত হবে, সেই বিষয়েও তিনি জানান। বিকেইউ (BKU) নেতা বলেন, “গ্রাম থেকে দুটি করে ট্রাক্টর আসবে এবং এখানে পাঁচদিনের জন্য থাকবে। এরপর তাঁরা ফের গ্রামে ফেরত চলে যাবে, সেই জায়গায় আবার দুটি ট্রাক্টর আসবে।” সীমান্তে কাঁটাতার-ব্যারিকেডের বেষ্টনী সম্পর্কে তিনি বলেন, “কৃষকরাই একে একে সরকারের পোঁতা পেরেক তুলে ফেলবে। সরকার এখন যেমন পেরেক তুলে ফেলছে, ঠিক এভাবেই একদিন সরকারও কৃষি আইন তুলে ফেলতে বাধ্য হবে।”

আন্দোলনস্থলে রাজনৈতিক নেতাদের আসা-যাওয়া সম্পর্কে রাকেশ তিকাইত জানান, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। তাঁরা কৃষকদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেই সমর্থন জানাতে এসেছেন।

গাজিয়াবাদ পুলিশ আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়, বর্তমানে কেবল গাজিপুর সীমান্তেই প্রায় দুই থেকে তিন হাজার কৃষক রয়েছেন। তাঁবু খাটিয়ে থাকার পাশাপাশি অনেকে রাস্তায় গদি বিছিয়েও শুয়ে থাকেন রাতে। এদিকে, গতকালই সীমান্ত থেকে পেরেক তুলে নেওয়ার বিষয়ে আধিকারিকরা জানান, পেরেক তুলে নেওয়া হচ্ছে না, সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য কেবল অবস্থান পরিবর্তন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মার্চেই অসম-গুজরাটে উপনির্বাচন, ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের