অগস্টেই আছড়ে পড়ছে তৃতীয় ঢেউ, চূড়ায় উঠবে অক্টোবরে! এপিসেন্টার জানালেন বিজ্ঞানীরা
লকডাউন উঠতেই মানুষের ঢল দেখেই গবেষকরা সতর্ক করে বলেছিলেন, সেপ্টেম্বর নয়, অগস্টের শেষেই আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ।
নয়া দিল্লি: লকডাউন উঠতেই ফের একবার স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই অসচেতন হয়ে পড়েছিল সাধারণ মানুষ, তার ফলও এ বার মিলতে চলেছে হাতেনাতেই। চলতি মাসেই দেশে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ, বিজ্ঞানী-গবেষকদের ইঙ্গিত এমনটাই।
করোনা যে এত সহজে বিদায় নেবে না, তা বুঝে গিয়েছেন সকলেই। দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হতে না হতেই জল্পনা শুরু হয়েছিল সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের। প্রথমে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগে বা অক্টোবরের শুরুতে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হবে। তবে দেশের অধিকাংশ রাজ্য থেকে লকডাউন উঠতেই মানুষের ঢল দেখেই গবেষকরা সতর্ক করে বলেছিলেন, সেপ্টেম্বর নয়, অগস্টের শেষেই আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তবে স্বস্তির খবর একটাই, করোনাভাইরাসের বিশেষ কোনও অভিযোজন না হলে দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে না তৃতীয় ঢেউ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যেখানে দৈনিক ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানেই তৃতীয় ঢেউয়ে দৈনিক সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় লক্ষ মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
হায়দরাবাদ ও কানপুরের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির গবেষক মাথুকুমালি বিদ্যাসাগর ও মনীন্দ্র আগরওয়ালের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে যে, অগস্টেই শুরু হতে পারে তৃতীয় ঢেউ, অক্টোবর মাসে তা সংক্রমণের শীর্ষে পৌঁছতে পারে সংক্রমণ। যে রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হার বেশি, যেমন কেরল, মহারাষ্ট্র, সেখানে রেকর্ড ভাঙা সংক্রমণ হতে পারে।
গত মে মাসেই হায়দরাবাদ আইআইটি-র গবেষক এম বিদ্যাসাগর অঙ্কের মডেলের উপর ভিত্তি করে বলেছিলেন, জুনের শেষ ভাগেই দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারে পৌঁছবে। পরে এপ্রিল মাসে তিনি জানান, সেই গণনা ভুল ছিল। দ্রুত গতিতে টিকাকরণ এগোনোয় করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আগের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ না করলেও যে রাজ্য়গুলিতে হটস্পট তৈরি হচ্ছে, তার উপর বিশেষ নজরদারি করা উচিত ও নিয়মিত সংগৃহীত নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা প্রয়োজন। তবেই নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হলে, তা আগে থেকে জানা যাবে।
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজারের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কেরল থেকেই দেশের দৈনিক আক্রান্তের ৫০ শতাংশের খোঁজ মিলছে। উত্তর পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যেও সংক্রমণ ক্রমশ উর্ধ্বমুখী। ফলে তৃতীয় ঢেউয়ের হটস্পট হয়ে উঠতে পারে কেরল।
দেশের মাত্র ৭.৬ শতাংশ জনগণই এখনও অবধি টিকার দুটি ডোজ় পাওয়ায় হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে, তাও বলা যাবে না। সুতরাং কেরলের মতো বড় রাজ্যে যদি একনাগাড়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়, তবে গোটা দেশেই তা ছড়িয়ে পড়বে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও টিকাকরণের পাশাপাশি আসন্ন সংক্রমণের ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আরও পড়ুন: আজ ত্রিপুরায় অভিষেক, তার আগেই আগরতলায় ছেঁড়া হল পোস্টার