Kapil Sibal: ‘হাত’ ধরেই উত্থান তিন দশক আগে, শুরু থেকেই গান্ধীদের প্রতি সরব ছিলেন কপিল সিব্বল
Rise of Sibal: ‘হাত’ ধরেই জাতীয় রাজনীতিতে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছন কপিল। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের সময় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীও ছিলেন তিনি।
নয়াদিল্লি: কংগ্রেসের সঙ্গে তিন দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন কপিস সিব্বল। জাতীয় রাজনীতি বরাবরের পরিচিত মুখ ছিলেন এই আইনজীবী রাজনীতিক। একাধিক বার তাঁকে দেখা গিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের বিরোধিতার করতে। কংগ্রসে ছাড়ার ২ মাস আগেও কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকে গান্ধীদের সরে যাওয়ার পরামর্শ প্রকাশ্যে দিয়েছিলেন সিব্বল। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ১০ বছর পেরোতে না পেরোতেই চাঁচাছোলা কথার জন্য কংগ্রেস নেতৃত্বের কোপে পড়েছিলেন তিনি। তবে শুধু ১০ জনপথের গণ্ডিতেই আবদ্ধ ছিল না কপিলের পরিচয়। আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কপিলের ঘনিষ্ঠতা বরাবরই নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের। পাশাপাশি তিনি বেরিয়ে যাওয়ায় দুর্বল হয়ে পড়বে কংগ্রেসে বিদ্রোহীদের জি-২৩ গ্রুপ। ‘হাত’ ধরেই জাতীয় রাজনীতিতে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছন কপিল। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের সময় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীও ছিলেন তিনি।
কংগ্রেসের সঙ্গে কপিলের সম্পর্ক শুরু ১৯৯১ সালে। কংগ্রেসের হয়ে প্রথমবার ভোটে লড়েন ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ দিল্লি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সুষমা স্বরাজের কাছে হেরে যান। কিন্তু হেরে গেলেও দলে গুরুত্ব বেড়েছিল কপিলের। ১৯৯৮ সালে জুলাই মাসে তাঁকে রাজ্যসভা থেকে মনোনীত করে কংগ্রেস। এক বছর পরে কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্রের দায়িত্বও পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৪ লোকসভা নির্বাচনে চাঁদনি চক কেন্দ্র থেকে স্মৃতি ইরানিকে পরাজিত করে লোকসভায় যান তিনি। মনমোহন সিংহ সরকারের মন্ত্রীও হন। কিন্তু বিভিন্ন সময়েই শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। প্রয়াত আহমেদ প্যাটেলের সঙ্গে কাজ থেকে সামলেছেন দলের দায়িত্ব। আহমেদ প্যাটেল ছিলেন সোনিয়া গান্ধীর অন্যতম আস্থাভাজন। তাই সোনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভালই ছিল কপিলের। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কাজ করতে কখনই স্বচ্ছন্দ ছিলেন না তিনি।
গান্ধীর পরিবারের সমালোচনা করে থাকে কংগ্রেসের জি২৩ গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর অন্য়তম মুখ ছিলেন সিব্বল। গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, ভূপিন্দর সিংহ হুজা, শশী থারুর, মণীশ তিওয়ারি, জিতিন প্রসাদ, যোগানন্দ শাস্ত্রীর মতো নেতারা এই গ্রুপের সদস্য ছিলেন। এর মধ্যে জিতিন প্রসাদ, যোগানন্দ শাস্ত্রী আগেই কংগ্রেস ছেড়েছেন। এ বার ছাড়লেন কপিল। তিনি ছেড়ে যাওয়ায় কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীও দুর্বল হল বলে মনে করা হচ্ছে। ওই গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেছেন, “সিব্বলের আর কোনও উপায় ছিল না। গান্ধীদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে বাড়াতে এক কোণে চলে গিয়েছিলেন সিব্বল। তাঁর এই পদক্ষেপ রাজ্যসভা ভোটের আগে প্রভাব ফেলতে পারে।”
কংগ্রেসে থাকলেও আইনজীবী হিসাবে তাঁর সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সখ্যতা ছিল শুরু থেকেই। লালুপ্রসাদ, মুলায়ম সিংহ যাদব, অখিলেশ যাদবের মতো নেতাদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় লালুপ্রসাদের আইনজীবীও ছিলেন তিনি। কংগ্রেস ছাড়লেও সরাসরি সমাজবাদী পার্টিতে যোগদানের কথা স্বীকার করেননি সিব্বল। আগামী রাজ্যসভা নির্বাচনে নির্দল হিসাবে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। অবশ্য তাঁকে সমর্থের কথা জানিয়েছে অখিলেশের নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টি। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালেও রাজ্যসভা ভোটের সময় সমাজবাদী পার্টি সিব্বলকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন। কংগ্রেস ছেড়ে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের প্রাসঙ্গিকতা কী ভাবে বজায় রাখেন এই দুঁদে আইনজীবী, সে দিকে নজর রয়েছে দেশের রাজনৈতিক মহলের।