Shashi Tharoor: কং সভাপতি নির্বাচনে রাহুলের পথ নয় নিষ্কণ্টক, কেরলে গোপনে বাড়ছে শশী-কাঁটা

Shashi Tharoor may contest for Congress president's post: গত দুই দশক ধরে কংগ্রেসের সভাপতি পদের নির্বাচনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। তবে, এবার রাহুল গান্ধীর ফের কংগ্রেস সভাপতি পদে ফেরাটা একেবারে নিষ্টন্টক নাও হতে পারে। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন কেরলের লোকসভা সাংসদ শশী থারুর।

Shashi Tharoor: কং সভাপতি নির্বাচনে রাহুলের পথ নয় নিষ্কণ্টক, কেরলে গোপনে বাড়ছে শশী-কাঁটা
শেষ পর্যন্ত কি রাহুলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবেন শশী, আলোচনা চলছে গোপনে গোপনে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2022 | 11:58 PM

তিরুঅনন্তপুরম: গত দুই দশক ধরে কংগ্রেসের সভাপতি পদের নির্বাচনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল ২০০১ সালে। সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে লড়াই করে গোহারা হেরেছিলেন জিতেন্দ্র প্রসাদ। সনিয়া যেখানে পেয়েছিলেন ৭,৪৪৮ ভোট, জিতেন্দ্র প্রসাদের জুটেছিল মাত্র ৯৪ ভোট। তারপর থেকে দ্বিতীয় কোনও প্রার্থী না থাকায়, একতরফাভাবে জিতে এসেছেন সনিয়া গান্ধী-রাহুল গান্ধীরা। কংগ্রেস কার্যকরী সমিতির বিভিন্ন সদস্যের মন্তব্যে স্পষ্ট, আসন্ন নির্বাচনেও তাঁরা সেটাই চাইছেন। তবে, রাহুল গান্ধীর ফের কংগ্রেস সভাপতি পদে ফেরাটা একেবারে নিষ্টন্টক নাও হতে পারে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সফাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন লোকসভা সাংসদ শশী থারুর। কারণ, তিনি মনে করেন, দলের জন্য ‘একটি নতুন ধারণা এবং একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি’ গ্রহণ করার সময় এসেছে।

গত রবিবার, কংগ্রেসের কার্যকরী সমিতির পক্ষ থেকে পরবর্তী সভাপতি নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই হরিশ রাওয়াত, মল্লিকার্জুন খাড়গে, সলমন খুরশিদের মতো দলের বিশিষ্ট নেতারা বলতে শুরু করেছেন, রাহুল গান্ধীর ফের কংগ্রেস প্রধান হওয়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তবে, এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, কং সভাপতির পদে লড়াই করার জন্য ভাবনা-চিন্তা করা শুরু করেছেন শশী থারুর। জি-২৩, অর্থাৎ থারুর-সহ কংগ্রেসের যে ২৩ জন বিশিষ্ট নেতা ২০২০ সালের অগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে চিঠিটি লিখে দলের কার্যক্রম পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই আজ আর দলে নেই। সূত্রের খবর, বাকি যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে ইতিমধ্য়েই এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন শশী থারুর। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের অন্যান্য সহকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করছেন। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিছু তিনি নেননি। আসলে তিনি এখন জল মাপছেন।

এই বিষয়ে এখনও প্রকাশ্য়ে কোনও মন্তব্য করেননি শশী থারুর। তবে, জল মাপা যে তিনি শুরু করে দিয়েছেন, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে তাঁর লেখায়। সিডব্লিউসি পার্টির সভাপতি নির্বাচনের সূচি ঘোষণা করার পরই এক মালয়ালম দৈনিক সংবাদপত্রে তিনি একটি নিবন্ধে লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, “আদর্শভাবে সিডব্লিউসি-র এক ডজন আসনের জন্যও নির্বাচন ঘোষণা করা উচিত ছিল। এই কমিটিও নির্বাচিত হওয়ার কথা। দলের এই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলি থেকে কারা দলকে নেতৃত্ব দেবেন তা নির্ধারণ করার অনুমতি যদি সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি এবং এবং প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রতিনিধিদের দেওয়া হত, তাহলে সেটা নেতৃত্বদানকারী দলটির বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরিতে সহায়ক হত। তবে, একজন নতুন সভাপতি নির্বাচন করাটাও কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের এক সূচনা।”

সভাপতি নির্বাচনের অন্যান্য ইতিবাচক প্রভাবও তৈরি হতে পারে বলে, নিবন্ধে দাবি করেছেন থারুর। এই প্রসঙ্গে তিনি টেনেছেন ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সাম্প্রতিক নেতা নির্বাচনের কথা। তাঁর মতে এই নির্বাচন সারা বিশ্বব্যাপী দলটি সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করেছে। ২০১৯ সালে থেরেসা মে-র বিকল্প নেতৃত্ব বাছাইয়ের সময়, যখন এক ডজন প্রার্থীকে হারিয়ে বরিস জনসন আবির্ভূত হয়েছিলেন, সেই সময়ও একই রকম আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। শশী থারুরের মতে কংগ্রেস দলে যদি এরকম নির্বাচন দেখা যায়, তাহলে দলের প্রতি জাতীয় স্তরে আগ্রহ আরও বাড়বে এবং আরও ভোটার ফের কংগ্রেসের দিকে আকৃষ্ট হবে। এরপরই থারুর লিখেছেন, “আশা করি যে বেশ কয়েকজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এগিয়ে আসবেন। দল ও দেশের জন্য তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা অবশ্যই জন-আগ্রহকে আলোড়িত করবে।”

তাঁর এই নিবন্ধই, সভাপতি নির্বাচন বিষয়ে শশী থারুরের পরিকল্পনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে শেষ দুটি লাইন বিশেষ অর্থবহ বলে মনে করা হচ্ছে। নিবন্ধে তিনি রাহুল গান্ধীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অস্বীকৃতি জানানোর বিষয়েও মতামত দিয়েছেন। এর আগে রাহুল বলেছিলেন সভাপতি পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান না, এমনকি, গান্ধী পরিবারের আর কোনও সদস্য এই পদে বসুন, তাও তিনি চান না। গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসি নেতারা যখন রাহুলকে যে করেই হোক রাজি করানোর কথা বলছেন, শশী থারুর বলছেন অন্য কথা। তাঁর মতে রাহুলের এমন বিবৃতিতে অনেক কংগ্রেস সমর্থক হতাশ হয়ে পড়েছেন। তবে, “গান্ধী পরিবারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা এই বিষয়ে সম্মিলিতভাবে কী অবস্থান নেবে। কিন্তু, কোনও গণতন্ত্রে, কোনও দলেরই এমন বিশ্বাস রাখা উচিত নয় যে, শুধুমাত্র একটি পরিবারই দলটির নেতৃত্ব দিতে পারে।”

২০০১ সালে জিতেন্দ্র প্রসাদ পারেননি। ১৯৯৭ সালে গান্ধীদের প্রার্থী সীতারাম কেশরীর বিরুদ্ধে লড়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন জিতেন্দ্র প্রসাদের সঙ্গে সঙ্গে শরদ পওয়ার এবং রাজেশ পাইলটও। শশী থারুর শেষ পর্যন্ত যদি গান্ধীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে তিনি কি পারবেন কংগ্রেস দলের নেতৃত্বকে ‘গান্ধী-মুক্ত’ করতে? শশী-ঘনিষ্ঠদের মতে তাঁর সবথেকে বড় সুবিধা হল, তাঁর কোনও ইতিহাসের বোঝা নেই। ২০০৯ সালেই দলে যোগ দেওয়া শশী টাটকা বাতাসের মতো।