Shashi Tharoor’s manifesto: শতাব্দী প্রাচীন দলে তাজা বাতাসের ঝাপটা! কংগ্রেসকে বাঁচাতে শশীর ৯ দাওয়াই

Shashi Tharoor Manifesto for Cong President: কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন শশী থারুর। দলকে পুনর্জীবিত করতে ইস্তাহার প্রকাশ করে ৯ দাওয়াই দিয়েছেন তিনি।

Shashi Tharoor's manifesto: শতাব্দী প্রাচীন দলে তাজা বাতাসের ঝাপটা!  কংগ্রেসকে বাঁচাতে শশীর ৯ দাওয়াই
শশী থারুরের ইস্তাহারে ৯ দাওয়াই
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2022 | 4:50 PM

কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন শশী থারুর। আর শুরুতেই কংগ্রেস কর্মীদের ভোট দিতে বলে এক ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন তিনি। ভারতের ভুল মানচিত্র থাকার কারণে ইতিমধ্যেই শশী থারুরের সেই ইস্তাহারে চরচার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, সেই বিতর্ককে পাশে সরিয়ে রাখলে শতাব্দী প্রাচীন দলটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য থারুর বেশ কিছু আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিয়েছেন।

সংগঠনে বদল

থারুর বেশ কিছু সাংগঠনিক বদলের প্রস্তাব রেখেছেন। তাঁর মতে পূর্ণ-সময়ের কংগ্রেস সভাপতিকে সকলের ধরা ছোঁয়ার মধ্যে থাকতে হবে। নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। এআইসিসি এবং অন্যান্য প্রধান কমিটিগুলির সঙ্গে ত্রৈমাসিক বৈঠক করা উচিত। এছাড়া, দেশের পাঁচ অঞ্চলের পাঁচজন সহ-সভাপতি নিয়েগের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক দায়িত্ব দিয়ে সাধারণ সম্পাদক নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন থারুর। রাজ্য-স্তরের নেতাদের উপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কমানোর পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। প্রতি মাসে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক এবং প্রতি পাঁচ বছরে এআইসিসির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন করার কথা বলেছেন তিনি। সভাপতি ও অন্যান্য পদাধিকারীদের ক্ষমতায় থাকার সময়সীমা জন্য পাঁচ বছরের জন্য দুই মেয়াদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন থারুর।

ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ

“বিজেপির ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণের একটি বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প” তৈরি করতে কংগ্রেসকে অবশ্যই “রাজ্য, জেলা এবং ব্লক নেতাদের কাছে ক্ষমতা অর্পণ করতে হবে”, বলেছেন থারুর। অর্থাৎ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন তিনি। একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের ক্ষমতায়নের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর ফলে শীর্ষ নেতারা অতিরিক্ত প্রশাসনিক বোঝা থেকে মুক্ত হবেন। জাতীয় নেতৃত্ব শক্তিশালী হবে।

ছায়া মন্ত্রিসভা

গণতান্ত্রিক এবং যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া চালুর জন্য কংগ্রেসে একাধিক পরামর্শমূলক ব্যবস্থা চালুর কথা বলেছেন থারুর। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নির্বাচিত কয়েকজনের হাতে থাকবে, এই ধারণার অবসান ঘটানোর কথাও বলেছেন। বিজেপি সরকারকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ করার জন্য একটি “ছায়া মন্ত্রিসভা” স্থাপনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। দলের অবস্থান ক্রমাগত আপডেট করার জন্য নিয়মিত নীতিগত আলোচনার উপর জোর দিয়েছেন। এক ব্যক্তি এক পদ নিয়মের পাশাপাশি নতুন শক্তি তুলে আনার জন্য ৫০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ৫০ শতাংশ টিকিট সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছেন। নারী, যুব, এসসি/এসটি/ওবিসি এবং সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির উপরও জোর দিয়েছেন।

অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত

“ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতি” এবং “উজ্জ্বল ও আত্মবিশ্বাসী বিদেশ নীতির” কথাওবলা হয়েছে ইস্তাহারে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি এবং ভারতের বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদ এবং শক্তিশালী জাতীয় নিরাপত্তা নীতি ও একটি আত্মবিশ্বাসী বিদেশী নীতি তৈরির কথা বলেছেন থারুর।

প্রার্থী নির্বাচনে পেশাদার কৌশল

প্রার্থী নির্বাচনের জন্য পেশাদার কৌশল গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন শশী থারুর। তাঁর মতে কমপক্ষে তিন মাস আগে প্রার্থীদের মনোনীত করা উচিত। পরপর দুই নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের একই আসনে ফের প্রার্থী করা উচিত না। ধারাবাহিকভাবে সফল নির্বাচিত পদাধিকারীদের ক্ষেত্রে মেয়াদের সীমা প্রযোজ্য হবে না।

যুবদের সুযোগ

কংগ্রেসকে জয়ের সরণিতে ফেরাতে বেকার যুব, যুব-অধ্যুষিত কর্মক্ষেত্রগুলিকে ব্যবহার করার কথা বলছেন থারুর। চাকরি মেলা, দক্ষতা প্রদর্শনী এবং উন্নয়নশীল শিল্প সহযোগিতার মতো উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে যুব ও ছাত্র সংগঠনকে বড় ভূমিকা নিতে হবে। তাঁর মতে, তরুণ ভারতীয়দের বিশ্বাস অর্জন রাতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে যে, কংগ্রেস তাদের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারে।

মহিলাদের ক্ষমতায়ন

মহিলাদের ক্ষমতায়নের পক্ষেও জোর দিয়েছেন থারুর। নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আন্দোলনে মহিলাদের উত্সাহিত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। দলীয়সংগঠনে এবং নির্বাচনী ময়দানে মহিলাদের জন্য আরও বেশি পদ সংরক্ষণের পক্ষেও মত দিয়েছেন শশী থারুর।

পেশাদারি যোগাযোগ বৃদ্ধি

উদারীকরণের অ্যাজেন্ডাকে ফের গ্রহণ করে ব্যবসা ও শিল্পকে সমর্থনের উপর জোর দিয়েছেন থারুর। দলীয় নেতাদের, বেসরকারি খাতে সম্পদ সৃষ্টি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে সমর্থন করতে বলেছেন। তবে এইভাবে সৃষ্ট রাজস্ব সমাজের দরিদ্র ও প্রান্তিক অংশের মধ্যে বণ্টনের উপরও জোর দিয়েছেন। তাঁর মতে, পেশাদারদের দল হিসাবে কংগ্রেসকে পেশাদার সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। পার্টির সমস্ত কার্যকলাপে পেশাদারদের যুক্ত করার কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে এমএসএমই সেক্টরকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য দলীয় নেতাদের উদ্যোগী হতে বলেছেন। থারুরের মতে, এটাই ভারতের কর্মসংস্থানের সমস্যা সমাধানের পথ।”

শুধু ভোট লড়ার যন্ত্র নয়

সবশেষে, থারুরের ইস্তাহারে কংগ্রেসকে কয়েক বছর পরপর নির্বাচন লড়ার হাতিয়ারের থেকে বেশি কিছু হয়ে ওঠার কথা বলা হয়েছে। থারুরের মতে, দুটি নির্বাচনের মধ্যবর্তী সময়ে সমাজসেবার মতো কাজে লিপ্ত হতে পারেন দলীয় কর্মীরা। সাধারণ মানুষ, সরকার বা পুলিশের সঙ্গে থা বলতে বা কোনও কাজ করতে সমস্যায় পড়েন। এই ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করতে পারেন দলীয় কর্মী-নেতারা। তাদের আমলাতন্ত্রের ফাঁস থেকে মুক্ত করতে পরেন।