কৃষি আইনের ভাগ্য নির্ধারণে শুরু বৈঠক, নববর্ষে কৃষকদের বাড়ি পাঠাতে চায় কেন্দ্র

কৃষকরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করতে হবে। কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহারের পাশাপাশি ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের আইনী গ্যারান্টি, দিল্লির দূষণ রুখতে খড় পোড়ানোর জন্য কৃষকদের বিরুদ্ধে যে কড়া আইন আনা হয়েছে, তা সংশোধন এবং বিদ্যুৎ আইন সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করতে হবে।

কৃষি আইনের ভাগ্য নির্ধারণে শুরু বৈঠক, নববর্ষে কৃষকদের বাড়ি পাঠাতে চায় কেন্দ্র
কৃষকদের সঙ্গে ষষ্ঠদফার বৈঠকে বসেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। ছবি: ANI
Follow Us:
| Updated on: Dec 30, 2020 | 5:02 PM

নয়া দিল্লি: দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে বুধবার কেন্দ্রের সঙ্গে ষষ্ঠ দফার আলোচনায় বসল ৪১টি কৃষক সংগঠনের প্রধানরা। বৈঠকে কেবল চারটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করতে আগ্রহী তাঁরা, একথা গতকালই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিল আন্দোলনকারী কৃষকরা। অন্যদিকে কেন্দ্রের আশ্বাস, কৃষকরা যাতে নববর্ষ পরিবারে সঙ্গে বাড়িতেই কাটাতে পারেন, সেই চেষ্টাই করা হবে।

তিন সপ্তাহ ধরে বৈঠক নিয়ে দর কষাকষির পর আজ দুপুর তিনটে নাগাদ বিজ্ঞান ভবনে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় ও কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত রয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার (Narendra Singh Tomar), পিযুষ গোয়েল (Piyush Goyel) ও সোম প্রকাশ (Som Prakash)। বৈঠক শুরুর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোম প্রকাশ বলেন, “কৃষকদের সঙ্গে আজকের বৈঠক ফলদায়ক হবে। আমরা চাই কৃষকরা তাঁদের বাড়িতেই, পরিবারের সঙ্গে নববর্ষ উদযাপন করুক। আমরা খোলা মনে আলোচনা করতে প্রস্তুত।” নূন্যতম সহায়ক মূল্যের আইনী সুরক্ষার বিষয়ে তিনি জানান, কৃষকদের থেকে কেন্দ্রের নূন্যতম সহায়ক মূল্য (Minimum Support Price) কেড়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই।

অন্যদিকে মঙ্গলবারই কৃষকরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করতে হবে। প্রথমটি অবশ্যই কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহার। বাকি বিষয়গুলি হল, ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের আইনী গ্যারান্টি, দিল্লির দূষণ রুখতে খড় পোড়ানোর জন্য কৃষকদের বিরুদ্ধে যে কড়া আইন আনা হয়েছে, তা সংশোধন এবং বিদ্যুৎ আইন সংশোধনী বিল প্রত্যাহার।

আরও পড়ুন: একটি বা দু’টি নয়, দেশে মিলল ১৯ ধরনের নতুন স্ট্রেনের খোঁজ, একটি আবার ‘বিপজ্জনক’!

বৈঠকের মাঝে মধ্যাহ্নভোজন বিরতিতে একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিযুষ গোয়েল ও নরেন্দ্র সিং তোমারকে কৃষকদের সঙ্গে খেতে দেখা যায়, অন্যদিকে বিজ্ঞান ভবনের বাইরে কৃষকদের জন্য খাবার নিয়ে ‘কার সেবা’ টেম্পোকেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে, কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠক চলাকালীনই বিরোধী দলগুলির তরফ থেকে নানা প্রতিক্রিয়া মিলতে শুরু করেছে। সমাজবাদী পার্টির প্রেসিডেন্ট অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav) দাবি করেন যে, বিজেপি (BJP)-র নিম্নস্তরের কর্মীরাও চান, কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক, নচেৎ তাঁরা বাকিদের মুখ দেখাতে পারবেন না। তিনি টুইট করে লেখেন, “কয়েকজন ধনী বন্ধুর জন্য বিজেপি সরকার যেন গোটা দেশের কৃষকদের না ঠকান এবং আজকের আলোচনায় যেন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেন। বস্তুত, বিজেপির নিচু স্তরের কর্মীরাও এটাই চায় কারণ তাঁরা সাধারণ মানুষের সামনে যাওয়ার সাহস দেখাতে পারছেন না।”

অন্যদিকে কংগ্রেস (Congress)ও শিরোমণি আকালি দল (Shiromani Akali Dal)-র তরফেও আন্দোলনকারী কৃষকদের সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। শিরোমণি আকালি দলের সাংসদ হরসিমরৎ কৌর বাদল বলেন, “কৃষকদের বারবার বৈঠকের ফাঁদে পা দেওয়া উচিত নয়, যেখানে আখেরে ফল শূন্যই হয়।” পঞ্জাবের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সুনীল জাখর (Sunil Jakhar)-ও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেরই সমর্থন জানান। তিনি বলেন, “কৃষকরা জয়ের খুব কাছাকাছি রয়েছে। আমি তাঁদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, কৃষি আইন প্রত্য়াহারের জন্য তাঁরা যেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই কথা বলেন।”

আরও পড়ুন: আজই দেশে অনুমোদন পেতে পারে অক্সফোর্ডের করোনা টিকা ‘কোভিশিল্ড’!