Supreme Court of India: মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনানোর আগে অপরাধীর ‘ভাল আচরণও’ দেখা উচিত আদালতের: সুপ্রিম কোর্ট
Supreme Court Of India: শীর্ষ আদালতের মতে কোনও অপরাধীর অপরাধ যতই গুরুতর হোক না কেন, তাঁকে সাজা শোনানোর আগে অপরাধের আগের ও পরের অবস্থা বিবেচনা করে তবেই সাজা নিয়ে রায় দেওয়া প্রয়োজন।
নয়া দিল্লি: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, বাড়ছে অপরাধীদের সংখ্যাও। এবার এই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণের কথা জানাল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত দেশের বাকি সব নিম্ন আদালতের উদ্দেশে জানিয়েছে, এখন থেকে অপরাধের আগে বা পরে আসামির আচরণ মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ নিঃসন্দেহে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিচারপতি ইউ ইউ ললিত, বিচারপতি এস আর ভাট এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর বেঞ্চ এই কথা জানিয়েছে। নৃশংস খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ৩ যুবক-যুবতীর সাজা কমিয়েছে শীর্ষ আদালত। ভাল আচরণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাদের ২৫ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই তিন যুবকের একজন জেল ক্রিকেট টিমে অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছিল এবং নিজের পরিবারের ওপর বাড়তি নজর দিতে শুরু করে, দ্বিতীয় জন্য জেলের স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এবং তৃতীয় জন, যিনি এক মহিলা হস্তশিল্পের কাজে নিজেকে পারদর্শী করে তুলেছেন।
শীর্ষ আদালতের মতে কোনও অপরাধীর অপরাধ যতই গুরুতর হোক না কেন, তাঁকে সাজা শোনানোর আগে অপরাধের আগের ও পরের অবস্থা বিবেচনা করে তবেই সাজা নিয়ে রায় দেওয়া প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছে, “কোনও মহিলার তিনটি প্রজন্মকে হত্যা করা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ অপরাধ। এই ধরনের অপরাধ মারাত্মক এবং ক্ষমাহীন। মৃতাদের দেহে আঘাতের যে চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে তা মর্মান্তিক। এই অপরাধ যে ভয়াবহ, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।” তা সত্ত্বে রায়ে বিচারপতি ভাট জানিয়েছেন, “এই ধরনের মারাত্মক অপরাধ সত্ত্বে ‘মিটিগেটিং সারকামস্টেনসেস’ বিচার করাও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যা বিচার করে কোনও অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেওয়া যেতে পারে। বিচার চলাকালীন নিম্ন আদালত গুলি যেন এই বিষয়গুলির ওপর বাড়তি নজর দেয়।”
মিটিগেটিং সারকামস্টেনসেস কী?
ফৌজদারি আইনে মিটিগেটিং সারকামস্টেনসের ব্যবহার রয়েছে। মিটিগেটিং সারকামস্টেনসেস ব্যবহার করে কোনও অপরাধীর অপরাধ লঘু করে দেখান হয় যাতে আদালত তাঁকে চরমতম কোনও শাস্তি বা মৃত্যুদণ্ড না দেয়। পজেটিভ ও নেগেটিভ মিটিগেটিং সারকামস্টেনসেস হতে পারে। ইতিবাচক মিটিগেটিং সারকামস্টেনসেস ব্যবহার করে আইনজীবীরা তাদের মক্কেলের বিভিন্ন গুণ, ব্যবহার এবং ইতিবাচক দিক তুলে ধরার চেষ্টা করে। সাধারণত মামলা চলাকালীন এর ব্যবহার রয়েছে।
নেগেটিভ মিটিগেটিং সারকামস্টেনসের মাধ্যমে এমন কিছু অবস্থা তুলে ধরা হয়, যা দেখায় কোনও কঠিন পরিস্থিতি অথবা অন্য কোনও কারণে অপরাধী অপরাধ করতে বাধ্য হয়েছে। যেমন- মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস রয়েছে এমন পরিবারে বেড়ে ওঠা কোনও ব্যক্তি মানসিক অসুস্থতার কারণে কোনও অপরাধ করতে পারে, সেক্ষেত্রে তার সাজা কমানোর জন্য মিটিগেটিং সারকামস্টেনসের ব্যবহার করা হয়।