Sengol: স্বাধীনতার ইতিহাস বুকে নিয়ে নয়া সংসদ ভবনে দ্যুতি ছড়াবে ‘সেঙ্গোল’, জানুন ‘রাজদণ্ড’-র ইতিবৃত্ত

Sengol: আগামী ২৮ মে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিনই স্বাধীনতার প্রতীক 'সেঙ্গল' এই নয়া সংসদ ভবনে স্থাপন করবেন তিনি।

Sengol: স্বাধীনতার ইতিহাস বুকে নিয়ে নয়া সংসদ ভবনে দ্যুতি ছড়াবে ‘সেঙ্গোল’, জানুন 'রাজদণ্ড'-র ইতিবৃত্ত
নয়া সংসদে ভবনে স্থাপন করা হবে 'সেঙ্গোল'
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 25, 2023 | 1:55 PM

নয়া দিল্লি: আগামী ২৮ মে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আর এই দিনেই নয়া সংসদ ভবনে ঐতিহাসিক ‘সেঙ্গোল’ (Sengol) স্থাপন করবেন তিনি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (Union Home Minister) অমিত শাহ (Amit Shah) বলেন, স্পিকারের আসনের কাছে এই ঐতিহাসিক ‘রাজদণ্ড’ স্থাপন করা হবে।

আজ সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের ইতিহাসে ‘সেঙ্গোল’-র গুরুত্বও তুলে ধরেন অমিত শাহ। ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতীয়দের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক এই সোনার সেঙ্গোল। আর স্বাধীনতার ঐতিহাসিক প্রতীক হিসেবে এই ‘রাজদণ্ড’ স্বীকার করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। ভারতের স্বাধীনতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে এই ‘সেঙ্গোলের’ সংযুক্তিকরণের বর্ণনাও করেন শাহ। এই রাজদণ্ডই ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতকে জুড়েছিল। পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় ছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। শাহ জানান, ভারতকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করার পর্বে মাউন্টব্যাটেন প্রধানমন্ত্রী নেহরুকে একটি সোজাসুজি প্রশ্ন করেন। তিনি প্রশ্ন করেন যে ভারত স্বাধীনতা অর্জনের পরে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ভারতীয় প্রথা মেনে কীসের আয়োজন করা হতে পারে? সেই সময় নেহরু দেশের শেষ গভর্নর জেনারেল সি রাজাগোপালাচারীর কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছিলেন। রাজাগোপালাচারী সেই সময় তামিল ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেন। সাম্রাজ্যবাদের সময় একজন মহাযাজক ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীকী অঙ্গভঙ্গি হিসাবে নতুন মুকুট পরা রাজাকে একটি রাজদণ্ড উপহার দিতেন। ভারতের সবথেকে দীর্ঘকালীন চোল সাম্রাজ্য়ে এই ক্ষমতা হস্তান্তরের এই রীতি মেনে চলা হত।

রাজাজি জানান, ভারতের ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে স্মরণীয় করে তুলতে এই রাজদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। আর তাতে সিলমোহর দেন নেহরু। আর এই সেঙ্গোল তৈরির দায়িত্ব নেন রাজাগোপালাচারী। আর ‘সেঙ্গোল’ তৈরির জন্য রাজাজি বর্তমান তামিলনাড়ুর একটি বিশিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থিরুভাদুথুরাই আথিনামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই সময়ে মঠের আধ্যাত্মিক নেতা স্বেচ্ছায় এই ‘সেঙ্গোল’ তৈরির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেখানকার এক স্বনামধন্য স্য়াঁকরা ভূম্মিদি বাঙ্গারু চেট্টি এই ‘সেঙ্গোল’ তৈরি করেন। এই রাজদণ্ডের উচ্চতা ৫ ফুট। এর উপরে রয়েছে একটি নন্দী ষাঁড়। ন্যায় বিচারের প্রতীক এই দণ্ড।

একাধিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঠের এক উচ্চ পদস্থ পুরোহিত প্রথমে মাউন্টব্যাটেনের কাছে এই রাজদণ্ড অর্পণ করেন। তারপর গঙ্গা জল দিয়ে এই দণ্ড শোধন করা হয়। শোভাযাত্রা করে জওহরলাল নেহেরুর কাছে এই ‘সেঙ্গোল’ নিয়ে আসা হয়। রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে তাঁর হাতে এই ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক তুলে দেওয়া হয়। তখন থেকেই ভারতের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে থেকে যায় ওই ‘রাজদণ্ড’। আর লেখা হয় নতুন ইতিহাস। এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ গান তৈরি করা হয় এবং তা পারফর্ম করা হয় সেই মুহূর্তে। এদিকে তামিলনাড়ু থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসা এই ‘সেঙ্গোল’। স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে এখনও বিদ্যমান এই ‘রাজদণ্ড’। তবে ৭৫ বছর ধরে হারিয়ে গিয়েছিল এই ইতিহাস। আজ শাহ বলেন, অনেক মানুষই এই ‘সেঙ্গোল’-র বিষয়ে জানেন না। তাই সংসদ ভবনে এই প্রতীক স্থাপন করে গোটা দেশের সামনে হারিয়া যাওয়া ইতিহাস তুলে ধরা হবে।