All party meeting: ‘মহুয়া নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই…’, সর্বদল বৈঠকে ৬ দফা দাবি তৃণমূলের

TMC's demands at all party meeting: এদিন ঘাসফুল শিবিরের পক্ষে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কক্ষের দুই নেতা, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও'ব্রায়েন। মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার দাবি-সহ, বৈঠকে মোট ৬ দফা দাবি তোলেন তাঁরা।

All party meeting: 'মহুয়া নিয়ে সংসদে আলোচনা চাই...', সর্বদল বৈঠকে ৬ দফা দাবি তৃণমূলের
সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষে যোগ দিয়েছিলেন দলের দুই কক্ষের নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়Image Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 02, 2023 | 4:55 PM

নয়া দিল্লি: সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সেই অধিবেশনের আগে, রবিবার (২ ডিসেম্বর) সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল সরকার। এই সর্বভারতীয় বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তোলা হল মহুয়া মৈত্রর প্রসঙ্গও। ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে এথিক্স কমিটি। এথিক্স কমিটির সে রিপোর্চের বিষয়ে সংসদে আলোচনার দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন ঘাসফুল শিবিরের পক্ষে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কক্ষের দুই নেতা, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন। মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার দাবি-সহ, বৈঠকে মোট ৬ দফা দাবি তোলেন তাঁরা।

তৃণমূলের পক্ষ থেকে এদিন অভিযোগ করা হয়, সংসদ অধিবেশনের আগে যে সর্বদলীয় বৈঠক হয়, তা বর্তমান সরকারে আমলে ‘সময় নষ্টের’ বৈঠকে পরিণত হয়েছে। এই বৈঠক ডেকে আদতে বিরোধী দলগুলিকে বোকা বানানো হচ্ছে। এর আগে যে সংসদের বিশেষ অধিবেশন হয়েছিল, তার আগেও সর্বদল বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু, অধিবেশনের মাঝখানে এমন কিছু বিল গোপনে সভার কার্যক্রমে যুক্ত করা হয়েছিল, যেগুলি সর্বদলীয় বৈঠকে অন্য দলগুলির সঙ্গে আগে থেকে ভাগ করে নেয়নি সরকার।

ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি দণ্ডবিধি এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনকে প্রতিস্থাপন করতে, বাদল অধিবেশনেই ভারতীয় ন্যায় সংহীতা বিল ২০২৩, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহীতা বিল ২০২৩ এবং ভারতীয় সাক্ষ্য বিল পেশ করেছিল মোদী সরকার। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে ঔপনিবেশিক প্রভাবমুক্ত করতে এবং বিচার ব্যবস্থায় দ্রুততা আনতেই এই তিনটি বিধি প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। আসন্ন অধিবেশনে এই তিনটি বিলই পাশ করানোর চেষ্টা করবে সরকার বলে মনে করা হচ্ছে। সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আসন্ন অধিবেশনে এই তিনটি বড় বিল পাশ না করানোর দাবি জানানো হয়েছে। তৃণমূলের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সমাজে এই বিলগুলির বড় প্রভাব পড়তে পারে। তাই এই তিনটি বিল কোনওভাবেই চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।

দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি সরকারের আমলে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো হুমকির মুখে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো না মেনে, রাজ্য সরকারের কাজে নাক গলাতে চাইছে কেন্দ্র। এদিনও সেই অভিযোগ ফের তুলেছে তৃণমূল। আসন্ন অধিবেশনে একশো দিনের কাজ, আয়ুষ্মান ভারতের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিতে হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে আসন্ন অধিবেশনে আলোচনা চেয়েছে ঘাসফুল শিবির।

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন আরও জানান, সংসদে বিরোধীদের সময়ই দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন, সংসদে বিভিন্ন বিষয় উত্থাপনের জন্য বিরোধীদের আরও সময় দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। তারা আরও দাবি করেছে, বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যা নিয়ে আলোচনার অনুমতি দিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। সংসদের শুধু সরকার নিজের প্রশংসা করবে এবং তাই নিয়েই আলোচনা হবে, এটা হতে পারে না।

মহুয়া মিত্রর নাম সরাসরি উল্লেখ না করলেও, সর্বদলীয় বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনগুলি সংসদে পেশ না করা পর্যন্ত তা প্রকাশ্যে আনা উচিত নয়। এথিক্স কমিটির সর্বশেষ রিপোর্ট ইতিমধ্যেই ‘নির্লজ্জভাবে’ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস আরও বলেছে, কয়েকজন বিরোধী সাংসদকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, আমাদের দলের একজন সদস্যকেও ‘শীঘ্রই বহিষ্কার করা হবে’। কিন্তু, এই বিষয়ে সংসদে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। সংসদে আলোচনা হওয়ার পরই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে সংসদ। কাজেই মহুয়া মৈত্র ইস্যুতে তৃণমূল যে সহজে লড়াই ছাড়বে না, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।

অতীতের বেশ কয়েকটি অধিবেশনের সময় দেখা গিয়েছে, সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মতানৈক্যে দীর্ঘ সময় সংসদ অচল থেকেছে। সংসদ না চলার দায় কার? সরকার না বিরোধীদের, এই নিয়ে চর্চাও হয়েছে বিস্তরষ। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, সংসদ চলুক এটাই তার চায়। কারণ, সেই ক্ষেত্রে সংসদে সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। অতীতে সরকার বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে বারবার পালিয়েছে বলে, দাবি করেছে তৃণমূল। আসন্ন অধিবেশনে যাতে সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সরকারকেই সেটা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল।