চাই বাড়ি, লালবাতি গাড়ি, কেবিন! IAS ট্রেইনি-র চাহিদায় অতিষ্ট কালেক্টর

Trainee IAS officer Puja Khedkar: ট্রেইনি হয়েই তাঁর ব্যক্তিগত ব্যবহারের অডি গাড়িতে নীল-লাল আলো লাগিয়েছিলেন আইএএস অফিসার পূজা খেড়কর। সেই গাড়িতে ভিআইপি নম্বর প্লেট, মহারাষ্ট্র সরকারের বোর্ড লাগানো হয়েছিল ওই প্রাইভেট গাড়িতে। এখানেই শেষ নয়, তাঁর চাহিদায় অতিষ্ট হয়ে মুখ্য সটিবের কাছে অভিযোগ করলেন কালেক্টর।

চাই বাড়ি, লালবাতি গাড়ি, কেবিন! IAS ট্রেইনি-র চাহিদায় অতিষ্ট কালেক্টর
বিতর্কে আইএএস অফিসার পূজা খেড়করImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Updated on: Jul 11, 2024 | 6:32 PM

পুনে: ট্রেইনি হয়েই তাঁর ব্যক্তিগত ব্যবহারের অডি গাড়িতে নীল-লাল আলো লাগিয়েছিলেন আইএএস অফিসার পূজা খেড়কর। সেই গাড়িতে ভিআইপি নম্বর প্লেট, মহারাষ্ট্র সরকারের বোর্ড লাগানো হয়েছিল ওই প্রাইভেট গাড়িতে। এখানেই শেষ নয়, পুনে শহরের অ্যাসিস্ট্যান্ট কালেক্টর পদে ট্রেইনি হিসেবে যোগ দেওয়ার আগেই আলাদা কেবিন, সরকারি গাড়ি দাবি করেছিলেন তিনি। সময়মতো এগুলো না পেলে, তিনি নিজে কালেক্টরের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণের সময়ই এমন ভিআইপি খাতির দাবি করেছেন এই ২০২৩ ব্যাচের আইএএস অফিসার, যে তাঁকে বদলির সুপারিশ করেছিলেন খোদ কালেক্টর। ট্রেনিং শেষ হওয়ার পর তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়াসিম জেলায়। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা সামেন আসার পর, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আইএএস অফিসার হিসেবে নিয়োগের সময়, তাঁর পেশ করা নথিগুলি নিয়েও। প্রতিবন্ধকতার এবং ওবিসি হওয়ার জাল শংসাপত্র দিয়ে তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

মহারাষ্ট্রের এই সদ্য পাশ করা আইএএস অফিসার এখন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ৩ জুন কাজে যোগ দেওয়ার আগেই তিনি তাঁর কার্যালয়ে হোয়াটসঅ্যাপ করে জানিয়েছিলেন, তিনি যোগ দেওয়ার আগেই তাঁর কেবিন, থাকার জায়গা ও গাড়ির বন্দোবস্ত করতে হবে। তাঁকে জানানো হয়, প্রশিক্ষণের সময় তিনি থাকার জায়গা পাবেন। কিন্তু, কেবিন ও গাড়ি তিনি পাবেন না। কিন্তু, তাকে কর্ণপাতই করেননি পূজা খেড়কর। অফিসে যোগ দেওয়ার আগেই তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে অফিস দেখতে এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা কালেক্টর। তাঁকে কালেক্টর তাঁর নিজের কার্যালয়ই দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই কেবিনে সংযুক্ত শৌচাগার নেই বলে তাঁর পছন্দ হয়নি। তিনি এবং তাঁর বাবা দিলীপ খেড়কর, এরপর খনি বিভাগের অপরদিকে থাকা একটি হলঘর দাবি করেছিলেন। অফিসে যোগ দেওয়ার পর, এক অফিসারের কেবিন তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। ওই অফিসার ছুটিতে ছিলেন। জানা গিয়েছে, তাঁর অনুমতি না নিয়েই, কেবিনটি থেকে তাঁর আসবাবপত্র সরিয়ে দিয়েছিলেন পূজা। পরে সেই কেবিন ছাড়তে রাজিও হননি।

ব্যক্তিগত গাড়িতেই লালবাতি লাগিয়েছিলেন, দৃষ্টি ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধকতা থাকা আইএএস অফিসার

এরপরই জেলা কালেক্টর পূজা খেড়করের বিরুদ্ধে চিফ সেক্রেটারির কাছে অভিযোগ জানান। পুনেতে তাঁর প্রশিক্ষণ দেওয়া ঠিক হবে না বলে জানান তিনি। এর ফলে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। জেলা কালেক্টরের এই রিপোর্ট পাওয়ার পর, পূজা খেড়করকে তাঁর প্রশিক্ষণ শেষ করার জন্য ওয়াশিম জেলায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার, তিনি ওয়াশিমে সহকারী কালেক্টর হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। ৩০ জুলাই, এখানেই থাকবেন তিনি। তবে, এই বিতর্কের পর, তাঁর নিয়োগের নথিগুলি ফের যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে এই পরীক্ষা দেওয়ার সময় অক্ষমতা এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জাল শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সোশ্যা্ল মিডিয়ায় ভাইরাল পূজার হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিনশট

পূজা খেড়কর পরীক্ষা দিয়েছিলেন ওবিসি এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতার বিভাগে। মানসিক রোগের শংসাপত্রও জমা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, এইমস-এ তাঁকে ছয়বার ডাকার পরও তিনি মেডিকেল পরীক্ষা দেননি। পরে, এক বেসরকারি জায়গা থেকে একটি এমআরআই স্ক্যান রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। এছাড়া, তিনি ওবিসি নন-ক্রিমি লেয়ার স্ট্যাটাসের দাবি করেছেন। তিনি নিজেও প্রাক্তন আইএএস অফিসার। তাঁর নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে, তিনি ৪০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদের অধিকারী। কাজেই পূজা খেড়কর, কীভাবে নন-ক্রিমি লেয়ারের ওবিসি হলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।