আরও সুরক্ষিত হচ্ছে মালিক-ভাড়াটিয়ার চুক্তি, অগ্রিম ভাড়া নেওয়ার সর্বোচ্চ মেয়াদ বেঁধে দিল নয়া আইন
এই আইনের অধীনে সমস্ত নতুন ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে একটি লিখিত চুক্তি করতে হবে এবং তা সংশ্লিষ্ট জেলায় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
জ্যোতির্ময় রায়: অনুমোদন পেল মডেল টেনেন্সি অ্যাক্ট। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে মডেল টেনেন্সি অ্যাক্ট (এমটিএ) অনুমোদন করে। এর আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলাগুলিতে ভাড়াটিয়া ও মালিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিশেষ কর্তৃপক্ষ, আদালত ও ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে।
কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি বলেন, “এই পদক্ষেপটি সারা দেশে আবাসিক ভাড়া আইনী কাঠামোকে আরও নিয়মবদ্ধ ও সুনিয়ন্ত্রিত করতে সাহায্য করবে। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি নতুন আইন তৈরি করে বা বর্তমান বিধি সংশোধন করে মডেল টেন্যান্সি আইনটি প্রয়োগ করতে পারে।”
এই আইনের অধীনে সমস্ত নতুন ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে একটি লিখিত চুক্তি করতে হবে এবং তা সংশ্লিষ্ট জেলায় ভাড়া সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। মালিক এবং ভাড়াটিয়ার পারস্পরিক সম্মতিতে লিখিতভাবে ভাড়া এবং চুক্তির সময়কাল নির্ধারণ করা হবে। সরকার জানিয়েছিল যে মডেল টেন্যান্সি আইনটি “সম্ভাব্যতা” দিয়ে প্রয়োগ করা হবে এবং বিদ্যমান ভাড়াটিয়াকে প্রভাবিত করবে না।
এই আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত মূল বিষয়গুলি হল –
• এই আইনের আওতায় আবাসিক প্রাঙ্গণের জন্য ভাড়াটিয়াদের সর্বোচ্চ দুই মাসের জন্য ভাড়া অগ্রিম ডিপোজিট হিসাবে জমা দিতে হবে। বাণিজ্যিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে ছয় মাসের ভাড়া অগ্রিম হিসাবে জমা দিতে হবে।
• আইনে সমস্ত নতুন ভাড়ার ক্ষেত্রে লিখিত চুক্তির কথা বলা হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট জেলা ভাড়া কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
• আইনের বিধানগুলিতে বলা হয়েছে যে সম্পত্তির মালিক বা দেখভালকারী ভাড়াটিয়াদের চুক্তিবদ্ধ জায়গায় কোন প্রকার প্রয়োজনীয় সরবরাহ আটকাতে পারবেন না।
• উভয় পক্ষের মধ্যে লিখিত সম্মতি থাকলে জোর করে বা নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
• যদি চুক্তিতে সুনির্দিষ্ট না করা হয়, তবে ভাড়াটিয়ার দ্বারা বাড়ির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যেমন কাঠামোগত মেরামত, নলকূপের প্রতিস্থাপন এবং নলকূপের পাইপ বদলানো, ঘরে বা বাইরে ইলেকট্রিক মেরামত বা রঙ ইত্যাদি কাজগুলি বাড়িওয়ালাকেই করতে হবে।
• নালা-নর্দমা পরিষ্কার করা, সুইচ ও সকেট মেরামত করা, রান্নাঘরের সরঞ্জাম মেরামত করা, দরজা ও জানালায় কাঁচের প্যানেল প্রতিস্থাপন, উদ্যান ও খোলা জায়গাগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভাড়াটিয়ার থাকবে।
সরকারের বক্তব্য, এই আইন দেশে ঘর ভাড়া দেওয়া সম্পর্কিত পুরনো আইনি কাঠামোটিকে নতুনভাবে সংস্কার করতে সহায়তা করবে, যার ফলে উন্নয়নের পথ সুগম হবে। এটি সমস্ত স্তরের বা বিভিন্ন আয়ের গোষ্ঠীর মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ভাড়া বাড়ির ব্যবস্থা করতে সহায়তা করবে এবং গৃহহীন মানুষদের সমস্যা সমাধান করবে।
আরও পড়ুন: ‘ওয়ান্টেড’ অপরাধীকে পালাতে ‘মদত’ বিজেপি নেতার, মামলা দায়ের করল পুলিশ