এই পথেই নাকি করোনা-মুক্তি! অটুট বিশ্বাসে ন’দিনের ব্রত রেখে মা দুর্গার কাছে চলছে প্রার্থনা
বিজ্ঞান নয়, কুসংস্কারেই আস্থা রাখছেন তাঁরা।মাস্ক না পরেই যাচ্ছেন পুজো দিতে।
লখনউ: গত বছর শহরাঞ্চলেই করোনার প্রকোপ ছিল বেশি। তবে এবার গ্রামাঞ্চলেও করোনার দাপট ক্রমশ বাড়ছে। আর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওষুধ, অক্সিজেনের ওপর ভরসা না করে বিশ্বাস জন্মাচ্ছে প্রচলিত ধর্মীয় প্রথায়। বিজ্ঞানের ওপর আস্থা না রেখে অনেকেই সংস্কারের পথে হাঁটছেন। আর তাতে বিপদ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গায়ে গোবর মাখার ঘটনায় আগেই বার্তা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আর এ বার ন দিনের ব্রত রাখতে দেখা গেল গ্রামের মহিলাদের। এভাবেই করোনাকে হারাতে চান উত্তরপ্রদেশের মহিলারা।
উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জে ন’দিনের বিশেষ ব্রত শুরু করেছেন মহিলারা। তাঁদের বিশ্বাস, এই প্রার্থনাই করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখবে তাঁদের। দূর দূরান্ত থেকে হাতে জলের পাত্র ও ফুল নিয়ে পূজা দিতে আসছেন মা দুর্গাকে। দিনে দু’বার এ ভাবে পুজো দিতে আসছেন তাঁরা, একবার সূর্যোদয়ের সময় ও একবার সূর্যাস্তের সময়। গ্রামের প্রধান ভারতীয় দেবীও এই পুজোয় সামিল হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা কুসংস্কার নয়, ভগবানের ওপর বিশ্বাস। ভগবান ঠিকই কোনও আশ্চর্য ক্ষমতাবলে সব ঠিক করবেন।’ তবে একইসঙ্গে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কথাও বলেছেন তিনি।
গ্রামবাসীদের বিশ্বাস এইভাবেই আগেও মহামারীকে জয় করেছেন তাঁরা, তাই এবারও পারবেন। তাই তাঁরা মাস্ক না পরেই পুজোয় যোগ দিচ্ছেন। তাঁদের কথায়, ‘বিজ্ঞান সবসময় সবার ওপরে। তবে আমাদের বিশ্বাস ভগবান ও প্রাকৃতিক শক্তি আমাদের বাঁচিয়ে দেবে।’
এর আগে একই ছবি দেখা গিয়েছে গুজরাটে। সেখানকার মানুষ সপ্তাহে একবার গোশালায় গিয়ে সারা শরীর ঢেকে ফেলছেন গোবরের প্রলেপে। আর তাতেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি তৈরি হবে বলে বিশ্বাস তাঁদের।সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়শনের চিকিৎসক জেএ জয়ালাল সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘গোবর ও গোমূত্র করোনার বিরুদ্ধে লড়াইতে সাহায্য করে এমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এটা নিছকই বিশ্বাস।’ তিনি আরও বলেন, ‘পশুর শরীর থেকে মানুষের শরীরে অন্যান্য রোগ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে এ ক্ষেত্রে।’ এছাড়া এক জায়গায় বহু মানুষের জমায়েতের ফলে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।