বাংলার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বড় বদল, বিহার থেকে শিক্ষা নিয়েই এই পদক্ষেপ
কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হলেই ভোটারদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার আবেদনপত্র। একইসঙ্গে নতুন নিয়মে নির্দিষ্ট কেন্দ্রের প্রার্থীদের হাতেও পোস্টাল ব্যালটে ভোটদাতাদের তালিকা তুলে দেবে রিটার্নিং অফিসার।
নয়া দিল্লি: আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরল সহ মোট পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে পোস্টাল ব্যালট (postal ballot) পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার নিয়মে পরিবর্তন আনল জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)। নির্বাচনমুখী পাঁচ রাজ্যে ৮০ বছরের বেশি বয়সী, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এবং করোনা আক্রান্ত বা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ, তাঁরা বাড়িতে বসেই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন, এমন ব্যবস্থাই করছে কমিশন।
গতবছর বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে চেয়ে আবেদনকারীদের ভুয়ো ঘোষণাপত্র জমা পড়ার কারণে বদলানো হয়েছে নিয়ম। কারা বাড়িতে বসে ভোট দেবেন, তার একটি তালিকা তৈরি করে কমিশনে ও নির্বাচনের প্রার্থীদের কাছে জমা দেবেন রিটার্নিং অফিসার। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই পাঁচ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের চিঠি দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষো জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অসম, কেরল ও পুদুচেরির বিধানসভা নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হলেও নিয়মে কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডে যেমন ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এবং করোনা সংক্রমণের কারণে করোনারোগীদেরও বাড়ি থেকে বসেই ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, আগামিদিনে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থা নিয়ে বিতর্কিত রায়, পুষ্প গনেড়িওয়ালার মেয়াদ কমল এক বছর
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৮০ উর্ধ্ব, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভোটাররা বাড়িতে বসেই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। টিকাকরণ শুরু হলেও এখনও দেশে খোঁজ মিলছে করোনা রোগীর। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই করোনা আক্রান্ত বা যারা আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন, তাঁরাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।
করোনাকালেই বিহার নির্বাচনে এই নিয়ম চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় নিয়মের ফাঁক খুঁজে কোনও শংসাপত্র না দেখিয়েই অনেকে বাড়িতে বসে ভোট দিয়েছিলেন। ভুয়ো ঘোষণাপত্রও দেখানো হয়েছিল। গত নির্বাচন থেকে এই শিক্ষা নিয়েই এবার স্থির করা হয়েছে, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি, যাঁরা বাড়ি থেকে ভোট দিতে চান, তাঁদের সরকারি নিয়ম অনুসারে শংসাপত্র জমা দিতে হবে। শংসাপত্র না দেখাতে পারলে ভোট দিতে পারবেন না ওইসব ভোটাররা।
কমিশনের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হলেই ভোটারদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার আবেদনপত্র। একইসঙ্গে নতুন নিয়মে নির্দিষ্ট কেন্দ্রের প্রার্থীদের হাতেও পোস্টাল ব্যালটে ভোটদাতাদের তালিকা তুলে দেবে রিটার্নিং অফিসার। উল্লেখ্য, আগে কেবল নির্বাচন কমিশনের কাছেই পোস্টাল ব্যালটে ভোটদাতাদের তালিকা থাকত। এ বার থেকে নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলির প্রার্থীদের কাছেও থাকবে বিশেষ ভোটারদের তালিকা। ইতিমধ্যেই এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে পাঁচটি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদেরও চিঠি দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
রাজ্যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট গ্রহণ কীভাবে হবে, কোন পদ্ধতিই বা অনুসরণ করা হবে, সেই বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সরকারি আধিকারিকরা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, এমনটাই জানা গিয়েছে সরকারি সূত্রে।
আরও পড়ুন: যত্রতত্র, যখন তখন প্রতিবাদের অধিকার ফলানো যায় না: সুপ্রিম কোর্ট