Magnetic Bombs: প্রাণঘাতী এবং সস্তা, ভারতের নতুন মাথাব্যথা ‘স্টিকি বম্ব’! জেনে নিন বিস্তারিত

Magnetic Bombs or Sticky Bomb: অমরনাথ যাত্রা শুরুর মুখে ভারতের চিন্তা বাড়াচ্ছে ম্যাগনেটিক বোমা বা স্টিকি বম্ব। কেন জঙ্গি ও অপরাধীদের এত পছন্দের এই বোমা? জেনে নিন।

Magnetic Bombs: প্রাণঘাতী এবং সস্তা, ভারতের নতুন মাথাব্যথা 'স্টিকি বম্ব'! জেনে নিন বিস্তারিত
এই পাক ড্রোনটিকে গুলি করে নামিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 29, 2022 | 7:13 PM

শ্রীনগর: রবিবারই, জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলায় আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে, সাতটি ম্যাগনেটিক বোমা এবং সাতটি আন্ডার ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার গ্রেনেড বা ইউবিজিএল গ্রেনেড-সহ একটি পাকিস্তানি ড্রোনকে গুলি করে নামিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। অমরনাথ যাত্রা শুরুর মুখে এই ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে বাহিনীর। বিশেষ করে সেনা কর্তাদের চিন্তা বাড়িয়েছে ম্যাগনেটিক বোমা, যা স্টিকি বম্ব নামেই বেশি পরিচিত। এই বোমাই ভারতের সামনে নয়া হুমকি বলে মনে করছেন নিরাপত্তা কর্তারা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে নিরাপত্তা কর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘আইইডি হামলার হুমকি বরাবরই ছিল। তবে, ‘স্টিকি বম্ব’, যা কোনও গাড়ির গায়ে সংযুক্ত করা যেতে পারে এইবার এটাই নতুন হুমকি’। কী এই ম্যাগনেটিক বোমা বা স্টিকি বোমা? আসুন জেনে নেওয়া যাক –

জম্মু ও কাশ্মীরের এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, এই বোমাগুলির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক ভরা থাকে একটি ছোট পাত্রে। তার নীচে, কয়েনের আকারের একটি চুম্বক লাগানো থাকে। ওই চুম্বকের কারণেই এই বোমা যে কোনও ধাতব পৃষ্ঠে (গাড়ি বা বাসের গায়ে) সহজেই লাগিয়ে দেওয়া যায়। রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে কিংবা টাইমার ব্যবহার করে বোমাগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটানো যায়। স্টিকি বম্বে যে টাইমার ব্যবহার করা হয়, সেটি চালু করার প্রায় ৫-১০ মিনিট সময় পর বিস্ফোরণ ঘটে। তাই, বোমাটি কোনও পৃষ্ঠে লাগিয়ে টাইমার চালু করার পর, আক্রমণকারীরা পালানোর জন্য যথেষ্ট সময় পায়।

ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই সুবিধার পাশাপাশি স্টিকি বোমা অত্যন্ত সস্তাও। যে কোনও মেকানিকের ওয়ার্কশপেই তৈরি করা যায়। সব মিলিয়ে খরচ পড়ে মাত্র ২৫ মার্কিন ডলার। পাশাপাশি এই বোমাগুলি বহন করাও সহজ। এই কারণে, গত কয়েক বছরে বোমাটি জঙ্গি এবং অপরাধীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এমনকী, গত বছর আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধের সময়ও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল এই বোমা। কাবুলের জনাকীর্ণ রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনে এই বোমা আটকে দিয়ে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। ২০২০-র ডিসেম্বরে, একটি ম্যাগনেটিক বোমা হামলাতেই মৃত্যু হয়েছিল কাবুলের ডেপুটি গভর্নরের। একের পর এক স্টিকি বোমা হামলা চাপ বাড়িয়েছিল মার্কিন বাহিনীর উপর।

পাকিস্তান থেকে ড্রোন মারফৎ উড়ে এসেছে এই স্টিকি বোমাগুলি (ছবি সৌজন্য – এএনআই)

ভারতেও, গত কয়েক বছরে এই বোমার ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। চলতি বছরের এপ্রিলেই, জম্মুর উপকণ্ঠে সিধরা বাইপাসে একটি স্টিকি বোমা উদ্ধার করা হয়েছিল। ২০২১ সালের অগস্টে, স্বাধীনতা দিবসের আগে, জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। তার কাছ থেকে আইইডি-যুক্ত চারটি স্টিকি বোমা উদ্ধার করা হয়েছিল। ভারতে স্টিকি বোমা অবশ্য প্রথম পাওয়া গিয়েছিল এক দশক আগে। ২০১২ সালে, সাম্বা সেক্টরে প্রথম এই বোমা উদ্ধার করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল স্টিকি বোমা ব্যবহার করেই। নয়া দিল্লির উচ্চ-সুরক্ষিত এলাকায় ঘটা ওই হামলার ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল।

জম্মু ও কাশ্মীরে মোতায়েন পুলিশ ও সেনা কর্মীরা জানিয়েছেন, ইদানিং অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ট্র্যাফিক সিগন্যালে বা অন্য কোনো কারণে দাঁড়ানো গাড়িতে সন্ত্রাসবাদীরা এই বোমা আটকে দিচ্ছে। চলতি বছরে কাটরায় যে বাসে হামলা হয়েছিল, সেই ক্ষেত্রে বাসের জ্বালানি ট্যাঙ্কে লাগানো হয়েছিল স্টিকি বোমাটি। বর্তমানে এই নতুন ধরনের বোমার মোকাবিলা করার জন্য, নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে মহড়া চালানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, উপত্যকার বাস ও অন্যান্য যানবাহনের চালকদেরও, এই ধরনের বোমার উপস্থিতি সনাক্ত করার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।