যোগী সরকারের অধ্যাদেশে রাজ্যপালের সই, উত্তর প্রদেশে লাগু হয়ে গেল ‘লভ জেহাদ’ আইন
এদিন উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল (Anandiben Patel) যোগী সরকারের অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন।
TV9 বাংলা ডিজিটাল: শনিবার থেকে উত্তর প্রদেশে লাগু হয়ে গেল ‘লভ জেহাদ’ (Love Jihad) আইন। এদিন উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল (Anandiben Patel) যোগী সরকারের অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। ফলে এখন থেকে যোগী রাজ্যে ‘লভ জেহাদ’ আইনত (Love Jihad Law In Uttar Pradesh) অপরাধ।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) বিধানসভা উপনির্বাচন চলাকালীন ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যে ‘লভ জেহাদ’ আইন লাগু হবে। এই নয়া আইনে কেবল ‘ধর্ম পরিবর্তনের জন্য করা বিয়ে’কে বাতিল ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে।
যোগী সরকারের দাবি, মহিলাদের সুরক্ষা দিতেই এই নিয়ম লাগু করা হচ্ছে রাজ্যে। ইতিমধ্যেই মধ্য প্রদেশ, হরিয়ানা-সহ একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্য এই আইন আনার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এই আইন অনুযায়ী, নিজের ধর্ম গোপনে রেখে বিয়ে করলে ১০ বছর পর্যন্ত জেল সাজা হতে পারে সেই ব্যক্তির।
রাজ্যপালের স্বাক্ষরে এই অধ্যাদেশ আইনের পূর্ণতা পেলেও তা বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠতে পারছে না। কেননা, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ‘লভ জেহাদ’ বলে কিছুই নেই। এমনকী গত সপ্তাহেও এই সংক্রান্ত একটি মামলা এলাহাবাদ হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায়। মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি পর্যবেক্ষণে জানান, ‘ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ দু’জন মানুষের পছন্দের স্বাধীনতা খর্ব করে।’
লভ জেহাদের বিরুদ্ধে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির যখন এই আইন আনছে, বিরোধীরা তখন এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করে দেশে বিভাজন তৈরির জন্যই বিজেপি লভ জেহাদ নামক শব্দের আমদানি করেছে। বিয়ে সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। এবং কোনও আইন এনে সেই স্বাধীনতা খর্ব করা পুরোপুরি অসাংবিধানিক। কোনও আদালতে এই আইন ধোপে টিকবে না।’
একই সুরে কথা বলেছেন ছত্তীসগঢ়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা টিএস সিং দেও। ‘লভ জেহাদ আসলে মিডিয়া প্রপাগান্ডার মাধ্যমে বিজেপি দ্বারা তৈরি করা একটি সম্পূর্ণ ধর্মান্ধদের শব্দ’, বলেন তিনি। একই বিষয়ে কেরলের সিপিএম শাখার সম্পাদক বিজয়রাঘবনের মত, ‘সমাজ ও সাংবিধান; বিয়ের ক্ষেত্রে দু’টোই প্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দকে সম্মতি দিয়ে এসেছে। কিন্তু ভারতের সেই একতাকে ভাঙতে যা যা করা যায় ওরা (বিজেপি) করছে।’
পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ব্যাখ্যা, ‘ভালবাসা ব্যক্তিগত বিষয়। জেহাদ শব্দটি এর সঙ্গে যায় না।’ তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের দাবি, ভোট এলেই ‘লভ জিহাদ’ শব্দটা ঘুরে ফিরে আসে। অথচ দুটো শব্দের সম্পূর্ণ বিপরীত অর্থ। কিছুতেই পাশাপাশি বসতে পারে না এই শব্দ দুটো।