হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে বছর ৬৯-এর মহিলা
ক্রবার সকাল থেকেই প্ল্যাকার্ড হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কালিঘাটের বাড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন সুশীলা।
কলকাতা: হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখ্যমন্ত্রীর কালিঘাটের (Kalighat) বাড়ির সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে বয়স্ক মহিলা। জমির সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রীর শরণাপন্ন হতে ২৮ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা এসেছেন ৬৯ বছর বয়সী শালুগাড়ার বাসিন্দা সুশীলা রায়। অনেক চেষ্টা করেও মুখ্যমন্ত্রীর দেখা পাননি। তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্ল্যাকার্ড হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কালিঘাটের বাড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন সুশীলা।
জমি মাফিয়াদের হাত থেকে দখল হওয়া জমি, বসতবাড়ি ফিরে পেতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ তিনি। নিজের অসহায় পরিস্থিতির কথা জানানোর জন্য একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চান। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১০৬ কাঠা জমি আছে তাঁর। সেখানেই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেন সুশীলা। এই জমি দখল নিয়ে দীর্ঘদিনের গন্ডগোল।
অভিযোগ স্থানীয় জমি মাফিয়া সুরেশ আগরওয়াল জোর করে জমি দখলের চেষ্টা করছে। ২০১৪ সাল থেকেই এই সমস্যা চলছে। তাঁর দাবি, জমি মাফিয়াদের কাজে লাগিয়ে জলের দরে ওই জমি তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া চেষ্টা হচ্ছে। বাধা দেওয়ায় নানাভাবে হুমকি , ভয় দেখানো এমনকি মারধর করা হয়। পুলিস প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। উল্টে পুলিস তাঁকে বেশ কয়েকবার থানায় নিয়ে যায়, পরে জামিনে ছাড়া পান তিনি। জমি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের কোনও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ তাঁর।
মাঝে কিছু দিন পরিস্তিতি ঠিক থাকলেও ডিসেম্বর মাস থেকে আবারও নতুন করে অত্যাচার শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ সুশীলার। এদিন তিনি জানান, ২৪ ডিসেম্বর আচমকাই পুলিস আসে তাঁর বাড়িতে। জানানো হয়, করপোরেশনের তরফে জমি পরিমাপ করা হবে। কিন্তু কেন এই জমি পরিমাপ এবিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না বলে অভিযোগ সুশীলার।
পরে বাধা দেওয়ায় করপোরেশনের লোকেরা চলে যায়। কিন্তু এরপর পুলিসের সামনেই ভেঙে ফেলা হয় তাঁর বাড়ির গেটের তালা। এই বিষয়ে ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগ না নিয়ে তাঁকে দিনভর বসিয়ে রাখা হয়। বিষয়টি নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন সুশীলা।
আরও পড়ুন: ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতুল মর্যাদায় শুভেন্দু, হচ্ছেন জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান
এরপর ওই দিন রাত ৮ টা নাগাদ থানা থেকে বেরিয়ে কমিশনারের কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান সুশীলা। কিন্তু প্রশাসনের তরফে কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি। এই ঘটনায় জমি মাফিয়াদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে শিলিগুড়ির পুলিস কমিশনার, এমনও অভিযোগ সুশীলার। মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে শালুগাড়ার এই মহিলা। তাই অবশেষে সুবিচারের আশায় মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।