মূত্রদ্বার থেকে বেরোচ্ছে রক্ত, SSKM হাসপাতালে ১৬ দিন খোলা আকাশের নীচে শুয়ে ৭০ উর্ধ্ব বৃদ্ধ
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অব্যবস্থার এই ছবি ধরা পড়েছে শহরের নামজাদা সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম-এ।
কলকাতা: মূত্রদ্বার থেকে বের হচ্ছে রক্ত। টিউমার জমেছে মূত্রথলিতে। এহেন সঙ্কটজনক অবস্থার মধ্যেও হাসপাতালে খোলা আকাশের নীচে ১৬ দিন ধরে পড়ে বৃদ্ধ। ভর্তি করতে গেলে শুনতে হল, ফ্রি-তে চিকিৎসা পাওয়া বেড এত সহজে পাওয়া যাবে না। এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অব্যবস্থার এই ছবি ধরা পড়েছে শহরের নামজাদা সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম-এ।
কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা মানিক মণ্ডলের ৭০ উর্ধ্ব বয়স। পরিবার সূত্রে খবর, গত ৫ জুন মানিক মণ্ডলকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসেন। মেডিসিন বিভাগে দেখানো হলে চিকিৎসকেরা দেখে বলেন, রোগীকে ইউরোলজির কাছে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও লিখে দেন যে রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু ইউরোলজির ৭ নম্বর ঘরে নিয়ে গেলে বহির্বিভাগের চিকিৎসকেরা মানিকবাবুকে দেখে বলেন, বিনামূল্যে চিকিৎসার বেড শয্যা এত সহজে পাওয়া যাবে না। এমনটাই অভিযোগ অসুস্থ মানিকবাবুর স্ত্রী ছায়া মণ্ডল ও ছেলে বাপি মণ্ডলের।
এখানেই শেষ নয়। যে কাগজে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরা লিছে দিয়েছিলেন যে রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে ভর্তি নিতে হবে, সেই কাগজগুলিও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য রোগীকে ভর্তি করতে হলে এ ভাবেই লাইন দিয়ে থাকতে হবে। এমনটাই দাবি ছেলে বাপি মণ্ডলের। এমনকী, হাসপাতাল সুপারকে অভিযোগ জানানোর পর তিনি লিখে দিলে তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলে দাবি রোগীর পরিজনদের।
আরও পড়ুন: এক্সক্লুসিভ: জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার ভাবনা কেন্দ্রের, দাবি সূত্রের
করোনাকালে বিধিনিষেধ থাকায় এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধকে বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। অগত্যা গত ১৬ দিন ধরে তাঁকে একটি স্ট্রেচারে শুইয়ে রাখা হয়েছে জরুরি বিভাগের বাইরে। রোদ-বৃষ্টির মধ্যে একই ভাবে দিনের পর দিন শুয়েই কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, তিনি হাঁটাচলাও করতে পারেন না। কিন্তু বারংবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আর্তি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। নিরুপায় অবস্থায় একটার পর একটা দিন কাটছে।
আরও পড়ুন: বাকিদের শো-কজ, ‘বেসুরো’ রাজীবকে সুরে ফেরানোর চেষ্টায় দিলীপ
এই নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান দিলীপ পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিনামূল্যে চিকিৎসা নিয়ে কোনও চিকিৎসকের কটাক্ষ করার কথা নয়। তবুও কোনও রোগী যখন অভিযোগ করেছেন, তখন নিশ্চিতভাবে কিছু একটা ঘটেছে। ঠিক কী ঘটেছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।”