Telugu Deepak acquitted: দেশদ্রোহিতার মামলায় নিম্ন আদালতে বেকসুর খালাস তেলুগু দীপক

Telugu Deepak: তেলুগু দীপকের আইনজীবী শুভাশিস রায় স্বাভাবিকভাবেই প্রায় এক দশকের আইনি লড়াইয়ের পর বেশ খুশি। জানিয়েছেন, 'পুলিশ প্রশাসনের অনৈতিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে সত্যকে স্থাপন করতে পেরেছি।'

Telugu Deepak acquitted: দেশদ্রোহিতার মামলায় নিম্ন আদালতে বেকসুর খালাস তেলুগু দীপক
বেকসুর খালাস তেলুগু দীপক (ফাইল চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 24, 2021 | 4:30 PM

কলকাতা : বেকসুর খালাস মাওবাদী মেতা তেলুগু দীপক। আজ আলিপুর ফাস্ট ট্র্যাক আদালত তাকে নির্দোষ বলে রায় দিয়েছে। দেশদ্রোহিতা থেকে শুরু করে একাধিক অভিযোগে নাম জড়িয়েছিল তেলুগু দীপকের। ২০১০ সালে তাকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। নন্দীগ্রামে মাওবাদী কার্যকলাপ, নাশকতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ ছিল। আজ সেই সব অভিযোগ থেকে তাকে মুক্তি দেয় আলিপুর আদালত।

এর আগে ১০ সেপ্টেম্বর দেশদ্রোহিতা মামলায় রায় দেওয়ার দিন ধার্য হয়েছিল আলিপুর আদালতে। তবে বিচারক অসুস্থ হওয়ায় রায় ঘোষণার দিন পিছিয়ে যায়।

নিম্ন আদালতের পর্যবেক্ষণ, সিআইডি তেলুগু দীপকের বিরুদ্ধে নাশকতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার যে অভিযোগগুলি এনেছে, সেগুলির জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ দিতে পারেননি গোয়েন্দারা। প্রায় ১১ বছর পর নিম্ন আদালতে বেকসুর খালাস শীর্ষ মাও নেতা তেলুগু দীপক।

মাওবাদী নেতা তেলুগু দীপকের বিরুদ্ধে মূলত দেশদ্রোহিতার মামলা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। আজ সেই সংক্রান্ত মামলায় রায় দিল আলিপুর আদালতে। এক সময় মাওবাদী নেতা কিষেণজীকে একে ৪৭’র মতো আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয় সেই সময়। এই তেলুগু দীপকের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ ছিল। ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস (EFR)-এর ২৪ জন জওয়ানকে হত্যার পরিকল্পনা, সাঁকরাইল থানার ওসিকে অপহরণ-সহ একাধিক ষড়যন্ত্রের মামলা রয়েছে তেলুগু দীপকের বিরুদ্ধে।

২০১০ সালের মার্চ মাসে বিষ্ণুপুর থেকে পাকড়াও হন কিষেণজি-ঘনিষ্ঠ এই নেতা। একে৪৭ (AK47) রাইফেল-সহ তাঁকে পাকড়াও করে সিআইডি। ২৪ জন ইএফআর (EFR) জওয়ানের হত্যা, সাঁকরাইল থানার ওসিকে অপহরণ-সহ একাধিক ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল তেলুগু দীপকের বিরুদ্ধে। মামলা ছিল ইউএপিএ (UAPA) ধারাতেও।

এদিকে তেলুগু দীপকের আইনজীবী শুভাশিস রায় স্বাভাবিকভাবেই প্রায় এক দশকের আইনি লড়াইয়ের পর বেশ খুশি। জানিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসনের অনৈতিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে সত্যকে স্থাপন করতে পেরেছি।

এক সময় ত্রাসের সমার্থক ছিল এই তেলুগু দীপক নামটি। ২০১০ সালে তাঁকে গ্রেফতারি সেই সময় সিআইডির কাছে বড়সড় সাফল্য ছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে এই তেলুগু দীপক কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজীকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিমবাংলায় যে ভাবে কার্যকলাপ বাড়াচ্ছিল মাওবাদীদের, তা অত্যন্ত মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল সেই সময়ের রাজ্য সরকারের। সেই জায়গা থেকে তাঁর গ্রেফতারি, দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলা এবং অবশেষে রায়দানের সময় চূড়ান্ত হওয়া নিঃসন্দেহে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

কে এই তেলুগু দীপক

তেলুগু দীপক ওরফে ভেঙ্কটেশ্বর রেড্ডি ছিলেন এক সময় কিষেণজির ছায়াসঙ্গী। ১৯৮৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন এক সময়ের এই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাওবাদী নেতা। ১৯৮৯ যোগ দেন পিপলস ওয়ার গ্রুপে। ১৯৯৫ কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজির সঙ্গে বাংলায় আসেন। তৈরি করেন মজদুর কিসান সংগ্রাম সমিতি নামে একটি শ্রমিক সংগঠন। সোদপুর-পানিহাটি এলাকায় ডেরা বাঁধেন ভেঙ্কটেশ্বর ওরফে তেলুগু দীপক।

প্রথমেই তাঁর নজরে ছিল শ্রমিক শ্রেণির মানুষজন। সে কারণেই সোদপুর-পানিহাটির মতো কলকারখানার রমরমা রয়েছে এমন এলাকায় ঘাঁটি তৈরি করেন। চটকল মজদুরদের নিয়ে শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন তিনি। ১৯৯৯ সালে পিডব্লিউজি-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য হন তিনি। ২০০০ সালে রাজ্য মিলিটারি কমিশনের সদস্য হন। সে বছরই কিষেণজির নির্দেশে জঙ্গলমহলে শুরু করেন মাওবাদী সংগঠনের কাজ। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে যান সংগঠন তৈরি করতে।

তবে বেকসুর খালাস হলেও এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না তেলুগু দীপক। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা এবং নাশকতার অভিযোগ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। বাকি অভিযোগগুলি এখনও বিচারাধীন। তবে আইনজীবী মহলের অনুমান, মূল অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যাওয়ার কারণে অন্য অভিযোগ থেকেও দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন এই শীর্ষ মাও নেতা।

আরও পড়ুন : Jitendra Gogi: ছাত্র রাজনীতিতে নাম লিখিয়েই বদলে গেল স্কুলের টপার, কীভাবে দিল্লি-হরিয়ানার ত্রাস হয়ে উঠল গোগি?