Anatomy: বাংলায় লাশেও ‘দুর্নীতির-দুর্গন্ধ’! বছরে লাগবে ২০টি মানব দেহ, উঠছে প্রশ্ন
Anatomy: স্বাস্থ্য ভবনের অক্টোবরের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য ২০টি দেহ দিতে হবে। প্রশ্ন সেখানেও। কারণ এখন তো ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ চলছে। বিগত শিক্ষাবর্ষের জন্য এই শিক্ষাবর্ষে কেন দেহ চাওয়া হয়েছে?
কলকাতা: মণিপুরের একটি মেডিক্যাল কলেজে ২০ টি দানের দেহ পাঠানোর নির্দেশ। এসএসকেএম, এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। কিন্তু সেই নির্দেশ পড়ে সন্ধিহান অ্যানাটমি বিভাগের চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে একটি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বর্ষের চিকিৎসক পড়ুয়াদের শেখানোর জন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে ৬টি দেহই যথেষ্ট। আর সেখানেই একটি মেডিক্যাল কলেজকেই ২০টি দেহ দেওয়ার নির্দেশ কেন? এই নির্দেশ ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য ভবনের অক্টোবরের ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য ২০টি দেহ দিতে হবে। প্রশ্ন সেখানেও। কারণ এখন তো ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ চলছে। বিগত শিক্ষাবর্ষের জন্য এই শিক্ষাবর্ষে কেন দেহ চাওয়া হয়েছে? দেহ দেওয়ার আবেদনও বা কেন মঞ্জুর করা হল?
বাংলায় এমনিতেই মৃত্যুর পর দেহদানের একটি নিয়ম রয়েছে। অনেকেই দেহ দান করে যান। তাই এই রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে অ্যানাটমি বিভাগের জন্য দেহ পেতে অসুবিধা হয় না। ভিন রাজ্যের মেডিক্যালকলেজগুলি সেই সমস্যায় পড়ে। আর সে কারণে তারা বাংলার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য দফতর দেহ পাঠিয়েও থাকে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন, কেন একটি মাত্র মেডিক্যাল কলেজের জন্য একটি শিক্ষাবর্ষেই ২০টি দেহ চাওয়া হয়েছে? অ্যানাটমি বিভাগের চিকিৎসকদেরই বক্তব্য, একটি শিক্ষাবর্ষে ৬-১০টির বেশি দেহের প্রয়োজন পড়ে না।
তাও আবার অতীত হয়ে যাওয়া শিক্ষাবর্ষের জন্য দেহ চাওয়া হয়েছে? এর প্রাসঙ্গিকতা কোথায়? প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা অ্যানাটমি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। এ প্রসঙ্গে NRS এর অ্যানাটিম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সুদেষ্ণা মজুমদার বলেন, “অন্ততপক্ষে ৬টা দেহের প্রয়োজন। তারপর স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের জন্য বডি রেডি করতে হয়। সেটাও সব মিলিয়ে ৮-১০টা। ২০ হলে সেটা মিস ইউজ় হবে। কারোর হাতটা শক্ত হয়ে গেল। দেহ পাঠানোর ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী কেউ থাকেন না।”
এক্ষেত্রে কিন্তু মধ্যস্থতাকারী হিসাবে এক জনের নাম উঠে আসছে। তাঁর নাম বিদ্যুৎ দাস। তিনি উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলির প্রতিনিধি হিসাবে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আসেন। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, প্রতি বছর ২০-৩০টা দেহ তিনি সংগ্রহ করেন। কিন্তু কেন এত সংখ্যক দেহ? এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য, এই বিষয়টি তাদেরও নজরে এসেছে। বিদ্যুৎ দাসের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ দাস একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। কিন্তু কেন তিনি উত্তর পূর্ব ভারতের সব কলেজগুলির জন্য মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন? প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।
অ্যানাটিম সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য সভাপতি অভিজিৎ ভক্ত বলেন, ‘আড়াইশো ছাত্রছাত্রীকে পড়ানোর জন্য একটা শিক্ষাবর্ষে ৬টা দেহ যথেষ্ট। ২০টা কেন? এখানে তো কোনও ব্যক্তির কোনও ভূমিকা নেওয়ারই কথা নয়। ওঁকে কি কোনও অথরাইজেশন দেওয়া হয়েছে? ‘ প্রশ্ন তুললেন তিনিও।