Anubrata Mondal: ‘দিদি যা করেছে আমার জন্য, অনেক করেছে’, আদালতে পেশের আগে বললেন অনুব্রত
Anubrata Mondal: আজ তাঁকে আসানসোল সিবিআই আদালতে পেশ করা হবে।
কলকাতা: আজ, বুধবার ফের আদালতে পেশ করা হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। সকাল ৭টা ৪০ মিনিট নাগাদ নিজাম প্যালেস থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ তাঁকে আসানসোল সিবিআই আদালতে পেশ করা হবে। নিজাম প্যালেস থেকে যখন অনুব্রত মণ্ডলকে বার করা হয়, দৃশ্যত তাঁকে কিছুটা সুস্থই দেখাচ্ছিল। তবে একটি বিষয় উল্লেখ্য, গ্রেফতারির পর এযাবৎ অনুব্রত মণ্ডল যতবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন, ততবার তাঁকে কয়েকটি শব্দবন্ধ ব্যবহার করেই উত্তর দিতে দেখা গিয়েছে। তবে এদিন তাঁকে কিছুটা হলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। তাঁকে যখন নিজাম প্যালেস থেকে বার করে গাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সাংবাদিকদের তরফে প্রশ্ন করা হয়, ‘অনুব্রতবাবু বিরোধীরা বলছেন আপনাকে তদন্তের স্বার্থে বাইরের রাজ্যে নিয়ে যাবে সিবিআই…’ এই প্রশ্নের উত্তর কিছুটা স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই দিতে দেখা যায় অনুব্রতকে, যার আক্ষরিক অর্থ, ‘বাইরে রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম আছে নাকি? বললেই হয়ে গেল…’
এরপর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই কর্তব্যরত উর্দিধারীর কাঁধে হাত রেখে কিছুটা এগিয়ে যান তিনি। ফের সাংবাদিকদের তরফে প্রশ্ন, এবার নেত্রী তথা দলকে নিয়ে। অনুব্রতর স্পষ্ট উত্তর, ‘দিদি যা করেছে আমার জন্য, অনেক করেছে।’ কথা শেষের মাঝেই গাড়িতে উঠে পড়েন অনুব্রত। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, কেষ্টর পাশে যে নেত্রী রয়েছেন, তা তাঁর গ্রেফতারির কয়েকদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হয়েছে। প্রকাশ্যেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুব্রতর পাশে থাকার বার্তা দিতে দেখা গিয়েছে। নেত্রী প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘‘কেষ্টরা ভয় পাবে না। একটা কেষ্টকে ধরলে লক্ষ কেষ্ট রাস্তায় তৈরি হবে, এটা বিজেপি জেনে রেখো। কেষ্টরা এজেন্সির ভয় পাবে না।’’ দলও তাঁর বিরুদ্ধে সে অর্থে কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু উল্লেখ্য, নেত্রী যখন অনুব্রতর পাশে ছিলেন, তখন সিবিআই তদন্তে বেরিয়ে আসেনি, তাঁর মেয়ের চাকরিতে অনিয়মের অভিযোগ, তাঁর নামে-বেনামে এত সম্পত্তির হদিশও মেলেনি। কিন্তু তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসছে। দলের একজন সাধারণ জেলা সভাপতি থেকে কীভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক, সে উত্তর খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছেন দুঁদে তদন্তকারীরাও। এরপর অবশ্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সেভাবে এই নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। তবে দলনেত্রী যে তাঁর জন্য অনেক করেছেন, সেকথা এদিন সাংবাদিকদের সামনে মন খুলে বললেন অনুব্রত। বিরোধীদের তরফ থেকে এহেন অভিযোগ আগেও উঠেছিল। বাম-কংগ্রেস কিংবা বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য একই ছিল, নেত্রীর প্রশ্রয়েই নাকি অনুব্রতর এত বাড়বাড়ন্ত।
গাড়িতে বসেও এদিন অনুব্রতকে বেশ কিছু সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
দাদা শরীর কেমন আছে? অনুব্রত: ভাল
দাদা খাওয়া দাওয়া ঠিকঠাক হচ্ছে? অনুব্রত: হ্যাঁ
দাদা শরীরে সমস্যা হচ্ছে না তো? অনুব্রত: সমস্যা আবার না থাকে নাকি, এতগুলো ওষুধ খাই
উঠে আসে বিচারপচিকে হুমকি চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গ। অনুব্রত স্পষ্ট বলেন, “আমি জজ সাহেবকে অনুরোধ করব, যারা হুমকি চিঠি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক।” প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই সিবিআই আদালতের বিচারকের কাছে পৌঁছয় হুমকি চিঠি। জামিন না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে সেই চিঠিতে হুমকি দেওয়া হয়। কারা চিঠি দিলেন, তা নিয়েই শুরু হয় চর্চা। তারই সিবিআই তদন্ত চাইলেন অনুব্রত।