Arjun Singh On Subrata Mukherjee: ‘আমার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু ছিলেন…’, শিষ্য অর্জুনকে বড় ‘ব্রেক থ্রু’ দিয়েছিলেন সুব্রতই
Arjun Singh On Subrata Mukherjee: "ওঁ খুব উদার মানষিকতার ছিলেন। আমি সুব্রতদার বাড়ি যাব। এখন আমার উল্টো রাজনৈতিক মেরুর হলেও সৌজন্যতা ভুলতেন না তিনি।"
কলকাতা: প্রতিপক্ষ। কিন্তু তিনিই তাঁর রাজনৈতিক গুরু। কীভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) সঙ্গে তাঁর পরিচয়, কীভাবে তিনি তাঁর গুরু হয়ে উঠেছিলেন, এই সব অনেক অজানা কথা আজ TV9 বাংলাকে জানালেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সম্পর্কে কথাগুলি বলার সময়ে অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অর্জুন। তিনি বলেন, “সুব্রত মুখোপাধ্যায় আমার রাজনৈতিক জীবনের শিক্ষাগুরু ছিলেন। বাবার হাত ধরেই তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয়। জীবনের প্রথম কাউন্সিলর টিকিট দলের মধ্যে বাধা থাকা সত্ত্বেও সুব্রত দা আমাকে দিয়েছিলেন।”
কথাগুলো বলার সময়ে কিছুটা গলা ধরে এল দাপুটে নেতার। তিনি বলেন, “ওঁ খুব উদার মানষিকতার ছিলেন। আমি সুব্রতদার বাড়ি যাব। এখন আমার উল্টো রাজনৈতিক মেরুর হলেও সৌজন্যতা ভুলতেন না তিনি।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের রসবোধের তারিফ করেছেন বাম-ডান সব পক্ষই। আজ তিনি নেই, কিন্তু বাম থেকে গেরুয়া শিবির-সব নেতার মুখেই তাঁর রসবোধ, সৌজন্যতার কথা উঠে আসছে। সকালেই দিলীপ ঘোষ বলেন, “সুব্রতবাবু এক প্রকার বাংলার রাজনীতির আইকন ছিলেন। তাঁর মৃত্যু হয়তো ৭৫ বছর বয়সে হয়েছে। তবু মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। ৫০-৬০ বছর ধরে রাজনীতি জীবনে অ্যাক্টিভ থেকেছেন। সামাজিক জীবনে সবার সঙ্গে তাঁর স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল। দল বা বয়স কোনও কিছু ওঁ ভাবতেন না। ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের অভিভাবক ছিলেন।”
কথাগুলি বলার ফাঁকে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন দিলীপ ঘোষ। পুরনো অনেক কথা উঠে আসে তাঁর মুখে। তিনি বলেন, “বিধান সভায় যাওয়ার পর ওঁর সামনা সামনি হয়েছি। ১৬ সাল থেকে তিন বছর ছিলাম। অনেকবার দেখা হয়েছে বিএ কমিটিতে বসে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া হত। এত বছর বয়সে ওঁ মিষ্টি খেতেন খুব। বিধান সভার মধ্যে বেঞ্চে বসে অনেক্ষণ আলোচনা হয়েছে। ওঁ যে ধরনের মজার মজার কথা বলতেন, সোজাসাপটা বলতেন, এটা যেমন আনন্দদায়ক ছিল, মজারও ছিল তেমনই শিক্ষারও ব্যাপার ছিল। নিঃসন্দেহে এরকম ব্যক্তি চলে যাওয়া রাজনীতিতে বড়ো একটা গ্যাপ তৈরি হল।”
সুব্রত মুখোপাধ্যায় নেই। কিন্তু তাঁর ৫০ বছরের দীর্ঘ পরিষদীয় রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে গিয়েছে অজস্র স্মৃতি। স্মৃতির সরণী বেয়ে আজ প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বই পিছিয়ে গিয়েছেন কয়েক বছর পিছনে। রবীন্দ্র সদনে শায়িত নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে নেতাদের নির্বাক দৃষ্টি যেন বলেছে অনেক কিছুই।
২৫ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার কথা ছিল আজ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হার্ট অ্যারিথমিয়া। মুহূর্তে সব শেষ। কিন্তু চিকিত্সকরা বলছেন, সন্ধ্যাতেও মেলেনি কোনও ইঙ্গিত। তিনি যে এই ভাবে চলে যাবেন! কালীপুজোতেই নিভল বর্ষীয়ান নেতার জীবন প্রদীপ।