Babul Supriyo: দিলীপের ভাষা ঠিক করতে ‘বর্ণপরিচয়’ দিতে চান, কিন্তু নিজে বলেন, ‘চামড়া তুলে নেব’
Babul Supriyo on Dilip Ghosh: কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের ইংরেজি শব্দচয়ন যেমন কঠিন তেমনি দিলীপ ঘোষের বাংলা শিক্ষা খারাপ বলে টিপ্পনী বাবুলের।
কলকাতা: দু’জনেই একই দলের সাংসদ ছিলেন। কিন্তু সম্পর্কটা কোনও সময়ই ভাল ছিল না বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) ও দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)। এবার বাবুল তৃণমূলে (TMC)। তাই রাখঢাক না রেখে শুরু করলেন আক্রমণ। বিজেপির রাজ্য সভাপতির ভাষাশিক্ষা বাড়াতে তাঁকে বর্ণপরিচয় উপহার দিতে চাইলেন তৃণমূলের বাবুল।
রবিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে তাঁর বিজেপি ত্যাগ নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা আক্রমণ শানান বাবুল সুপ্রিয়। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের ইংরেজি শব্দচয়ন যেমন কঠিন তেমনি দিলীপ ঘোষের বাংলা শিক্ষা খারাপ বলে টিপ্পনী বাবুলের। তার পরেই তাঁর মন্তব্য, “দিলীপবাবুকে বর্ণপরিচয় উপহার দেব। ওঁর বাংলা ভাষা শেখার দরকার আছে। ওঁকে বলব, বাংলা ভাষাকে কলঙ্কিত করবেন না।”
উল্লেখ্য, দলত্যাগী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘পলিটিক্যাল টুরিস্ট’ বলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি যুক্তি দেন, বাবুলের থাকা না থাকা লাভ-ক্ষতির বিষয়ই নয়। বাবুল পলিট্রিক্যাল ট্যুরিস্ট, আসবে যাবে। দলে থেকেও লাভ হয়নি, গিয়েও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। এই প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষকে বর্ণপরিচয় উপহার দিতে চাইলেন বাবুল সুপ্রিয়।
বিজেপিতে থাককালীন বাবুলের সঙ্গে দিলীপের একাধিকবার মতান্তর হয়েছে। দিলীপ ঘোষের একাধিক ইস্যুতে করা মন্তব্যে প্রকাশ্যেই সমালোচনা করেছেন বাবুল। ২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল গায়ক বাবুল সুপ্রিয়।২০১৫ সালে সংঘ পরিবার থেকে রাজনীতিতে আসেন দিলীপ ঘোষ। দু’ জনই সাংসদ। দীর্ঘদিন দু’জনই বিজেপির হয়ে লড়াই চালিয়েছেন। কিন্তু কোনওদিনই তাঁদের মধ্যে সখ্যতা ছিল না।
২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship Amendment Act) বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নামে গুণ্ডামি তথা সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বন্ধে গুলি করে মারা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই এ রাজ্যেও কড়া পদক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। প্রতিক্রিয়ায় বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “দিলীপদা যা বলেছেন তা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য।” এইভাবে দিলীপ ঘোষের নানা বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনা করা বাবুলকে নিয়েও অবশ্য কম বিতর্ক হয়নি। তাঁরও শব্দচয়ন, মন্তব্য নিয়ে একাধিকবার বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
যেমন, আসানসোলের একটি অনুষ্ঠানে দর্শক আসনে বসা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিকে পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বাবুল। তাঁর মন্তব্য ছিল, “জায়গা থেকে আরেকবার নড়লে পা ভেঙে দেব, ক্রাচ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।” প্রকাশ্যে দর্শকাসনে বসে থাকা শারীরিকভাবে বিশেষ সক্ষম ব্যক্তিকে করা বাবুলের এই আক্রমণে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি।
এখানেই শেষ নয়। আসানসোলে একটি গণ্ডগোলের সময়েও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জনতার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ‘চামড়া তুলে নেব’ বলে জনতাকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছিল বাবুলকে।
আবার একুশের ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির পাশে হিন্দিতে লেখা ‘আমি বাংলার মেয়ে’ ছবি পোস্ট করেও বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন বাবুল।সেই ছবিরহ পাশে লেখা ছিল “মেয়েরা পরের ধন। এবার বিদায় করে দেওয়া হবে।” অনেকেই মহিলাদের প্রতি বিজেপি সাংসদের মনোভাবের সমালোচনা করেন। এমনকী বিজেপি-র দুই নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও বাবুলের এমন মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। চাপের মুখে শেষমেশ অবশ্য পোস্টটি মুছে ফেলেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
আরও পড়ুন: Babul Supriyo: ‘প্রেম আর যুদ্ধে সব কিছুই ন্যায্য’, নেটিজেনদের উদ্দেশে বাবুলের ‘ডায়লগ’