Municipality Election: ১৯-এর পর ব্যালট ফেরানোর কথা বলেছিলেন, একুশের পর EVM-এই আস্থা মমতার!
Ballot Paper: ১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর ইভিএমের বদলে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণের মতো সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রদীপ্ত কান্তি ঘোষ, কলকাতা : ১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর ইভিএম (EVM) নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর দাবি ছিল, ইভিএমের মাধ্যমেই হচ্ছে ভোটের কারচুপি। এমনকি ইভিএম তুলে নিয়ে ভোট প্রক্রিয়ায় ব্যালট পেপার (Ballot Paper) ফিরিয়ে আনার জন্য সওয়ালও করেছিলেন তিনি। পুরসভা ভোটের দায়িত্ব যেহেতু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে, তাই পুরভোটে সেই ব্যালট পেপার ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু, সূত্রের খবর, সেই পুরভোটেও ইভিএম নিয়েই তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ইভিএম পরীক্ষার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে জেলাশাসকদের।
কলকাতা এবং হাওড়ায় আগামী ১৯ ডিসেম্বর পুরভোট করতে চেয়ে কমিশনের কাছে চিঠি দিয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। রাজ্য সরকারের তরফে এই চিঠি পাঠানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যৌথ সিদ্ধান্তে পুরভোট হয়। সূত্রের খব, সেই ভোটের প্রস্তুতি স্বরূপ ইভিএম পরীক্ষা করার জন্য ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে জেলাশাসকদের। আগামী শনিবার থেকেই ইভিএম পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই ভোটে এম-২ টাইপের ইভিএম ব্যবহার করা হবে। সাধারণত, নির্বাচন কমিশন এম-৩ টাইপের ইভিএম ব্যবহার করে আর রাজ্য নির্বাচন কমিশন ব্যবহার করে এম-২ টাইপের ইভিএম।
প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই মত নিয়ে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর তিনি দাবি জানিয়েছিলেন যাতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনা হয়। ইভিএমে কারচুপি করছে বিজেপি, এমন অভিযোগই করেছিলেন মমতা। এই ইস্য়ুতে বিরোধীদের একজোটও করেছিলেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, ৯৮ শতাংশ ইভিএম খতিয়ে দেখা হয় না। আমেরিকার উদাহরণ টেনে তিনি বলেছিলেন, বিশ্বের একাধিক দেশই ইভিএমে আস্থা রাখে না। তাই পুরভোট যেহেতু রাজ্যের হাতে, তাই সেই ভোট ব্যালট পেপারে হবে বলেই প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু সব ঠিক থাকলে পুরভোট ইভিএমে হবে বলেই জানা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে একধাক্কায় রাজ্যে অনেকগুলি আসন বেড়েছিল বিজেপির। ১৮ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি।
এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরাও। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘মমতার রাজনৈতিক ইতিহাসে বারবার তাঁকে মত পাল্টাতে দেখা গিয়েছে। নিজের সুবিধা অনুযায়ী মত পাল্টান তিনি।’ তাঁর কথায়, আজ ৭৫ শতাংশ ভোট ভোট পেয়েছে তৃণমূল, যা সুস্থ গণতন্ত্রে হওয়ার কথা নয়। তাঁর দাবি, এই ফলাফল দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে হয়েছে, ‘ইভিএমে রিগিং করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্য কমিশন আসলে থুঁটো জগন্নাথ, রাজ্য সরকারই সবটা পরিচালনা করে।’
অন্যদিকে, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি অবস্থা হল নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা।’ তৃণমূল নেতার কথায়, ‘বিধানসভা ভোটে কমিশন, বাহিনী সবই ওদের। কখনও ওরা বলছে বিএসএফ আমাদের। আর আজ যখন নির্বাচনে ভরাডুবি তখন তার থেকে নজর ঘোরানোর জন্য কথার জাগলারি আর কতদিন চলবে? বিজেপি জামানত জব্দ হয়েছে। সেটা সামলাতে না পেরেই এ সব অবান্তর কথা বলছে বিজেপি।’
ভবানীপুরের উপনির্বাচনের ফলাফলের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যের বাকি চার কেন্দ্রে উপনির্বাচন শেষ হলেই পুরভোট সম্পূর্ণ করে ফেলতে চায় রাজ্য সরকার। তার পর একই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিমও। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে শিগগিরই কলকাতার পুরভোট হবে বলে আভাস দেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পরিবহণমন্ত্রী। এবার শুরু হল সেই প্রস্তুতিই।
আরও পড়ুন : No Entry for Kalipuja: কালীপুজোয় এবার ‘নো এন্ট্রি’, নির্দেশ হাইকোর্টের, ছাড় নয় ডবল ডোজ়েও