Cyber Crime: ‘লক’ করা গাড়ি নিমেষে চুরি! হ্যাকারদের হাতে নতুন ‘অস্ত্র’
Beware of Hackers: ধরুন, শপিং মলের সামনে লক করে গাড়ি রেখে গিয়েছেন। শপিং করে এসে দেখলেন গাড়ি উধাও। এমনই অত্যাধুনিক হ্যাকিং ডিভাইস বাজারে সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। এই ডিভাইসের দাম বাজারে মাত্র ৬ হাজার টাকা।
কলকাতা : বাড়ি ফিরে গাড়ি লক (Car Lock) করে ঘরে ঢুকেছেন? নিশ্চিন্তে আছেন? ভাবছেন, গাড়ি তো লক করেই এসেছেন, তাই সুরক্ষিতই আছে! কিন্তু আপনার সেই গাড়িও চুরি যেতে পারে। কীভাবে? জানলে চক্ষু চড়কগাছ হবে আপনারও। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে হ্যাকাররা (Hackers) আপনার গাড়ি লক খুলে তা সহজেই চুরি করে নিয়ে যেতে পারে। কিংবা ধরুন, শপিং মলের সামনে গাড়ি রেখে গিয়েছেন। শপিং করে এসে দেখলেন গাড়ি উধাও। এমনই অত্যাধুনিক হ্যাকিং ডিভাইস বাজারে সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। এই ডিভাইসের দাম বাজারে মাত্র ৬ হাজার টাকা। অথচ এই কম মূল্য দিয়ে যে কোনও হ্যাকার এক কোটি টাকা দামের গাড়ি সহজে চুরি করে নিতে পারবে। যা আগামী দিন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াবে সাধারণ মানুষের জন্য।
শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে সাইবার বিশেষজ্ঞরা এ রকমই ডিভাইস দিয়ে বন্ধ গাড়ি কীভাবে হ্যাকিং এর মাধ্যমে লক খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে তা দেখিয়ে দিলেন। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত, গুলাব মণ্ডলসহ বিশিষ্টরা। সাইবার বিশেষজ্ঞরা দেখালেন, RLT-SDR রিসিভার কীভাবে গাড়ির দরজা বন্ধ করার আওয়াজ-এর ফ্রিকোয়েন্সি অত্যন্ত সুকৌশলে ১০০-১৫০ মিটার দূরে থেকেও তা হ্যাকাররা রিসিভ করবে। তারপর RASPBERRY-PI হার্ডওয়ার দিয়ে সেই দামি গাড়ির লক সহজেই দূরে বসে খুলে দিতে পারবে। স্বাভাবিকভাবেই এই চুরির প্রযুক্তির এখনও এদেশে চালু না হলেও, বিদেশে এই প্রযুক্তিতে চুরি শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই এখানেও শুরু হবে না তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই বলেই জানালেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
ইন্ডিয়ান স্কুল অফ অ্যান্টি হ্যাকিং-এর এই সাংবাদিক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট উন্নত প্রযুক্তির হ্যাকিং ডিভাইস দিয়ে বন্ধ গাড়ির লক ফ্রিকোয়েন্সি রিসিভ করে খুলে দেওয়ার বিষয়টি নজরে আনেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, এই ধরনের অত্যাধুনিক হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে গাড়ির লক খুলে চুরির বিষয়টি এখনও এদেশে হয়নি। কিন্তু এই চুরির বিষয়টি সক্রিয় ভাবে নিজেদের হাতে নিয়ে যাতে চোরেরা বা দুষ্কৃতীরা নিজেদের কার্যসিদ্ধি না করতে পারে তার জন্য সরকারকে রেগুলেশন আনতে হবে। প্রিভেন্টিভ মূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। হ্যাকিংয়ের ডিভাইস অত্যন্ত সহজলভ্য কলকাতার বাজারে। স্বল্পমূল্যে যেখানে সেখানে তা পাওয়া যায়। যে কোনও হ্যাকিং সফটওয়্যার ডাউনলোড করেই এই ধরনের স্বল্পমূল্যের হার্ডওয়ার ডিভাইস ব্যবহার করে গাড়ি চুরি করা কোন মতে অসম্ভব থাকবে না। তাই এখন থেকেই বিষয়গুলি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করতে হবে।
সন্দীপ সেনগুপ্ত আরও বলেন, “সেক্টর ফাইভের এস ডি এ ভবনে ইন্ডিয়ান স্কুল অব অ্যান্টি হ্যাকিং এর তরফে একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। মূলত ডিজিটাল প্রতারণার রুখতে এই ফরেনসিক ল্যাব অত্যন্ত কার্যকর। শুধু প্রতারণা রুখে দেওয়াই নয়, আগামী মাস থেকে শুরু হবে এই লাইভ এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাঠরত বহু পড়ুয়া ডিজিটাল প্রতারণার উক্তি কিভাবে কাজ করতে পারা যাবে তার শিক্ষা নিতে পারবেন। তবে এগুলির মধ্যে ও সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানালেন, করোনা সময়কালে মানুষ গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় ডিজিটাল লেনদেন এর উপরে বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে। যে কারণে কলকাতা পুলিশের তথ্য বলছে, আগের তুলনায় প্রায় ২২০ শতাংশ ডিজিটাল প্রতারণা বেড়ে গিয়েছে। যা রীতিমতো উদ্বেগের।”
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: শুধুই দলের প্রচার! কোনও ব্যক্তি প্রচার নয়… সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়াকড়ি মমতার