Newtown Saras Mela: ‘দু’ একটা জিনিস বিক্রির পরই বলছে দোকান তোল’, নিউটাউন সরসমেলায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন হকাররা
Saras Mela: গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে কলকাতায় নিউটাউন মেলা প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে ১৭তম কলকাতা সরস মেলা।
কলকাতা: সরস মেলা প্রাঙ্গনে অস্থায়ীভাবে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন একদল। রবিবার বিকেলে তাঁদের তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মেলাচত্বরে। অস্থায়ী হকারদের দাবি, গত দেড় দু’বছর ধরে আয়ের কোনও সংস্থান নেই। এতদিন পর মেলা হচ্ছে। তাতে যেটুকু বিক্রি হয়, সেটাই লাভ। অথচ পুলিশ তাও বসতে দিচ্ছে না। নিউটাউনে এই ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয় সরস মেলা প্রাঙ্গন।
এই মেলা প্রাঙ্গনে যেমন প্রচুর স্টল রয়েছে। তেমনই মেলার বাইরেও অস্থায়ীভাবে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বহু শিল্পী। কেউ আবার তাঁবুর মতো করে দোকান করেছেন। আবার কেউ কেউ ভ্রাম্যমাণ দোকানও করেন। প্রচুর হকার মেলার বাইরে পসরা সাজিয়ে বসেছেন কিছু রুটি রুজির আশায়।
অভিযোগ, রবিবার হঠাৎই ওই অস্থায়ী দোকানগুলি সরিয়ে নিতে বলা হয় প্রশাসনের তরফে। কিন্তু দোকানিরা তাতে রাজি হননি। এরপরই রাতে পুলিশ প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে ওই হকারদের সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। এদিকে এক প্রকার জোর করে হকারদের সরিয়ে দেওয়ার কারণে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
তাঁদের বক্তব্য, ২৩শে ডিসেম্বর থেকে সরস মেলা শুরু হয়েছে। সেদিন থেকেই বসছেন তাঁরাও। সরকারি কার্ড নেই বলে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে বাইরে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। কিন্তু প্রশাসনের এ হেন পদক্ষেপের জেরে আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁদের মাথায়। তাঁদের দাবি অবিলম্বে, এই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে প্রশাসনকে। এই ব্যবসার সঙ্গে তাঁদের রুটি রুজি জড়িয়ে।
গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে কলকাতায় নিউটাউন মেলা প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে ১৭তম কলকাতা সরস মেলা। স্বনির্ভরগোষ্ঠীর শিল্পীদের নিয়ে হস্তশিল্প মেলা এটি। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে শিল্পীরা এসেছেন তাঁদের পসরা নিয়ে। ২১ জেলার শিল্পীদের জন্য রয়েছে ২৫৬টি স্টল। এছাড়া খাবারের স্টলও প্রচুর। ভাপা পিঠে থেকে সুস্বাদু রসমালাই, ফুচকা কিংবা কাবাব, বাদ নেই কিছুই। ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলবে।
বারাসত থেকে এসেছেন ঝরনা দে। তিন মাস আগে স্বামীকে হারিয়েছেন করোনাতে। ঝরনা দে’র কথায়, “আমার ছেলেমেয়ে নেই। স্বামী চলে গেল। খুব কষ্ট করে দিন কাটছে। মেলায় এসেছি। রবিবার বলে অনেক জিনিসও তুলেছি। আমি নেটের টিভি কভার, ফ্রিজ কভার এসবই বিক্রি করি। লোকের কাছে ধার করে টাকা নিয়ে এই জিনিস কিনে এনেছি। কিন্তু বিকেল ৫টা সাড়ে ৫টা থেকে আমাদের এখানে আর বসতে দিচ্ছে না। উঠিয়ে দিচ্ছে পুলিশ, মেলা কমিটি। এখন আমরা কোথায় যাব?”
নিউটাউন জ্যোতিনগরের পল্টু ব্যাপারির কথায়, “আমাদের সরকারি কার্ড নেই বলে সরস মেলা চত্বরের বাইরে দোকান দিয়েছি। ২৩ তারিখ থেকে বসছি। না বলার হলে সেদিনই বলতে পারত। চারটে দিন হয়ে গেল, রবিবার যেদিন একটু বিক্রিবাটা হয় সেদিনই বলছে উঠে যেতে। আমরা সকলেই ধার করে জিনিস তুলেছি। এখন উঠে যেতে বললে কী করে চলে? এক দু’টো জিনিস বিক্রি করেছি, পুলিশ বলছে এখানে আর বসা যাবে না। আমরা ভিতরে মেলা অফিসে কথাও বলি। ওরা বলছে ওদের কোনও আপত্তি নেই। এটা পুলিশের ব্যাপার। পুলিশ বলছে এদিকে মেলার ভিতর থেকে অভিযোগ এসেছে।”
আরও পড়ুন: Medical College Kolkata: আচমকা অস্থায়ী কর্মীর মৃত্য়ুতে তুলকালাম কলকাতা মেডিকেলে