Biman Banerjee: ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যপালের সম্মতি না পেলে বিল সরাসরি আইন? কী বলছেন অধ্যক্ষ? কী মত রাজনীতিকদের

West Bengal Assembly: শুক্রবার ফের অধ্যক্ষকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে তিনি বলছেন, 'লোকসভায় সংবিধান সংশোধন না হলে, এটি হতে পারে না। একমাত্র সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এটি সম্ভব।'

Biman Banerjee: ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যপালের সম্মতি না পেলে বিল সরাসরি আইন? কী বলছেন অধ্যক্ষ? কী মত রাজনীতিকদের
বিধানসভায় রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস ও অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 24, 2023 | 5:44 PM

কলকাতা: জগদীপ ধনখড় যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন, তখন নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের এক চরম দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল রাজভবনে আটকে। এতদিনে ধনখড়ের পর লা গণেশন তারপর নতুন রাজ্যপাল হয়ে এসেছেন সিভি আনন্দ বোস।। এখনও পর্যন্ত সেই বিলগুলিতে অনুমোদন আসেনি। এদিকে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যপাল সম্মতি না দিলে ধরে নিতে হবে বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। এমন একটা সংশোধনী আনা উচিত।’ এমন কোনও পরিকল্পনা কি হয়েছে? শুক্রবার ফের অধ্যক্ষকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে তিনি বলছেন, ‘লোকসভায় সংবিধান সংশোধন না হলে, এটি হতে পারে না। একমাত্র সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এটি সম্ভব।’

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘অল ইন্ডিয়া স্পিকার কনফারেন্সে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানেও আমি এই প্রস্তাব করেছিলাম। আমার মনে হয়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিল ফেলে রাখা উচিত নয়। সরকার গুরুত্ব উপলব্ধি করে বিল পাশ করে। তার সময়সীমা পার হয়ে গেলে, সেটির গুরুত্বই হারিয়ে যায়।’ প্রসঙ্গত, এই একই কথা এর আগেও বলেছেন অধ্যক্ষ। ২২ তারিখ স্পিকার বলেছিলেন, ‘রাজভবনে বিল যাবে, রাজ্যপাল সম্মতি দিলে আইন হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া দরকার। ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যপালের সম্মতি না-এলে ধরে নিতে হবে বিল আইনে রূপান্তরিত হবে। এই মর্মে একটা সংশোধনী আনা দরকার। না-হলে একটা বিলের তাৎপর্য হারিয়ে যায়।’

রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ভাবনার সঙ্গে একমত শাসক দল তৃণমূলও। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, ‘অনেক বিল রাজভবনে এতদিন পরে থাকছে, যে বিষয়টি শ্লথ হয়ে যাচ্ছে। বিধানসভার অধ্যক্ষ যদি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে থাকেন, তাহলে তিনি ঠিকই বলেছেন। যাতে দ্রুত এই বিলম্বের অবসান ঘটানো যায়, সেই প্রক্রিয়াও শুরু করা উচিত।’

বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘যদি কোনও বিল ভারতীয় সংবিধানের মূল দর্শনের বিরোধী হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি তাতে সম্মতি দেবেন না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এসবের ঊর্ধ্বে। তারা কার্যত এই সংসদীয় ব্যবস্থা, সাংবিধানিক বিধিনিষেধ, সাংবিধানিক প্রধানকে গুরুত্ব দেয় না। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তো কোনও নিরপেক্ষ স্পিকার নন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন।’

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘সংসদীয় ব্যবস্থার কিছু সংবিধান সম্মত বিধি রয়েছে। রাজভবন ছয় মাসের মধ্যে বিলে অনুমোদন না দিলে, সেই পাশ হয়ে গিয়েছে বলে ধরে নিতে হবে, এমন ভাবনার সঙ্গে সাংবিধানিক বিধি ব্যবস্থার কোনও যোগ নেই। এই বিধি যদি বদল করতে হয়, তাহলে সার্বিক কারণে বদলের প্রয়োজন রয়েছে। যুক্তি-সঙ্গত তর্ক, বিতর্ক হতে হবে।’ সুজন চক্রবর্তীর কথায়, স্পিকারের যদি এই বিষয়ে আলোচনা করার থাকে, তাহলে তা অল ইন্ডিয়া স্পিকার কনফারেন্সে বলা উচিত। সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসব বলা ঠিক নয় বলেই মত তাঁর।