মমতাকে প্রণামের পরই বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক কৈলাস-মুকুলের

সুনীল সিংকে সোমবার হেস্টিংসে দেখা না গেলেও শুনিয়ে রেখেছেন "রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই।"

মমতাকে প্রণামের পরই বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক কৈলাস-মুকুলের
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Feb 09, 2021 | 9:33 AM

কলকাতা: বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণামের পরই তড়িঘড়ি বিজেপি বিধায়কের ডাক পড়ল হেস্টিংসে দলীয় কার্যালয়ে। জল মাপতে সোমবারই বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। প্রায় আধ ঘণ্টার এই বৈঠক নিয়ে একটি কথাও বলতে চাননি বিধায়ক। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তাঁরা যাতে ভোটের মুখে দলের কোনওরকম অস্বস্তির কারণ না হন সেদিকে নজর রেখেই দ্রুততার সঙ্গে এই পদক্ষেপ।

সোমবারই বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন তাঁর পুরনো সৈনিক বিশ্বজিৎ দাস। হাত জোড় করে মমতার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা সুনীল সিংও। মমতা বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যেই জিজ্ঞাসা করেন, “কী রে কিছু সিদ্ধান্ত নিলি। আর তো সময় নেই।” এরপরই তৃণমূলে জোড়া প্রত্যাবর্তনের জল্পনা তৈরি হয়। সেই জল্পনার আগুনে ঘিয়ের কাজ করে মমতার বিধানসভার ঘরে এই দুই বিধায়ক, হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের বিশেষ সাক্ষাৎ-পর্ব। যদিও সুনীল সিং দাবি করেছেন তিনি যখন মমতার সঙ্গে বিধানসভার কক্ষে সাক্ষাৎ করেন তখন সেখানে অন্য কেউ ছিল না।

আরও পড়ুন: রাজ্য কৃষক বিরোধী নয়, পরিসংখ্যান তুলে বিধানসভায় বোঝালেন মমতা

মুহূর্তে এই বৈঠক ঘিরে বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন করে তৈরি হয় ঢাক ঢাক গুড় গুড়। প্রশ্ন ওঠে, তবে কি পুরনো দলে ফেরার চেষ্টা করছেন বিশ্বজিৎ, সুনীলরা। এরপরই বিকেলে হেস্টিংসে বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে দেখা যায় বিশ্বজিৎ দাসকে। তাঁকে নিয়ে একটি ঘরে ঢুকে যান কৈলাস, মুকুল। বন্ধ হয়ে যায় সে ঘরের দরজা। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। তবে কী আলোচনা হল, তা নিয়ে মুখ খোলেননি কোনওপক্ষই। এই বৈঠকের পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হেসে কথা বলতে দেখা যায় বিশ্বজিৎকে।

অন্যদিকে হেস্টিংসে সুনীল সিংকে দেখা না গেলেও এক সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, সুনীলের আত্মীয় তথা বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। যদিও এ নিয়ে অর্জুন বা সুনীলের তরফে কোনও সমর্থন মেলেনি। তবে সুনীল শুনিয়ে রেখেছেন “রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই।”

আরও পড়ুন: এমন ভাবে ফিরে আসব, ভাবতে পারবেন না, সব জবাব পেয়ে যাবেন: ‘আত্মপ্রত্যয়ী’ মমতা

ফলে জল্পনা জিইয়েই রইল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, এতদিন বিশ্বজিৎকে বিজেপি কার্যালয়ে যেতে না দেখা গেলেও এদিন মমতাকে প্রণামের কিছুক্ষণের মধ্যেই হেস্টিংসে তাঁর হাজিরা, দলের দুই শীর্ষনেতার সঙ্গে বিশেষ বৈঠক আলাদা গুরুত্বের দাবি রাখে। ফলে এসবের মধ্যেই সোমবারের ঘটনাক্রমে নির্বাচনমুখী বঙ্গ রাজনীতিতে ফের নয়া সমীকরণের জল্পনা তৈরি হচ্ছে।