Calcutta High Court: গর্ভে ২৮ সপ্তাহের যমজ ভ্রূণ, ১২ বছরের নির্যাতিতার গর্ভপাতে ‘না’ হাইকোর্টের

Calcutta High Court: ১২ বছরের এক নাবালিকার মা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মেয়ের গর্ভপাতের আবেদন জানিয়ে। মায়ের অভিযোগ ছিল, তাঁর নাবালিকা মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং সেই কারণেই ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল।

Calcutta High Court: গর্ভে ২৮ সপ্তাহের যমজ ভ্রূণ, ১২ বছরের নির্যাতিতার গর্ভপাতে 'না' হাইকোর্টের
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 07, 2023 | 7:48 PM

কলকাতা: নাবালিকার গর্ভপাতের আবেদনে ‘না’ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court Circuit Bench)। ২৮ সপ্তাহের এক অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার গর্ভপাতের আবেদনে সাড়া দিল না আদালত। বুধবার  এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়। ১২ বছরের এক নাবালিকার মা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মেয়ের গর্ভপাতের আবেদন জানিয়ে। মায়ের অভিযোগ ছিল, তাঁর নাবালিকা মেয়ের উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং সেই কারণেই ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। চলতি বছরের মার্চে উত্তরবঙ্গের এক থানায় এই নিয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করেছিলেন নাবালিকার মা।

বর্তমানে ওই নাবালিকা রাজ্যের এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছিল। সেই মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে নাবালিকার গর্ভে দুটি ভ্রূণ রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের থেকে জানানো হয়েছিল, যেহেতু গর্ভপাতের বিষয়ে আদালতের থেকে কোনও নির্দেশ নেই, তাই ওই নাবালিকাকে প্রসব-পূর্বের যত্ন নিতে হবে। এমন অবস্থায় মেয়ের গর্ভপাতের আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতা নাবালিকার মা।

সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ৪ এপ্রিল আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, ওই দিনের মধ্যেই হাসপাতালের জোনাল মেডিক্যাল বোর্ডের চেয়ারম্যান নাবালিকার শারীরিক অবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করবে এবং একদিনের মধ্যে আদালতে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দেবে। ওই নাবালিকার গর্ভপাত করানো সম্ভব কি না, তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল মেডিক্য়াল বোর্ডকে। এক্ষেত্রে গর্ভে যজম ভ্রূণ নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা ওই নাবালিকার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর কোনও বিরূপ প্রভাব পড়বে কি না, তাও জানাতে বলা হয়েছিল জোনাল মেডিক্যাল বোর্ডকে।

আদালতের নির্দেশ মতো ৫ এপ্রিল নাবালিকার বিষয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিয়েছিল জোনাল মেডিক্যাল বোর্ড। সেখানে বলা হয়েছিল, নাবালিকা ২৮ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। যজম ভ্রুণ দুটিও ঠিকঠাক রয়েছে এবং কোনও জন্মগত বিকৃতি নেই। ১২ বছর বয়সেই গর্ভবতী হয়ে পড়া ছাড়া আর কোনও গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত জটিলতাও নেই। তাই গর্ভপাত আইন, ২০২১ অনুযায়ী নাবালিকার গর্ভপাত করানো যাবে না। এক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে গর্ভপাত করানো যেতে পারে। তবে মেডিক্যাল বোর্ড বলেছে, এই বয়সে গর্ভবতী ওই নাবালিকার গর্ভপাত করাতে গেলে ব্যাপক রক্তক্ষরণ, সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে। এমনকী গর্ভবতী মায়ের মৃত্যুর ঝুঁকিও থেকে যায়। সেক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম বলে মত দিয়েছিল মেডিক্যাল বোর্ড।

উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা হাইকোর্টেরই অন্য মামলায় ৩৫ সপ্তাহের পরেও গর্ভপাতের অনুমোদন দেওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের এই মামলায় মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই মুহূর্তে গর্ভপাতের অনুমতি দিলে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়।