Primary Recruitment: বিএড থাকলেই কি বসা যাবে টেটে? হাইকোর্টের দীর্ঘ শুনানিতেও ভাগ্য ঝুলে ১৫ লক্ষ চাকরি প্রার্থীর
TET: শনিবার ডিএলএড ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা আদালতে আবেদন জানান, ২০১৮ সালের এনসিটি বিজ্ঞপ্তি খারিজ করা হোক।
কলকাতা: স্নাতকে ৫০ শতাংশের কম নম্বর পাওয়া চাকরি প্রার্থীদের প্রাথমিকে সুযোগ (Primary Recruitment) না দেওয়ার পক্ষেই জোরাল সওয়াল প্রাইমারি বোর্ডের। অন্যদিকে স্নাতকে ৫০ শতাংশ প্রাপ্ত প্রার্থীরাও প্রাইমারিতে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য বলেই দাবি বিএড (B.Ed) প্রার্থীদের। শনিবার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলার শুনানিতে মূলত এই মাপকাঠি নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে এজলাস। অন্যদিকে এদিনের শুনানিতে আরও একটি বিষয় উঠে আসে ডিএলএড করা প্রার্থীদের তরফে। তাঁদের দাবি, বিএড উত্তীর্ণরা কোনও ভাবে প্রাথমিকে সুযোগ পেতে পারেন না।
প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয়কে নিয়ে শনিবার মামলার শুনানি চলে কলকাতা হাইকোর্টে। এই নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিষয়কে নজরে রেখে এদিনের শুনানি-পর্ব চলে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল, স্নাতকে ৫০ শতাংশের কম নম্বরপ্রাপ্তরা কি আদৌ প্রাথমিকের প্রার্থী হিসাবে আবেদন জমা দেওয়ার যোগ্য? এ প্রসঙ্গে উঠে আসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, স্নাতকে ৫০ শতাংশ না পেলেও কেউ যদি স্নাতকোত্তরে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি পান, তা হলে তাঁদের ক্ষেত্রে কী নিয়ম হবে। শনিবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে এই মামলার শুনানি চলে। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ৫ অক্টোবর ফের এই মামলার শুনানি হবে। এই মামলার রায়ের উপর নির্ভর করবে প্রায় ১৫ লক্ষ বিএড ও ডিএলএড পাশ করা চাকরি প্রার্থীর ভবিষ্যৎ।
২০১৮ সালে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা এনসিটিই (NCTE) একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে বলা হয়, বেশি সংখ্যক নিয়োগের লক্ষ্যে ব্যাচেলার অব এডুকেশন বা বিএড (BEd) ডিগ্রিধারীদেরও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসার সুযোগ মিলবে। কোনও প্রার্থীর যদি বিএড এবং স্নাতকে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকে তা হলেই তাঁকে টেটে বসার সুযোগ দেওয়া যাবে। পাশাপাশি ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশ বা ডিএলএড (DLEd) ডিগ্রি যাঁদের রয়েছে, তাঁরা স্নাতক ও দু’ বছরের ডিএলএড থাকলেই এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন।
এছাড়াও সেই বিজ্ঞপ্তিতে এনসিটিই বলেছিল, উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর, চার বছরের বিএলএড, উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর ও চার বছরের ডিএড (স্পেশাল) থাকলেও পরীক্ষায় বসা যাবে। তবে বিএড-এর ক্ষেত্রে দু’ বছরের কোনও উল্লেখ ছিল না। তাই ধরে নেওয়া হয়, বিএড যে সময় এক বছরের কোর্স ছিল, তখনও যাঁরা পাশ করেছেন তাঁরাও এই পরীক্ষায় বসার যোগ্য।
শনিবার ডিএলএড ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা আদালতে আবেদন জানান, ২০১৮ সালের এনসিটি বিজ্ঞপ্তি খারিজ করা হোক। তাঁদের যুক্তি, বিএড নিয়ে প্রার্থীরা মাধ্য়মিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগের জন্য বসতে পারেন। এখন এই ডিগ্রি নিয়ে যদি প্রাথমিকেও বসা যায়, তা হলে ডিএলএডদের অধিকারে তা হস্তক্ষেপের সমান। এই সমস্ত বিষয়গুলিকে সামনে রেখেই এদিনের শুনানি পর্ব চলে। রাজ্য, বিএড ও ডিএলএড—সকল পক্ষেরই বক্তব্য শোনেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী মাসে ফের এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।