আমফানের ‘ভুল’ শোধরাতে মরিয়া সিইএসসি, ইয়াসের মোকাবিলায় কোমর বেঁধে প্রস্তুতি
এক বছর আগের তিক্ত অভিজ্ঞতার পুরনাবৃত্তি এ বারও হোক তা কোনও ভাবে চাইছে না সিইএসসিও। সোমবারের মধ্যেই সব রকমের প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে বলে এ দিন জানানো হয়েছে সিইএসসি-র পক্ষ থেকে।
কলকাতা: আর ৪৮ ঘণ্টাও বাকি নেই। রাজ্যের উপকূল ঘেঁষে ওড়িশার বালাসোরে আছড়ে পড়তে চলেছে ইয়াস। অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে চলেছে রাজ্যের প্রায় ২০ টি জেলায়। আমফানের তাণ্ডব থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার প্রস্তুতির আর কোনও খামতি রাখতে চাইছে কোনও পক্ষ। যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ সেরে রাখা হয়েছে। এক বছর আগের তিক্ত অভিজ্ঞতার পুরনাবৃত্তি এ বারও হোক তা কোনও ভাবে চাইছে না সিইএসসিও। সোমবারের মধ্যেই সব রকমের প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে বলে এ দিন জানানো হয়েছে সিইএসসি-র পক্ষ থেকে।
সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠক করে সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট অভিজিৎ ঘোষ জানান, এই সাইক্লোনের জন্য আমরা সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছি। পর্যাপ্ত কর্মীদের তৈরি করে রাখা হয়েছে যাতে সবরকম অবস্থার সমাধান করা যায়। যেখানে যেখানে বিদ্যুতের তার মাটির উপর রয়েছে, সেই জায়গাগুলি যাতে সুরক্ষিত রাখা যায় তার জন্য পুরসভার সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। কোভিডের মাঝে যাতে করোনা চিকিৎসায় সমস্যা না হয় তার জন্য হাসপাতালে, ভ্যাকসিন সেন্টারে যাতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন না হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, ইয়াসের প্রভাবে কলকাতায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে চলেছে। তাই জমা জলে যাতে কাজ করতে অসুবিধা না হয় অতিরিক্ত ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এবং অতিরিক্ত জেনারেটারের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। ব্যাকআপের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সিইএসসি-র পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করে হেল্পলাইনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। একটি সাধারণ হেল্পলাইন নম্বর সকলের জন্য রয়েছে। তা হল, ১৯১২। এ ছাড়াও একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও দিয়ে রাখা হয়েছে, ৭৪৩৯০০১৯১২।
আরও পড়ুন: এগিয়ে এল ইয়াসের আছড়ে পড়ার সময়, সন্ধ্যা নয় বুধবার দুপুরেই চালাতে পারে তাণ্ডবলীলা
প্রসঙ্গত, আমফানের পর পর্যাপ্ত আগাম প্রস্তুতির অভাবে কার্যত বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছিল শহর কলকাতায়। শহরের বেশিরভাগ এলাকা ২-৩ দিন, এমনকি অনেক এলাকা আবার ১ সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল। করোনার জেরে প্রথম লকডাউনের জারি থাকায় সেই সময় পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে এই ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল শহরবাসীকে। তবে এ বার প্রস্তুতির কোনও খামতি রাখছে না সিইএসসি। গতবারের ‘ভুল’ শোধরাতে মরিয়া এই সংস্থা।
আরও পড়ুন: ইয়াসের গতিপথ রাখুন নখদর্পণে, কখন কোথায় থাকবে ঘূর্ণিঝড়? জানুন এক ক্লিকে
ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলয়া দু’টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর, ৮৯০০৭৯৩৫০৩ এবং ৮৯০০৭৯৩৫০৪। নবান্নের তরফেও প্রকাশ করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে যে কোনও বিপদে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬।