মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালীন বিধানসভায় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি
বিজেপির সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বাম-কংগ্রেস বিধায়কদেরও।
কলকাতা: তুমুল হইচই বিধানসভায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখার সময় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ওঠে কক্ষে। এই নিয়ে রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে ওঠেন তৃণমূল বিধায়করা। এরইমধ্যে আবার সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপির দুলাল বর। বাম-বিজেপি বিধায়কের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। নজিরবিহীন গোলমাল বাধে অধিবেশন চলাকালীন। এর আগে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের মন্তব্য ঘিরেও সরগরম হয় বিধানসভা।
ভিক্টোরিয়াকাণ্ড নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায়। বৃহস্পতিবার সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর শব্দ’ ব্যবহার করেছেন। এই অভিযোগ তুলে, ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখায় বাম, কংগ্রেস। বিধায়কদের শান্ত হতে অনুরোধ করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরই মধ্যে আবার বিধানসভার ভিতরে ভিডিয়ো করার অভিযোগে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয় দুলাল বরের। মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন অধ্যক্ষ।
বুধবার থেকে বিধানসভায় শুরু হয়েছে দু’দিনের শীতকালীন অধিবেশন। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে মূলত কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাব ও ভিক্টোরিয়াকাণ্ডের নিন্দা প্রস্তাব আনার কথা ছিল। সেইমতো প্রথমার্ধে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলতে ওঠেন। গত ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী পালন করা হয় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে। সাংস্কৃতিকমন্ত্রক আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমন্ত্রণ করে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয় বলে দাবি করেন বর্ষীয়ান এই তৃণমূল বিধায়ক।
আরও পড়ুন: ‘এতদিন তো আমাদের বাড়িতে পড়ত’, বাড়ির সামনে বোমাবাজি নিয়ে ইন্দ্রনীলকে খোঁচা দিলীপের
বিধানসভা সূত্রে খবর, এই বক্তব্য রাখার সময় তাপস রায় বাম-কংগ্রেস বিধায়কদের উদ্দেশে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করেন। তা নিয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয় বিধানসভায়। ওয়েলে নেমে হইহট্টগোল শুরু করেন বাম-কংগ্রেস বিধায়করা। সে সময় অধ্যক্ষের দিকে এগিয়ে যান সুজন চক্রবর্তী। নিরাপত্তারক্ষীরা সুজনকে আটকান। ততক্ষণে হইচই চরমে ওঠে। বিধায়কদের শান্ত হওয়ার বার্তা দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরইমধ্যে আবার বিধানসভা কক্ষের ভিতর দুলাল বরের মোবাইল ফোন বের করা ঘিরে নতুন করে গোলমাল শুরু হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ তোলেন বাগদার বিধায়ক গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করার জন্যই ফোনটি বের করেছেন। এরপরই দুলালের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়।
পার্থ-সুজন তরজা
পার্থ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, নেতাজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নেতাজিকে স্মরণ না করে নিন্দনীয়ভাবে এক শ্রেণির আমন্ত্রণকারী সেটাকে রাজনৈতিক মঞ্চ বানিয়েছেন। এতে নেতাজিকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে। এটা বাংলার সংস্কৃতিকে কালিমালিপ্ত করা। সেখানে ডেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অপমান করা হয়েছে। যারা এই কাজ করেছে তাদের নিন্দা করা হোক। এরই পাল্টা সুজন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী এই বিষয়টিকে ‘পয়েন্ট অব ইনফরমেশন’ ধরা যায় না। কারণ, ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ তারিখ। এরপর ছ’দিন কেটে গিয়েছে। সুজন বিষয়টিকে ‘রেজলিউশন’ হিসাবে ধরার কথা বলেন। যদিও অধ্যক্ষ এটিকে ‘পয়েন্ট অব ইনফরমেশন’ হিসাবেই ধরার কথা বলেন।
ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ বিজেপির
কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাব বিধানসভায় তোলা হয়। সেই সময় ওয়েলে নেমে তার বিরোধিতা করেন বিজেপি বিধায়করা। ছিলেন মনোজ টিজ্ঞা, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, দুলাল বর। যদিও বিধানসভায় হাজির থাকলেও এদিন বিক্ষোভে যোগ দেননি বনগাঁর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং।