Mamata Banerjee: বাংলার ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে, সংখ্যা আরও বাড়তে পারে: মমতা

Coromandel Express Derailed: ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল চলছে। হাওড়া, খড়্গপুর, সাঁতরাগাছিতে আছে। কয়েকজন আইএএস অফিসার বর্ডারে কাজ করছেন। আমাদের এখানকার লোক দেখলেই বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে।

Mamata Banerjee: বাংলার ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে, সংখ্যা আরও বাড়তে পারে: মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 04, 2023 | 6:36 PM

কলকাতা: করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express) দুর্ঘটনায় বাংলার ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে আরও অনেক আছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। হতাহতের পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁদের শনাক্ত করা হয়েছে। তবে আরও অনেক আছে। আহত ২০৬ জনকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে এনে কলকাতায় হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এছাড়া ওড়িশায় হাসপাতালে ৭৩ জন ভর্তি রয়েছেন। ৫৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া হয়েছে। আর পরিচয় মেলেনি এরকম ১৮২ জন রয়েছেন।” তাঁদের ছবি প্রতিটি জেলায় শেয়ার করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ও তাঁদের পরিবারদের সাহায্য করতে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল চলছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, “হাওড়া, খড়্গপুর, সাঁতরাগাছিতে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল আছে। কয়েকজন আইএএস অফিসার বর্ডারে কাজ করছেন। আমাদের এখানকার লোক দেখলেই বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। কাল ৭০০ জন এনে দিয়েছে।”

করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর রাত থেকে রাজ্য সরকার কাজ শুরু করেছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর কথায়,, “আমরা ওড়িশা সরকারের সঙ্গে কথা বলে কাজটা করেছি। দুর্ঘটনা ঘটার পর থেকেই মনিটরিং করছি। মেদিনীপুর থেকে মেডিক্যাল টিম, অন্যান্য আধিকারিক, ১৫০টি অ্যাম্বুলেন্স, ৫০ জন চিকিৎসক পাঠিয়ে রাত থেকেই উদ্ধারকাজ শুরু করেছি।” এখনও পর্যন্ত বাংলার ৬২ জনের মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, “আরও অনেক আছে।” এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার, গুরুতর আহত ও স্বল্প আহতদের রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। আর যাঁরা ট্রমায় রয়েছেন তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে জেলাশাসক ১০ হাজার টাকা করে দেবেন বলে এদিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া আগামী ৩ মাস তাঁদের প্রত্যেককে নগদ ২ হাজার টাকা এবং চাল, ডাল সহ ত্রাণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে, যাঁদের দেহ এখনও মেলেনি তাঁদের স্বজনদের দুর্ঘটনাস্থলে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তিনিই দুর্ঘটনা ঠেকাতে ট্রেনে অ্যান্টি কলিউশন সিস্টেম চালু করেছিলেন বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে মৃতের প্রত্যেক পরিবারের সদস্যদের ১ জনকে চাকরি দিতাম। আমিই নতুন সিগন্যালিং ব্যবস্থা করি। প্রায় ৪০০ আনম্যানড লেবেল ক্রসিং ছিল, সেগুলি ম্যানড করি। অ্যান্টি কলিউশন সিস্টেম ছিল না। সেটা চালু করি। আমি দুরন্ত এক্সপ্রেস করেছিলাম।” সেই দুরন্ত এক্সপ্রেসের আজ বেহাল দশা বলেও আক্ষেপ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বন্দে ভারত নামটা ভাল। কিন্তু, সেদিন একটা গাছ পড়েই ট্রেন আটকে গেল। সেই ঘটনার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, বন্দে ভারতের ইঞ্জিন কোথা থেকে করেছে? এই ইঞ্জিন কি বন্দে ভারতের জন্য ফিট?”

রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিউশন সিস্টেম, সিগন্যালিং সিস্টেম সহ আধুনিক বিভিন্ন প্রযুক্তি চালু করার জন্যই রেল দুর্ঘটনা কমেছে বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতার। তাঁর কথায়, “আমি ৩ বছর রেলমন্ত্রক চালিয়েছিলাম। রেল আমার হাতের তালুতে ছিল।আমি রেলটা যতটা আধুনিক করে দিয়ে এসেছিলাম, তার জন্যই দুর্ঘটনা কমেছে।” করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কোনও যোগাযোগ ছিল না। থাকলে দুটো ট্রেন একসঙ্গে আসত না। এই দুর্ঘটনার তদন্ত দ্রুত সামনে আসা জরুরি বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে নাশকতার তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।