সিবিআই অফিসারদের হুমকি! নারদ মামলায় যুক্ত হল খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নাম
অভিযোগ, অতিমারী আইনে মামলা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে সিবিআই আধিকারিকদের।
কলকাতা: এ রাজ্যে নারদ মামলা প্রভাবিত হতে পারে। এমন আশঙ্কায় প্রথম থেকেই মামলা রাজ্যের বাইরে সরানোর তোড়জোড় করছে সিবিআই। আর এবার সেই মামলায় যুক্ত হল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। শুধু মমতাই নয়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও যুক্ত করা হয়েছে এই মামলায়। প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ এনেই সিবিআই তাঁদের নাম যুক্ত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই অভিযোগেই সম্ভবত মামলা রাজ্যের বাইরে সরানোর তোড়জোড় শুরু করেছে সিবিআই।
গত সোমবার নাটকীয়ভাবে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের দুই মন্ত্রী-সহ চার নেতাকে। নারদ মামলায় গ্রেফতার হন পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর তার ঠিক পরই নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে তড়িঘড়ি পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে বিচার ভবনে মমতা ছাড়াও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। আর তাতেই এই প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ উঠছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। শুধু উপস্থিতিই নয়, সিবিআই দফতরে ঢুকে রীতিমতো আধিকারিকদের ওপর মমতা চীৎকার করেছেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অতিমারী আইনে সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এরকমই বিস্ফোরক বয়ান সাজিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মনে করছে পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই সিবিআই অফিস ঘেরাও করেন তৃণমূলকর্মীরা। সে ক্ষেত্রে রাজ্যে মামলা চললে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এই সব অভিযোগ অন্য রাজ্যে মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সিবিআই-এর হাতিয়ার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই, হাইকোর্টে মামলা স্থানান্তরের আর্জি
বুধবার দুপুর ১২ টায় এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ২টোয় শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে। এই মামলায় ৫৩ পাতার চার্জশিট তৈরি করেছে সিবিআই। আর তাতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশের সেই ভিডিয়োর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। একটি বহুজাতিক ব্যবসায়ীর সংস্থার আধিকারিক সেজে ম্যাথু স্যামুয়েল যে স্টিং অপারেশন করেছিলেন, তাতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের একাধিক নেতা মন্ত্রী বেআইনিভাবে টাকা নিয়েছেন। শুনানি শুরুর আগেই হাইকোর্ট ঘিরে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। গত সোমবার শহরে যে ছবি দেখা গিয়েছে, তাতে আজ ফের অশান্তির আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে।