মমতার কোভিড মোকাবিলা: দ্বিতীয় ডোজে অগ্রাধিকার, যুবভারতীতেও শুরু চিকিৎসা

কোভিড মোকাবিলায় চিকিৎসার ক্ষেত্রে এবং মৃতদের অন্ত্যেষ্টি নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা তিনি ঘোষণা করেন নবান্ন থেকে।

মমতার কোভিড মোকাবিলা: দ্বিতীয় ডোজে অগ্রাধিকার, যুবভারতীতেও শুরু চিকিৎসা
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Updated on: May 05, 2021 | 5:18 PM

কলকাতা: তৃতীয়বার ক্ষমতার আসনে আসিন হওয়ার পরই রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন মমতা। নবান্নে পৌঁছনর পর এ দিন সবার প্রথম রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের সঙ্গে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকের পর রাজ্য সরকারের একাধিক পদক্ষেপের কথা জানান মমতা। কোভিড মোকাবিলায় চিকিৎসার ক্ষেত্রে এবং মৃতদের অন্ত্যেষ্টি নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা তিনি ঘোষণা করেন নবান্ন থেকে।

বাড়ছে বেডের সংখ্যা

কোভিড চিকিৎসার জন্য বেড বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে বর্তমানে কোভিড চিকিৎসার জন্য ২৭ হাজার বেড রয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও ৩০০০ বেড বাড়ানো হবে রাজ্যে। এর মধ্যে ৩,৫০০ বেড শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য আইসিসিইউ হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

অগ্রাধিকার দ্বিতীয় ডোজ

টিকার অভাব রয়েছেই। কেন্দ্রের কাছে তিন কোটি ডোজ চাওয়া হলেও দেড় লক্ষ মিলেছে। যা ‘নগণ্য’ বলে দাবি করেন মমতা। সেই কারণে যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া বাকি, আপাতত টিকাকরণের ক্ষেত্রে তাঁদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকাকরণ হয়ে গেলে তবেই ১৮ উর্ধ্বদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হবে।

গুরুত্ব হকার এবং পরিবহন কর্মীদের

রাজ্যের হকার এবং পরিবহন কর্মীদের চটজলদি টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কাজ শেষ হলে সবার আগে পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত কর্মী এবং হকারদের টিকা দেবে রাজ্য সরকার। কেননা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষ সর্বদা বাকিদের তুলনায় বেশি মানুষের সংস্পর্শে আসেন। তাই তাঁদের আগেভাগে টিকা দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার।

মৃতদেহ ফেলে রাখা যাবে না

কোভিডে অগণিত মৃত্যুর মাঝে শহর হোক বা রাজ্যে, দেখা যাচ্ছে একটাই দৃশ্য। মৃত্যুর পর দুদিন বা তিনদিন করে পড়ে থাকছে মৃতদেহ। সৎকার হচ্ছে না দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও। এই পরিস্থিতির জন্য আরটিপিসিআর টেস্টের দেরীতে রিপোর্ট আসাকেই দায়ী করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সমাধান সূত্রে খুঁজতে এ বার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই মৃতদেহের অ্যান্টিজেন টেস্ট করে নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এতে তিন ঘণ্টার মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া যাবে। সঙ্গে হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ। মৃতদেহ ফেলে রাখা যাবে না। রাজ্য সরকারের ‘এগিয়ে বাংলা’ পোর্টালে পুরো তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুন: ‘বেসরকারি সেক্টরেও ৫০ শতাংশের ওয়ার্ক ফ্রম হোম’, কোভিড মোকাবিলায় কোন কোন নির্দেশিকা মমতার

দায়িত্ব কোয়াক চিকিৎসকদের

মমতা জানান, রাজ্যে এই মুহূর্তে প্রায় ২.৭৫ লক্ষ কোয়াক চিকিৎসক রয়েছে। তাঁদেরও যাতে কাজে লাগানো যায় সেটা নিশ্চিত করতে এ দিন পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ গাইডলাইন দেওয়া হবে কোয়াক চিকিৎসকদের। গ্রামের মানুষেরা অসুস্থ হলে যাতে সেই গাইডলাইন অনুসরণ করে চিকিৎসা করা হয় সেই নির্দেশ দেন তিনি।

যুবভারতীতে কোভিড হাসপাতাল

বিশেষ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এ বার সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামকেও কোভিড হাসপাতালের রূপ দেওয়া হয়েছে। সল্টলেকের আমরি হাসপাতাল ও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তৈরি হয়েছে ২২৩ বেডের কোভিড হাসপাতাল। এর মধ্যে ২১০ টি জেনারেল বেড।

আরও পড়ুন: ‘ভ্যাকসিন নিয়ে চিঠির জবাব পাইনি’, শপথ নিয়েই মোদীকে লিখলেন মমতা